Dhaka ০৮:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল পারমাণবিক উপকরণ: ইরান

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১০:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • 37

ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কথা নিশ্চিত করে ইরান জানিয়েছে, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানেও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই তিনটি পরমাণু কেন্দ্রের পারমাণবিক উপকরণ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই তিন পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশ সময় রোববার (২২ জুন) সকালে লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশি সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ইরানে চালানো এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান অংশ নিয়েছে। এরপর ইরানের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়টি জানানো হয়। 

ইস্পাহানের নিরাপত্তাবিষয়ক ডেপুটি গভর্নর আকবর সালেহি বলেন, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আমরা এ দুটি শহরে পারমাণবিক স্থাপনার কাছে হামলা হতে দেখেছি।

ইস্পাহান ও নাতাঞ্জের আগে ফোরদোতে হামলার বিষয়টিও নিশ্চিত করে ইরান। ইরানের তাসনিম সংবাদ সংস্থা কোমের একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, ফোরদোর কিছু অংশ বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফোরদো হচ্ছে ইরানের সবচেয়ে গোপন ও সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর একটি। এটি কোম প্রদেশে একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এবং বহুদিন ধরেই ইসরাইলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু বলে বিবেচিত।

এর আগে, নিজ মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ‘সফল হামলা’ চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা-ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে-খুবই সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।’

প্রসঙ্গত, ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা, আর তার জবাবে ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা বিমান হামলার মধ্য দিয়ে এবারের সংঘাতের শুরু হয়।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় তিনশাে জনের মত মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েল বলছে, ইরানের হামলায় দেশটির কয়েক ডজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

গত ১৩ই জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় যে হামলা চালিয়েছে, তা এক কথায় নজিরবিহীন। এই অভিযানের নাম তারা দিয়েছে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। ইরানও পাল্টা জবাব দিয়েছে। হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের ওপর।

ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের গতবছর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন বিনিময় হয়েছিল। কিন্তু অতীতের যে কােনাে সংঘাতের তুলনায় ইরানের তরফে সাম্প্রতিক এ হামলা অনেক বেশি বিস্তৃত।

এর আগে, ১৯৮০-১৯৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর এটা ইরানের ভূখণ্ডের ওপর চালানো সব চাইতে বড় হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল পারমাণবিক উপকরণ: ইরান

Update Time : ০৩:১০:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কথা নিশ্চিত করে ইরান জানিয়েছে, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানেও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই তিনটি পরমাণু কেন্দ্রের পারমাণবিক উপকরণ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই তিন পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশ সময় রোববার (২২ জুন) সকালে লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশি সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ইরানে চালানো এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান অংশ নিয়েছে। এরপর ইরানের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়টি জানানো হয়। 

ইস্পাহানের নিরাপত্তাবিষয়ক ডেপুটি গভর্নর আকবর সালেহি বলেন, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আমরা এ দুটি শহরে পারমাণবিক স্থাপনার কাছে হামলা হতে দেখেছি।

ইস্পাহান ও নাতাঞ্জের আগে ফোরদোতে হামলার বিষয়টিও নিশ্চিত করে ইরান। ইরানের তাসনিম সংবাদ সংস্থা কোমের একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, ফোরদোর কিছু অংশ বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফোরদো হচ্ছে ইরানের সবচেয়ে গোপন ও সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর একটি। এটি কোম প্রদেশে একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এবং বহুদিন ধরেই ইসরাইলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু বলে বিবেচিত।

এর আগে, নিজ মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ‘সফল হামলা’ চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা-ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে-খুবই সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।’

প্রসঙ্গত, ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা, আর তার জবাবে ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা বিমান হামলার মধ্য দিয়ে এবারের সংঘাতের শুরু হয়।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় তিনশাে জনের মত মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েল বলছে, ইরানের হামলায় দেশটির কয়েক ডজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

গত ১৩ই জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় যে হামলা চালিয়েছে, তা এক কথায় নজিরবিহীন। এই অভিযানের নাম তারা দিয়েছে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। ইরানও পাল্টা জবাব দিয়েছে। হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের ওপর।

ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের গতবছর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন বিনিময় হয়েছিল। কিন্তু অতীতের যে কােনাে সংঘাতের তুলনায় ইরানের তরফে সাম্প্রতিক এ হামলা অনেক বেশি বিস্তৃত।

এর আগে, ১৯৮০-১৯৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধের পর এটা ইরানের ভূখণ্ডের ওপর চালানো সব চাইতে বড় হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।