Dhaka ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে চলছে বাফুফের ভোট গ্রহণ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৪৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০২০
  • ১৪৪ Time View

দেশের ফুটবলের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন আজ। যেখানে ভাগ্য নির্ধারণ হবে গত এক যুগ ধরে দায়িত্ব পালন করা বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের। দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শুরু হয়েছে   এবারের নির্বাচন। 

নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন ৪৭ জন, আর ভোটার রয়েছের ১৩৯ জন। তবে নির্বাচনের যতটা আমেজ হওয়ার কথা ছিল, তার ছোঁয়া লাগেনি। চার মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা কাজী সালাউদ্দিন আবারও সভাপতির চেয়ারে বসতে চান। তবে, তার সময়ে ফুটবলের সব ভালো-মন্দের সব দায় চাপাচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা। তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন দুই সতীর্থ বাদল রায় ও শফিকুল ইসলাম মানিক।

যদিও কাজী সালাউদ্দিনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে শুরু থেকেই দুর্বল ভেবে আসছেন বিশ্লেষকরা। সবচেয়ে বড় কারণ, বাকি দুই সভাপতি প্রার্থীই নির্বাচন করছেন এককভাবে, কোনো প্যানেল থেকে নয়। যদিও কাজী সালাউদ্দিন নিজে জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষকে তিনি কখনোই দুর্বল ভাবেন না।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের কারণে কিছুটা চাপ অনুভব করছেন বর্তমান সভাপতি। তবে জয়ের আশাবাদি তিনি। সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি সবসময় নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসছি। ফলে এবারও জয়লাভ করবো বলে আমার আত্মবিশ্বাস। আরেকবার সভাপতি হয়ে অসামাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে চাই।’সেজন্যই মূলত এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বলে জানান এই কিংবদন্তী ফুটবলার।

অপরদিকে, বাদল রায় এবং শফিকুল ইসলাম মানিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশের ফুটবলে পরিবর্তন আসলে সবারই চাওয়া। পত্রিকার পাতা, সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়াল- সর্বক্ষেত্রে একটাই আওয়াজ, পরিবর্তন প্রয়োজন। বাংলাদেশের ফুটবলের ভাগ্য বদলাতে হলে এই পরিবর্তন না হলে হবে না। কিন্তু যে পরিবর্তন সবাই চান, সেই পরিবর্তন কি আদৌ সম্ভব?

২১ সদস্যের কার্য্যনির্বাহী কমিটির ১৫ জন এবার সালাউদ্দিনের প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন। আর বাকী ছয়জন নতুন মুখ। সহ-সভাপতি পদে আগের কমিটি থেকে সালাহউদ্দিনের প্যানেলে শুধুমাত্র কাজী নাবিল আহমেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রমোশন পেয়ে সালাহউদ্দিনের প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন আমিরুল ইসলাম বাবু, বাকী দুইজন নতুন মুখ হচ্ছেন বসুন্ধরা কিংস এর সভাপতি ইমরুল হাসান ও তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক। বর্তমান সহ-সভাপতি তাবিথ আওয়াল আগের মতই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঐ পদে নির্বাচন করছেন। সালাহউদ্দিনের প্যানেল থেকে সদস্য হিসেবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন চার নতুন মুখ। এরা হচ্ছেন, আসাদুজ্জামান মিঠু (যশোর), কামরুল হাসান হিল্টন (সিরাজগঞ্জ), সৈয়দ রিয়াজুল করিম (ফকিরের পুল ইয়ংমেন্স ক্লাব) ও ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ (রহমতগঞ্জ এমএফএস)। বাকীরা বর্তমান কমিটিরই সদস্য।

কাজী সালাউদ্দিন নিজে এক সময়ের তুখোড় এবং দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। তিনিও পরিবর্তনের আওয়াজ তুলে এসেছিলেন বাফুফের পরিচালনার দায়িত্বে। একটাই কৃতিত্ব তার, সারা বছর মাঠে ফুটবল রাখতে পেরেছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশের ফুটবলের আক্ষরিক কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।

এ কারণে বাফুফেতে তার একযুগের একনায়কতন্ত্রের পরিবর্তন চান সবাই। কিন্তু যে সমন্বয় পরিষদ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচন করছে, সেই পরিষদের সভাপতি প্রার্থীই নেই। শেখ মোহাম্মদ আসলামের নেতৃত্বে তাদের সর্বোচ্চ প্রার্থী হচ্ছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি। অপরদিকে সভাপতি পদে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদল রায় ভোটের মাঠে থাকবেন না ঘোষণা দিলেও শেষ মুহূর্তে লড়াইয়ে ফিরে এসে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন।

নির্বাচনের আগে সকাল ১১টায় প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে রয়েছে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এরপর দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে ব্যালট বক্সে ভোটের লড়াই, চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। রাত গড়াতেই জানা যাবে আগামী চার বছরের জন্য কারা আসছেন বাফুফে পরিচালনায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে চলছে বাফুফের ভোট গ্রহণ

