Dhaka ০৭:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী কাটাখালী থানার ওসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ঘুষ বানিজ্যের, প্রতিবাদে মানববন্ধন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৫২:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০
  • ৩৭৩ Time View

রাজশাহী ব্যুরোঃ

কাটাখালী থানার ওসি বিরুদ্ধে পৌর মেয়র নির্বাচনের প্রার্থীকে হুমকি প্রদানসহ ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এব্যাপারে আরএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবু সামার ছোট ভাই সৈকত । অভিযোগে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবু সামার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাওয়া কথা উল্লেখ্য করেন। অন্যথায় নির্বাচন করা তো দূরের কথা তার জীবনে দূর্বিষ নামিয়ে আনবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। অপরদিকে কাটাখালী থানার ওসি জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে আটক বানিজ্যসহ পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আবু সামা । ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সামার বাড়িতে তল্লাশি নামে অভিযানে গিয়ে জনরোষানলে পালিয়ে আসে পুলিশ। কোন কারন ছাড়াই একটি পক্ষের সুবিধা নিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর মধ্য রাতে এই অভিযানে তিন ভ্যান পুলিশ পাঠায় ওসি জিল্লুর রহমান। এর আগেও বহুবার বিতর্কে জড়িয়েছেন ওসি কাটাখালী। শাহমুখদুম থানায় থাকা অবস্থায় ক্লোজ হন ওসি জিল্লুর।

কাটাখালী থানা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট মাসিক মাসোহারাসহ নিরিহ মানুষ ফাঁসিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কাটাখালীর থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ সমূহঃ একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম কাটাখালী থানার ওসি জিল্লুর বিরুদ্ধে বেশ কিছু সংবাদ প্রকাশ করলেও তা আমলে নেননি কর্তৃপক্ষ।
ধর্ষণ মামলার বানিজ্য – রাজশাহী নগরীর কাটাখালী থানা এলাকায় জয়পুর গ্রামে (০৯/১০/২০ইং তারিখ) এক যুবতি ধর্ষণের শিকার হয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দাখিল করেছে ভূক্তভোগি। কিন্তু আসামী দিব্যি ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। শুধু এটাই নয় ইতি পূর্বেও কাটাখালী থানার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমানের বিরুর্দ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কাটাখালী পৌরসভার প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ঈশারায় মার্ডার মামলা থেকে শুরু করে ধর্ষণ মামলাও তিনি ভিন্ন দিকে ঘুরিয়েছেন। ধর্ষনের বিষয়ে একাধিক নিউজ পোটালে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তিনি আসামিকে ধরছেন না।

ইউডি বনাম মার্ডার বানিজ্য – গত ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০ইং তারিখে সংবাদ চলমান অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ। কাটাখালী থানার মোহনপুর মহল্লায়, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২০ মলি নামের এক মহিলা তার স্বামীর নিষ্ঠুর আঘাতে নিহত হন। নিহতের পরিবার কাটাখালী থানায় সংবাদ দিলে এসআই আঃ হাকিম ঘটনাস্থলে যান এবং জন সম্মুখে ভিক্টিমের সূরহাল রিপোর্ট তৈরী করেন, এ সময় ভিক্টিমের শরীর পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় শরীরে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু মামলা রেকর্ডের সময় এসআই হাকিম আঘাতের চিহ্ন গোপন করেন। আবার আসামির পিতাকে সঙ্গে নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আঃ হাকিম রামেক হাসপাতালে পোষ্ট মডেমের রির্পোটের জন্য তদারকিও করেন।
মাদকাসক্ত ব্যাক্তির পক্ষ নেন ওসি জিল্লুর– গত ১৪ই জুলাই ২০২০ইং তারিখের এক ঘটনায় কাটাখালী থানাধীন দালাল পাড়ার রবিউল নামের এক দোকানদার জানান, তার দোকানের পার্শ্বে প্রতিবেশি বিজয় তার কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গাঁজা খাচ্ছিল। এতে বাধা প্রদান করলে বিজয় হাসুয়া দিয়ে কোপ দেয় আমাকে । এতে আমার গাল মারাক্তক ভাবে কেটে যায়। স্থানীয়রা বখাটে বিজয়ের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে আশংকা জনক অবস্থায় চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে কাটাখালী থানায় মামলা করতে গেলে ওসি জিল্লুর রহমান মামলা না নিয়ে তাড়িয়ে দেন। বরং ঘাতক বিজয়ের পক্ষে থেকে একটি অভিযোগ নিয়েছে তিনি।

