সম্প্রতি ৪১টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে আগমণ ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। এই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানের নামও।
তবে এই নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে সরার জন্য এখনও ৬০ দিন সময় আছে পাকিস্তানের হাতে। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, ওয়াশিংটনে পাকিস্তান মিশন ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে।
গত শনিবার মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক পোস্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার নাগরিকদের নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ৪১টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ও ভ্রমণে সম্পূর্ণ/ আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই ৪১টি দেশকে লাল, কমলা এবং হলুদ—৩টি তালিকা বা ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে লাল ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়েছে ১০টি দেশকে——আফগানিস্তান, ইরান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা এবং ইয়েমেন। এই দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ন নিষিদ্ধ।
কমলা বা অরেঞ্জ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে ৫টি দেশকে—ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার এবং দক্ষিণ সুদান। নিষেধাজ্ঞার আদেশ কার্যকর হলে এসব দেশের নাগরিকরা শিক্ষার্থী ও ভ্রমণ ব্যতীত অন্যান্য ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তৃতীয় বা হলুদ ক্যাটাগরিতে রয়েছে পাকিস্তানসহ ২৫টি দেশ। এসব দেশের নাগরিকদের ওপর এখনও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি, তবে আগামী ৬০টি বা দু’মাস এসব দেশ এবং দেশের নাগরিকদের গতিবিধি দেখার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র।
অর্থাৎ পাকিস্তানের সামনে এখনও সুযোগ আছে এই তালিকা থেকে নিজের নাম মুছে ফেলার। সাম্প্রতিক এক ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “পাকিস্তানের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির ব্যাপারটি এখনও ধারণাগত পর্যায়ে আছে; আর ওয়াশিংটনে আমাদের মিশনের কর্মকর্তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। আমরা আশা করছি কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না।”
২০২১ সালে কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলা করেছিলেন মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। সেই হামলায় ১৩ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিলেন।
এ ঘটনার পর শরিফুল্লাহর সন্ধান পেতে ওয়াশিংটনকে সহযোগিতা করেছিল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। ওয়াশিংটনের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই ঘটনার জন্য পাকিস্তানের সামনে এখনও সুযোগ রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন। নয়তো পাকিস্তানের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বা ভ্রমণের ওপর আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যেতো।
সূত্র : গালফ নিউজ