Update Time : ০৮:৪৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০২০

দেশের ফুটবলের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন আজ। যেখানে ভাগ্য নির্ধারণ হবে গত এক যুগ ধরে দায়িত্ব পালন করা বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের। দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শুরু হয়েছে   এবারের নির্বাচন। 

নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন ৪৭ জন, আর ভোটার রয়েছের ১৩৯ জন। তবে নির্বাচনের যতটা আমেজ হওয়ার কথা ছিল, তার ছোঁয়া লাগেনি। চার মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা কাজী সালাউদ্দিন আবারও সভাপতির চেয়ারে বসতে চান। তবে, তার সময়ে ফুটবলের সব ভালো-মন্দের সব দায় চাপাচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা। তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন দুই সতীর্থ বাদল রায় ও শফিকুল ইসলাম মানিক।

যদিও কাজী সালাউদ্দিনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে শুরু থেকেই দুর্বল ভেবে আসছেন বিশ্লেষকরা। সবচেয়ে বড় কারণ, বাকি দুই সভাপতি প্রার্থীই নির্বাচন করছেন এককভাবে, কোনো প্যানেল থেকে নয়। যদিও কাজী সালাউদ্দিন নিজে জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষকে তিনি কখনোই দুর্বল ভাবেন না।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের কারণে কিছুটা চাপ অনুভব করছেন বর্তমান সভাপতি। তবে জয়ের আশাবাদি তিনি। সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি সবসময় নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসছি। ফলে এবারও জয়লাভ করবো বলে আমার আত্মবিশ্বাস। আরেকবার সভাপতি হয়ে অসামাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে চাই।’সেজন্যই মূলত এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বলে জানান এই কিংবদন্তী ফুটবলার।

অপরদিকে, বাদল রায় এবং শফিকুল ইসলাম মানিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশের ফুটবলে পরিবর্তন আসলে সবারই চাওয়া। পত্রিকার পাতা, সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়াল- সর্বক্ষেত্রে একটাই আওয়াজ, পরিবর্তন প্রয়োজন। বাংলাদেশের ফুটবলের ভাগ্য বদলাতে হলে এই পরিবর্তন না হলে হবে না। কিন্তু যে পরিবর্তন সবাই চান, সেই পরিবর্তন কি আদৌ সম্ভব?

২১ সদস্যের কার্য্যনির্বাহী কমিটির ১৫ জন এবার সালাউদ্দিনের প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন। আর বাকী ছয়জন নতুন মুখ। সহ-সভাপতি পদে আগের কমিটি থেকে সালাহউদ্দিনের প্যানেলে শুধুমাত্র কাজী নাবিল আহমেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রমোশন পেয়ে সালাহউদ্দিনের প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন আমিরুল ইসলাম বাবু, বাকী দুইজন নতুন মুখ হচ্ছেন বসুন্ধরা কিংস এর সভাপতি ইমরুল হাসান ও তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক। বর্তমান সহ-সভাপতি তাবিথ আওয়াল আগের মতই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঐ পদে নির্বাচন করছেন। সালাহউদ্দিনের প্যানেল থেকে সদস্য হিসেবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন চার নতুন মুখ। এরা হচ্ছেন, আসাদুজ্জামান মিঠু (যশোর), কামরুল হাসান হিল্টন (সিরাজগঞ্জ), সৈয়দ রিয়াজুল করিম (ফকিরের পুল ইয়ংমেন্স ক্লাব) ও ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ (রহমতগঞ্জ এমএফএস)। বাকীরা বর্তমান কমিটিরই সদস্য।

কাজী সালাউদ্দিন নিজে এক সময়ের তুখোড় এবং দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। তিনিও পরিবর্তনের আওয়াজ তুলে এসেছিলেন বাফুফের পরিচালনার দায়িত্বে। একটাই কৃতিত্ব তার, সারা বছর মাঠে ফুটবল রাখতে পেরেছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশের ফুটবলের আক্ষরিক কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।

এ কারণে বাফুফেতে তার একযুগের একনায়কতন্ত্রের পরিবর্তন চান সবাই। কিন্তু যে সমন্বয় পরিষদ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচন করছে, সেই পরিষদের সভাপতি প্রার্থীই নেই। শেখ মোহাম্মদ আসলামের নেতৃত্বে তাদের সর্বোচ্চ প্রার্থী হচ্ছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি। অপরদিকে সভাপতি পদে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদল রায় ভোটের মাঠে থাকবেন না ঘোষণা দিলেও শেষ মুহূর্তে লড়াইয়ে ফিরে এসে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন।

নির্বাচনের আগে সকাল ১১টায় প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে রয়েছে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এরপর দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে ব্যালট বক্সে ভোটের লড়াই, চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। রাত গড়াতেই জানা যাবে আগামী চার বছরের জন্য কারা আসছেন বাফুফে পরিচালনায়।