কাটাখালীর থানা এলাকার দালাল পাড়ার স্থানীয়রা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, দোকানদার রবিউলের রক্তপাত হয়ে, রামেক হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তার পক্ষে মামলা না নিয়ে, মাদকাসক্ত বিজয়ের পক্ষে থেকে অভিযোগ নিয়েছে। এটা অন্যায় হয়েছে।
ওসি জিল্লুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন – এদিকে আজ ২২ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত রাজশাহী কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমানকে অপসারণের দাবিতে পৌরসভার দেওয়ানের মোড়ে পথসভা, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসীরা। এসময় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ বলেন- প্রশ্নবিদ্ধ ওসি জিল্লুর রহমান চাইছেন একটি বড় সংঘাতের। তা না হলে ওসি জিল্লুর কি কারনে পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়ী বাড়ী নীরিহ মানুষকে তুলে নিয়ে যাবেন। আমরা তো রাজনীতি করিনা ,কারো ভোটও করিনা তবে আমাদের উপর এই প্রহষন কেন ?
অপরদিকে গতকাল ২১ ডিসেম্বর আরেক মেয়র প্রার্থী মাসুদও মানববন্ধন সহ ওসির অপসারণ চেয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।

এদিকে রাজশাহী মানবাধিকার কমিশনের এক কর্মকর্তা মুঠো ফোনে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন- ‘অপরাধ দমনে পুলিশ সদর দপ্তরকে আরো কঠোর হতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরো বেশি শক্তিশালী হতে হবে। অভিযোগ আসলে সাথে সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিলে তাদের মধ্যে ভীতি আসবে। তারা আর এ ধরনের অপরাধ করবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জিল্লুর বলেন – এগুলো বানোইয়াট ও গুজব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

রাজশাহী কাটাখালী থানার ওসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ঘুষ বানিজ্যের, প্রতিবাদে মানববন্ধন

Update Time : ০৩:৫২:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০

রাজশাহী ব্যুরোঃ

কাটাখালী থানার ওসি বিরুদ্ধে পৌর মেয়র নির্বাচনের প্রার্থীকে হুমকি প্রদানসহ ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এব্যাপারে আরএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবু সামার ছোট ভাই সৈকত । অভিযোগে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবু সামার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাওয়া কথা উল্লেখ্য করেন। অন্যথায় নির্বাচন করা তো দূরের কথা তার জীবনে দূর্বিষ নামিয়ে আনবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। অপরদিকে কাটাখালী থানার ওসি জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে আটক বানিজ্যসহ পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আবু সামা । ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সামার বাড়িতে তল্লাশি নামে অভিযানে গিয়ে জনরোষানলে পালিয়ে আসে পুলিশ। কোন কারন ছাড়াই একটি পক্ষের সুবিধা নিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর মধ্য রাতে এই অভিযানে তিন ভ্যান পুলিশ পাঠায় ওসি জিল্লুর রহমান। এর আগেও বহুবার বিতর্কে জড়িয়েছেন ওসি কাটাখালী। শাহমুখদুম থানায় থাকা অবস্থায় ক্লোজ হন ওসি জিল্লুর।

কাটাখালী থানা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট মাসিক মাসোহারাসহ নিরিহ মানুষ ফাঁসিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কাটাখালীর থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ সমূহঃ একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম কাটাখালী থানার ওসি জিল্লুর বিরুদ্ধে বেশ কিছু সংবাদ প্রকাশ করলেও তা আমলে নেননি কর্তৃপক্ষ।
ধর্ষণ মামলার বানিজ্য – রাজশাহী নগরীর কাটাখালী থানা এলাকায় জয়পুর গ্রামে (০৯/১০/২০ইং তারিখ) এক যুবতি ধর্ষণের শিকার হয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দাখিল করেছে ভূক্তভোগি। কিন্তু আসামী দিব্যি ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। শুধু এটাই নয় ইতি পূর্বেও কাটাখালী থানার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমানের বিরুর্দ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কাটাখালী পৌরসভার প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ঈশারায় মার্ডার মামলা থেকে শুরু করে ধর্ষণ মামলাও তিনি ভিন্ন দিকে ঘুরিয়েছেন। ধর্ষনের বিষয়ে একাধিক নিউজ পোটালে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তিনি আসামিকে ধরছেন না।

