Dhaka ০৭:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও হার মানিয়েছে সিংড়ার ফরিদ বাহিনী

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৩২:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১
  • ৫০৫ Time View

আশরাফুল ইসলাম সুমন:

সিংড়ার ত্রাস দুই ভাই ফরিদ ও কুদ্দুস। নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের বামিহাল গ্রামের বাসিন্দা ফরিদ ও কুদ্দুসকে সবাই চেনেন এবং জানেন।

তাকে ধরতে পুলিশ, র‍্যাব একাধীকবার অভিযান চালিয়েছিল। বিদেশী পিস্তল ও ফেন্সিডিলের চালানসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল অনেকবার। সিংড়া উপজেলায় কুদ্দুস তেমন পরিচিত নন। তবে তার ভাই ফরিদের নাম নিতেই বামিহাল সহ আশপাশের এলাকার সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিরাও আতকে উঠেন। পুলিশের খাতায় তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সর্বহারা দলের নেতা। এলাকায় সে ফরিদ বাহিনীর প্রধান। আছে নিজস্ব অস্ত্রভাণ্ডার। ডাকাতি জমি দখল আর চাঁদাবাজির টাকায় বিত্তশালী। অথচ অধ্যবধি দুর্ধর্ষ এ কিলার পুলিশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন। জানা গেছে, হত্যাসহ অন্তত ১৭টি মামলার আসামি ফরিদুল ইসলাম ফরিদ। তার নিয়ন্ত্রণাধীন সুসংগঠিত বিশাল বাহিনী আছে। এদের নেতৃত্বেই বামিহাল বাজারসহ ওই এলাকায় চাঁদাবাজি চলে প্রকাশ্যে। চলে তাণ্ডব। তাতে মানুষের ঘুম হারাম। ভয়ে এ অঞ্চলের কেউ মুখ খুলতে সাহস করেন না। অভিযোগ রয়েছে, নাটোর জেলা ও উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন আ’লীগ দলীয় একাধিক নেতার ছত্রছায়ায় ফরিদ দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এ সিরিয়াল কিলারের লোমহর্ষক কাহিনী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, ফরিদকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযানও চালিয়েছি। সিংড়া থানায় বেশকিছু মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে সবকয়টি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, ফরিদের বিশাল বাহিনীর বিষয়ে আমি ওয়াকিবহাল নই।

তথ্যানুসন্ধানে ফরিদ বাহিনীর প্রধান ফরিদের বিরুদ্ধে হত্যা, জখম, অপহরন, ডাকাতি, জমিদখল, অস্ত্র মাদকসহ ১৭টি মামলা রয়েছে।   অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৯৯৮ সাল থেকে ফরিদ ও কুদ্দুস বাহিনীর কিলিং মিশন শুরু হয়। তিনি মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও ক্ষমতার প্রভাব, ব্যক্তি দ্বন্দ্বের জেরে ফরিদ তার বাহিনীকে ব্যবহার করে থাকে।

এক সময় উপজেলার শীর্ষ এক আ’লীগ নেতা তাকে শেল্টার দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অধিকাংশ খুনের ঘটনায় ফরিদ ছিলেন অনেকটা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ১৯৯৮ সালে বামিহালে শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদ ও আফজাল বাহিনীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হাসান ও মান্নান মার্ডার হয় এবং খুন জখম অস্ত্র বিভিন্ন মামলার আসামি হিসেবে পুলিশের খাতায় নাম উঠতে থাকে ফরিদ সহ তার বাহিনী সদস্যদের নামে।

২০০৫ সালে ১২ ডিসেম্বর প্রথম তার বিরুদ্ধে বামিহাল পুলিশ ফাঁড়ি লুট ও ৩ পুলিশ হত্যা মামলার উন্নতম আসামি করা হয় মামলা নং জি আর-৩৫৯/০৫।

অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, প্রকাশ্যে ও দিন-দুপুরে হত্যায় অংশ নেন এ সিরিয়াল কিলার। কিন্তু মামলা করারও সাহস করেন না কেউ। এমন ৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলায় তাকে আসামিই করা হয়নি। কিন্তু সবাই জানেন, এসব হত্যায় তার সরাসরি অংশগ্রহণ রয়েছে।

