বোলোনা। উত্তর ইতালির বিখ্যাত এই শহর থেকেই পৃথিবী পেয়েছে বোলোনিজ পিজ্জা কিংবা বোলোনিজ পাস্তার মতো অসামান্য কিছু। ইতিহাস আর ঐতিহ্যে ঠাসা সেই শহরটায় বরাবরই পর্যটক আনাগোণা অবিরাম। গতকাল রাতে অবশ্য খাবার আর পর্যটনের বাইরে ফুটবলটাও বোলোনা শহরে আলাদা এক মাত্রা পেয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইতালিয়ান ফুটবলের দাপুটে এক দল ছিল বোলোনিয়া। কিন্তু এসি মিলান, ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, ফিওরেন্তিনা, নাপোলিদের উত্থানের পর বোলোনিয়া কেবলই হয়েছে ইতিহাসের অংশ। সবশেষ শিরোপাটাও এসেছিল ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে। এরপর থেকে ফুটবলের জন্য বোলোনিয়ার নাম উচ্চারণ হয়েছে কমই।
সেই অপেক্ষার অবসান হলো গতকাল। রোমে কোপা ইতালিয়ানের ফাইনালে ফেভারিট এসি মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে ৫১ বছর পর কোনো শিরোপার স্বাদ পেল বোলোনিয়া এফসি। ঐতিহাসিক এই শিরোপা জয়ের দিনে গোল করেছেন দান এনদোয়ি।
ইতালির শীর্ষ লিগ সিরিআ-তে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন বোলোনিয়া। যদিও ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমের পর আর কখনোই লিগ শিরোপার দেখা পায়নি তারা। মাঝে নেমে গিয়েছিল দ্বিতীয় বিভাগেও। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে সবশেষ তারা শিরোপা স্বাদ পেয়েছিল এই ইতালিয়ান কাপেই। কাল আরও একবার ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে নেমে নিজেদের সবটুকুই উজাড় করে দিয়েছে বোলোনিয়ার খেলোয়াড়রা।
প্রথময়ার্ধে ৬০ শতাংশ বলের দখল রেখে এসি মিলানের গোলমুখে একের পর এক আক্রমণ রচনা করেছে তারা। তবে গোল আসেনি। ৮ম মিনিটে একবারই মিলান গোলরক্ষক মাইক মেনিয়ঁকে পরীক্ষায় ফেলেছিল বোলোনিয়া। বাকি সময়টা খুব কষ্ট করে সেইভ দিতে হয়নি তাকে।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর ৮ মিনিটের মাথায় ঠিকই গোল পেয়ে যায় বোলোনিয়া। রিবাউন্ডে পাওয়া বল থেকে সহজ ফিনিশ করেন সুইডেনের স্ট্রাইকার দান এনদোয়ে। এরপরের পুরোটা সময় মিলানের পায়ে বলের দখল থাকলেও সেটা থেকে কার্যকরী আক্রমণ আর হয়নি।
৯৫তম মিনিটে গোলের খুব কাছে গিয়েও হতাশ হতে হয় বোলোনিয়াকে। যদিও এর স্থায়িত্ব ছিল দুই মিনিট। ৯৭ মিনিটে খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই ৫১ বছর পর শিরোপা উৎসবে মাতে বোলোনিয়া।