ইউডি বনাম মার্ডার বানিজ্য – গত ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০ইং তারিখে সংবাদ চলমান অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ। কাটাখালী থানার মোহনপুর মহল্লায়, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২০ মলি নামের এক মহিলা তার স্বামীর নিষ্ঠুর আঘাতে নিহত হন। নিহতের পরিবার কাটাখালী থানায় সংবাদ দিলে এসআই আঃ হাকিম ঘটনাস্থলে যান এবং জন সম্মুখে ভিক্টিমের সূরহাল রিপোর্ট তৈরী করেন, এ সময় ভিক্টিমের শরীর পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় শরীরে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু মামলা রেকর্ডের সময় এসআই হাকিম আঘাতের চিহ্ন গোপন করেন। আবার আসামির পিতাকে সঙ্গে নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আঃ হাকিম রামেক হাসপাতালে পোষ্ট মডেমের রির্পোটের জন্য তদারকিও করেন।
মাদকাসক্ত ব্যাক্তির পক্ষ নেন ওসি জিল্লুর– গত ১৪ই জুলাই ২০২০ইং তারিখের এক ঘটনায় কাটাখালী থানাধীন দালাল পাড়ার রবিউল নামের এক দোকানদার জানান, তার দোকানের পার্শ্বে প্রতিবেশি বিজয় তার কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গাঁজা খাচ্ছিল। এতে বাধা প্রদান করলে বিজয় হাসুয়া দিয়ে কোপ দেয় আমাকে । এতে আমার গাল মারাক্তক ভাবে কেটে যায়। স্থানীয়রা বখাটে বিজয়ের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে আশংকা জনক অবস্থায় চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে কাটাখালী থানায় মামলা করতে গেলে ওসি জিল্লুর রহমান মামলা না নিয়ে তাড়িয়ে দেন। বরং ঘাতক বিজয়ের পক্ষে থেকে একটি অভিযোগ নিয়েছে তিনি।

কাটাখালীর থানা এলাকার দালাল পাড়ার স্থানীয়রা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, দোকানদার রবিউলের রক্তপাত হয়ে, রামেক হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তার পক্ষে মামলা না নিয়ে, মাদকাসক্ত বিজয়ের পক্ষে থেকে অভিযোগ নিয়েছে। এটা অন্যায় হয়েছে।
ওসি জিল্লুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন – এদিকে আজ ২২ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত রাজশাহী কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমানকে অপসারণের দাবিতে পৌরসভার দেওয়ানের মোড়ে পথসভা, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসীরা। এসময় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ বলেন- প্রশ্নবিদ্ধ ওসি জিল্লুর রহমান চাইছেন একটি বড় সংঘাতের। তা না হলে ওসি জিল্লুর কি কারনে পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়ী বাড়ী নীরিহ মানুষকে তুলে নিয়ে যাবেন। আমরা তো রাজনীতি করিনা ,কারো ভোটও করিনা তবে আমাদের উপর এই প্রহষন কেন ?
অপরদিকে গতকাল ২১ ডিসেম্বর আরেক মেয়র প্রার্থী মাসুদও মানববন্ধন সহ ওসির অপসারণ চেয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।

এদিকে রাজশাহী মানবাধিকার কমিশনের এক কর্মকর্তা মুঠো ফোনে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন- ‘অপরাধ দমনে পুলিশ সদর দপ্তরকে আরো কঠোর হতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরো বেশি শক্তিশালী হতে হবে। অভিযোগ আসলে সাথে সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিলে তাদের মধ্যে ভীতি আসবে। তারা আর এ ধরনের অপরাধ করবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জিল্লুর বলেন – এগুলো বানোইয়াট ও গুজব।