তবে ২০০৩ সালে ৮ আগষ্ট সুকাশ ইউনিয়নের বামিহাল গ্রামে গৃহবধূ চম্পা হত্যা মামলা নং ৩৫/২১৯, ২০০৩ সালে ৮ জুলাই শাজাহান হত্যা মামলা নং ০৮/১৯২, ২০০৮ সালে ৭ জুলাই আনছার আলী হত্যা মামলা নং ০৯ সিংড়া থানা। ২০১১ সালে ১০ অক্টোবর বামিহাল গ্রামে হান্নান (গাদু)’র বাড়ীতে হামলা মামলা নং-১৬/২৬৯, ২০১১ সালে ৪ এপ্রিল বামিহাল বাজারে বেলালের দোকান ঘর লুটপাট ও চাঁদাবাজী মামলা নং ০৭/১২২, ২০১২ সালে ১ জানুয়ারি অস্ত্র মামলা মামলা নং ১৪/১৪, ২০১১ সালে ৮ জুলাই বামিহাল বাজারে প্রকাশ্য জনসম্মুখ রাস্তার মধ্যে অস্ত্র দিয়ে গুলি বর্ষণ মামলা নং ১৭/২১৫,
২০১২ সালে ৫ মে বামিহাল গ্রামের আত্তাব আলীকে হত্যা চেষ্টা মামলা নং ১৭/১৮৩, ২০১২ সালে ১০ অক্টোবর আত্তাব আলীর কাছে চাঁদাদাবী মামলা নং ১৯/৩৬০, ২০১৩ সালে ৩১ জুলাই বামিহাল বাজারে প্রকাশ্যে দিবা লোকে আ’লীগ নেতা আব্দুল জলিলকে হত্যার উদ্দেশে কুপিয়ে জখম মামলা নং ২০/২৮১, ২০১৩ সালে ৫ মে বামিহাল বাসষ্ট্যান্ডে আফজাল হোসেনকে পিস্তল দিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা মামলা নং ১১/১৫০, ২০১৩ সালে ১০ ডিসেম্বর বামিহাল গ্রামের আইয়ুব আলীর বাড়ীতে অগ্নি সংযোগ জি আর নং ৩৬৫ ২০১৪ সালে ১১ নভেম্বর বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া থানায় পুলিশ ফেন্সিডিলের চালানসহ ফরিদকে গ্রেফতার করে মামলা নং ৫৭৬/১৪।

অবৈধ অস্ত্র, চাঁদাবাজী, জমিদখল, অপহরণ, অগ্নি সংযোগ ও ৬টি হত্যার ঘটনায় ফরিদ বাহিনীর উন্নতম সদস্য নাজিম, মুশিদুল, হানিফ, মজিবর ও শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদের ভাই কুদ্দুসকে প্রধান আসামি করে নাটোর জেলা জজ-কোর্ট ও সিংড়া থানা মামলা করা হয়।

সরেজমিন গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব হত্যায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদের সংশ্লিষ্টতা ছিল। তবে পুলিশ বিষয়টি কিভাবে নিয়েছে তা তারা জানেন না। ২০১৩ সালে ১১ নভেম্বর বামিহাল এলাকার আ’লীগ কর্মী আইয়ুব আলীর পরিবারে পক্ষ থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদের বিষয়ে প্রথম কেউ প্রতিবাদ করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগ করেন। এর অনুলিপি আমাদের হাতে এসেছে। এতে বলা হয়, খুনি সাম্রাজ্যের অধিপতি শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদ ও তার ছোট ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুকাশ ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কুদ্দুস বগুড়া জেলার শেরপুর এবং সিংড়া উপজেলার বামিহাল, দূর্গাপুর, ডাহিয়া, বড়গ্রাম, বিয়াশ বাজারসহ পূর্ব -দক্ষিণঞ্চলে গড়ে তুলেছেন বিশাল বাহিনী। প্রকাশ্যে তো দূরের কথা গোপনেও তার নাম কেউ মুখে আনতে সাহস করেন না। গোপনেও যদি কেউ প্রতিবাদ করেন তার রক্ষা নেই মৃত্যু তার অবধারিত। যে কারণে গৃহবধূ চম্পা ও শাহজাহান হত্যাকাণ্ডের সময় প্রত্যক্ষদর্শী থাকা সত্ত্বেও ওই মামলায় তাকে আসামি করতে পারেনি। তবে পুলিশ ওই ঘটনায় বামিহাল গ্রামের মৃত গফুর কসাইয়ের ছেলে মুশিদুলকে গ্রেফতার করলে তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ফরিদের পরিকল্পনার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ কারণে মামলার বাদী নিহত চম্পার ছেলে আত্তাব আলীসহ পরিবারের সদস্যরা ফরিদের ভয়ে এখন বাড়ি ছাড়া। ফরিদ এবং তার বাহিনীর সদস্যদের হুমকি-ধমকিতে এলাকায় এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

ফরিদ বাহিনীর প্রধান ফরিদের কাছে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে তবে অস্ত্র মামলায় সাজা হলেও আপিলে রয়েছি এবং আমাকে জড়িয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এবং রাজনৈতিক ভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও হার মানিয়েছে সিংড়ার ফরিদ বাহিনী

