Dhaka ০২:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রমিক দিবসেও নেই বিশ্রাম, আয়ের তাড়ায় ঘাম ঝরানো কর্মযজ্ঞে তারা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • ১৭ Time View

আজ ১ মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। এই দিনটি বিশ্বের কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আর সংগ্রামের প্রতীক। তবে রাজধানী ঢাকার চিত্র ছিল খানিকটা ভিন্ন। যেখানে অনেকেই ছুটির আমেজে দিন কাটাচ্ছেন, সেখানে অসংখ্য শ্রমিককে দেখা গেল ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে যেতে। তাদের কাছে পহেলা মে অন্য দিনের মতোই—পেটের দায়ে, জীবন বাঁচানোর তাগিদে কর্মমুখর।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর খিলক্ষেত ও মাটিকাটা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দৈনন্দিন শ্রমে নিয়োজিত শ্রমিকরা অবিরাম কাজ করে চলেছেন। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই যে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছিল, তা দিনের শেষ আলো পর্যন্ত বিদ্যমান। নারী, পুরুষ, এমনকি অল্পবয়সী জীবিকার কঠিন বাস্তবতায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন শ্রমে।

খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে ইট টানার কাজে ব্যস্ত শ্রমিক সোলেমান জানান, অন্যান্য শ্রমিক দিবসের মতো আজকের দিনটিও তার কাছে তেমন কোনো ভিন্নতা নিয়ে আসেনি। সকাল থেকেই তিনি কাজে লেগেছেন। সামান্য রুটি আর দুপুরে আলুভর্তা দিয়ে কোনোমতে ক্ষুধা নিবারণ করে, এখনও তিনি ইট টেনে চলেছেন। তার ক্লান্ত মুখ আর পরিশ্রান্ত শরীর যেন জানান দিচ্ছে জীবন কত কঠিন।

একটু দূরে, মুখে গভীর ক্লান্তির ছাপ নিয়েও ইট ভাঙার কাজ করছিলেন রহমান নামের আরেক শ্রমিক। তিনি বলেন, আমাদের তো দৈনিক খরচ দৈনিক জোগাড় করতে হয়। টাকা ইনকাম হলেই তো খাব। দিবস আমাদের জন্য না। আমাদের সবদিনই সমান। একদিন কাজ না করলে পরের দিন আর খাবার জুটবে না।

আছিয়া বেগমও পাশেই ইট ভাঙার কাজ করছিলেন। তার হাতে কোনো সুরক্ষা নেই, নেই পায়ে কোনো কাজের উপযোগী জুতো। তবুও সন্ধ্যার আগে তার কাজ শেষ করার তাড়া।

শুধু নির্মাণ শ্রমিকরাই নন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়, রিকশা ও ভ্যান চালকদের মধ্যে। যাত্রী বা মালামাল পরিবহনে তারা ছুটে চলেছেন শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

শ্রমিক দিবসেও নেই বিশ্রাম, আয়ের তাড়ায় ঘাম ঝরানো কর্মযজ্ঞে তারা

Update Time : ১১:০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

আজ ১ মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। এই দিনটি বিশ্বের কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আর সংগ্রামের প্রতীক। তবে রাজধানী ঢাকার চিত্র ছিল খানিকটা ভিন্ন। যেখানে অনেকেই ছুটির আমেজে দিন কাটাচ্ছেন, সেখানে অসংখ্য শ্রমিককে দেখা গেল ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে যেতে। তাদের কাছে পহেলা মে অন্য দিনের মতোই—পেটের দায়ে, জীবন বাঁচানোর তাগিদে কর্মমুখর।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর খিলক্ষেত ও মাটিকাটা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দৈনন্দিন শ্রমে নিয়োজিত শ্রমিকরা অবিরাম কাজ করে চলেছেন। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই যে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছিল, তা দিনের শেষ আলো পর্যন্ত বিদ্যমান। নারী, পুরুষ, এমনকি অল্পবয়সী জীবিকার কঠিন বাস্তবতায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন শ্রমে।

খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে ইট টানার কাজে ব্যস্ত শ্রমিক সোলেমান জানান, অন্যান্য শ্রমিক দিবসের মতো আজকের দিনটিও তার কাছে তেমন কোনো ভিন্নতা নিয়ে আসেনি। সকাল থেকেই তিনি কাজে লেগেছেন। সামান্য রুটি আর দুপুরে আলুভর্তা দিয়ে কোনোমতে ক্ষুধা নিবারণ করে, এখনও তিনি ইট টেনে চলেছেন। তার ক্লান্ত মুখ আর পরিশ্রান্ত শরীর যেন জানান দিচ্ছে জীবন কত কঠিন।

একটু দূরে, মুখে গভীর ক্লান্তির ছাপ নিয়েও ইট ভাঙার কাজ করছিলেন রহমান নামের আরেক শ্রমিক। তিনি বলেন, আমাদের তো দৈনিক খরচ দৈনিক জোগাড় করতে হয়। টাকা ইনকাম হলেই তো খাব। দিবস আমাদের জন্য না। আমাদের সবদিনই সমান। একদিন কাজ না করলে পরের দিন আর খাবার জুটবে না।

আছিয়া বেগমও পাশেই ইট ভাঙার কাজ করছিলেন। তার হাতে কোনো সুরক্ষা নেই, নেই পায়ে কোনো কাজের উপযোগী জুতো। তবুও সন্ধ্যার আগে তার কাজ শেষ করার তাড়া।

শুধু নির্মাণ শ্রমিকরাই নন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়, রিকশা ও ভ্যান চালকদের মধ্যে। যাত্রী বা মালামাল পরিবহনে তারা ছুটে চলেছেন শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।