Update Time : ০৯:৩২:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১

আশরাফুল ইসলাম সুমন:

সিংড়ার ত্রাস দুই ভাই ফরিদ ও কুদ্দুস। নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের বামিহাল গ্রামের বাসিন্দা ফরিদ ও কুদ্দুসকে সবাই চেনেন এবং জানেন।

তাকে ধরতে পুলিশ, র‍্যাব একাধীকবার অভিযান চালিয়েছিল। বিদেশী পিস্তল ও ফেন্সিডিলের চালানসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল অনেকবার। সিংড়া উপজেলায় কুদ্দুস তেমন পরিচিত নন। তবে তার ভাই ফরিদের নাম নিতেই বামিহাল সহ আশপাশের এলাকার সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিরাও আতকে উঠেন। পুলিশের খাতায় তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সর্বহারা দলের নেতা। এলাকায় সে ফরিদ বাহিনীর প্রধান। আছে নিজস্ব অস্ত্রভাণ্ডার। ডাকাতি জমি দখল আর চাঁদাবাজির টাকায় বিত্তশালী। অথচ অধ্যবধি দুর্ধর্ষ এ কিলার পুলিশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন। জানা গেছে, হত্যাসহ অন্তত ১৭টি মামলার আসামি ফরিদুল ইসলাম ফরিদ। তার নিয়ন্ত্রণাধীন সুসংগঠিত বিশাল বাহিনী আছে। এদের নেতৃত্বেই বামিহাল বাজারসহ ওই এলাকায় চাঁদাবাজি চলে প্রকাশ্যে। চলে তাণ্ডব। তাতে মানুষের ঘুম হারাম। ভয়ে এ অঞ্চলের কেউ মুখ খুলতে সাহস করেন না। অভিযোগ রয়েছে, নাটোর জেলা ও উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন আ’লীগ দলীয় একাধিক নেতার ছত্রছায়ায় ফরিদ দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এ সিরিয়াল কিলারের লোমহর্ষক কাহিনী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, ফরিদকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযানও চালিয়েছি। সিংড়া থানায় বেশকিছু মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে সবকয়টি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, ফরিদের বিশাল বাহিনীর বিষয়ে আমি ওয়াকিবহাল নই।

তথ্যানুসন্ধানে ফরিদ বাহিনীর প্রধান ফরিদের বিরুদ্ধে হত্যা, জখম, অপহরন, ডাকাতি, জমিদখল, অস্ত্র মাদকসহ ১৭টি মামলা রয়েছে।   অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৯৯৮ সাল থেকে ফরিদ ও কুদ্দুস বাহিনীর কিলিং মিশন শুরু হয়। তিনি মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও ক্ষমতার প্রভাব, ব্যক্তি দ্বন্দ্বের জেরে ফরিদ তার বাহিনীকে ব্যবহার করে থাকে।

এক সময় উপজেলার শীর্ষ এক আ’লীগ নেতা তাকে শেল্টার দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অধিকাংশ খুনের ঘটনায় ফরিদ ছিলেন অনেকটা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ১৯৯৮ সালে বামিহালে শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদ ও আফজাল বাহিনীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হাসান ও মান্নান মার্ডার হয় এবং খুন জখম অস্ত্র বিভিন্ন মামলার আসামি হিসেবে পুলিশের খাতায় নাম উঠতে থাকে ফরিদ সহ তার বাহিনী সদস্যদের নামে।

২০০৫ সালে ১২ ডিসেম্বর প্রথম তার বিরুদ্ধে বামিহাল পুলিশ ফাঁড়ি লুট ও ৩ পুলিশ হত্যা মামলার উন্নতম আসামি করা হয় মামলা নং জি আর-৩৫৯/০৫।

অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, প্রকাশ্যে ও দিন-দুপুরে হত্যায় অংশ নেন এ সিরিয়াল কিলার। কিন্তু মামলা করারও সাহস করেন না কেউ। এমন ৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলায় তাকে আসামিই করা হয়নি। কিন্তু সবাই জানেন, এসব হত্যায় তার সরাসরি অংশগ্রহণ রয়েছে।

তবে ২০০৩ সালে ৮ আগষ্ট সুকাশ ইউনিয়নের বামিহাল গ্রামে গৃহবধূ চম্পা হত্যা মামলা নং ৩৫/২১৯, ২০০৩ সালে ৮ জুলাই শাজাহান হত্যা মামলা নং ০৮/১৯২, ২০০৮ সালে ৭ জুলাই আনছার আলী হত্যা মামলা নং ০৯ সিংড়া থানা। ২০১১ সালে ১০ অক্টোবর বামিহাল গ্রামে হান্নান (গাদু)’র বাড়ীতে হামলা মামলা নং-১৬/২৬৯, ২০১১ সালে ৪ এপ্রিল বামিহাল বাজারে বেলালের দোকান ঘর লুটপাট ও চাঁদাবাজী মামলা নং ০৭/১২২, ২০১২ সালে ১ জানুয়ারি অস্ত্র মামলা মামলা নং ১৪/১৪, ২০১১ সালে ৮ জুলাই বামিহাল বাজারে প্রকাশ্য জনসম্মুখ রাস্তার মধ্যে অস্ত্র দিয়ে গুলি বর্ষণ মামলা নং ১৭/২১৫,
২০১২ সালে ৫ মে বামিহাল গ্রামের আত্তাব আলীকে হত্যা চেষ্টা মামলা নং ১৭/১৮৩, ২০১২ সালে ১০ অক্টোবর আত্তাব আলীর কাছে চাঁদাদাবী মামলা নং ১৯/৩৬০, ২০১৩ সালে ৩১ জুলাই বামিহাল বাজারে প্রকাশ্যে দিবা লোকে আ’লীগ নেতা আব্দুল জলিলকে হত্যার উদ্দেশে কুপিয়ে জখম মামলা নং ২০/২৮১, ২০১৩ সালে ৫ মে বামিহাল বাসষ্ট্যান্ডে আফজাল হোসেনকে পিস্তল দিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা মামলা নং ১১/১৫০, ২০১৩ সালে ১০ ডিসেম্বর বামিহাল গ্রামের আইয়ুব আলীর বাড়ীতে অগ্নি সংযোগ জি আর নং ৩৬৫ ২০১৪ সালে ১১ নভেম্বর বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া থানায় পুলিশ ফেন্সিডিলের চালানসহ ফরিদকে গ্রেফতার করে মামলা নং ৫৭৬/১৪।

অবৈধ অস্ত্র, চাঁদাবাজী, জমিদখল, অপহরণ, অগ্নি সংযোগ ও ৬টি হত্যার ঘটনায় ফরিদ বাহিনীর উন্নতম সদস্য নাজিম, মুশিদুল, হানিফ, মজিবর ও শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদের ভাই কুদ্দুসকে প্রধান আসামি করে নাটোর জেলা জজ-কোর্ট ও সিংড়া থানা মামলা করা হয়।

সরেজমিন গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব হত্যায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদের সংশ্লিষ্টতা ছিল। তবে পুলিশ বিষয়টি কিভাবে নিয়েছে তা তারা জানেন না। ২০১৩ সালে ১১ নভেম্বর বামিহাল এলাকার আ’লীগ কর্মী আইয়ুব আলীর পরিবারে পক্ষ থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদের বিষয়ে প্রথম কেউ প্রতিবাদ করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগ করেন। এর অনুলিপি আমাদের হাতে এসেছে। এতে বলা হয়, খুনি সাম্রাজ্যের অধিপতি শীর্ষ সন্ত্রাসী ফরিদ ও তার ছোট ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুকাশ ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কুদ্দুস বগুড়া জেলার শেরপুর এবং সিংড়া উপজেলার বামিহাল, দূর্গাপুর, ডাহিয়া, বড়গ্রাম, বিয়াশ বাজারসহ পূর্ব -দক্ষিণঞ্চলে গড়ে তুলেছেন বিশাল বাহিনী। প্রকাশ্যে তো দূরের কথা গোপনেও তার নাম কেউ মুখে আনতে সাহস করেন না। গোপনেও যদি কেউ প্রতিবাদ করেন তার রক্ষা নেই মৃত্যু তার অবধারিত। যে কারণে গৃহবধূ চম্পা ও শাহজাহান হত্যাকাণ্ডের সময় প্রত্যক্ষদর্শী থাকা সত্ত্বেও ওই মামলায় তাকে আসামি করতে পারেনি। তবে পুলিশ ওই ঘটনায় বামিহাল গ্রামের মৃত গফুর কসাইয়ের ছেলে মুশিদুলকে গ্রেফতার করলে তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ফরিদের পরিকল্পনার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ কারণে মামলার বাদী নিহত চম্পার ছেলে আত্তাব আলীসহ পরিবারের সদস্যরা ফরিদের ভয়ে এখন বাড়ি ছাড়া। ফরিদ এবং তার বাহিনীর সদস্যদের হুমকি-ধমকিতে এলাকায় এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

ফরিদ বাহিনীর প্রধান ফরিদের কাছে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে তবে অস্ত্র মামলায় সাজা হলেও আপিলে রয়েছি এবং আমাকে জড়িয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এবং রাজনৈতিক ভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে।