Dhaka ০৬:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ে নতুন কমিটি ও প্রকাশ্যে সাক্ষ্য নেওয়ার দাবি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
  • ১৩২ Time View

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গেজেট নিয়মিত করার সুপারিশ না পাওয়া মুক্তিযোদ্ধারা।

তাঁরা নতুন বাছাই কমিটি গঠন ও প্রকাশ্যে সাক্ষ্য নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন। এসব দাবিতে ১০ মার্চ বুধবার সকালে তাঁরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আবদুল আজিজ মাস্টার। মানববন্ধন পরিচালনা করেন সেক্টর কমান্ডার ফোরামের রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, চার সদস্যের কমিটির মধ্যে একজন ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। বাকি তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কমিটিতে ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজনের ব্যাপারে আমাদেরই প্রশ্ন রয়েছে।
কর্মসূচিতে বক্তারা আরও বলেন, জামুকার নির্দেশনায় ছিল প্রকাশ্যে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে। সাক্ষ্য আইনেও এটা আছে। কিন্তু যাচাই-বাছাইকালে প্রকাশ্যে কারও সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। যারা সুপারিশ পাননি তারা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজনীতির বলি হয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে বাদ পড়া সবাই মুক্তিযোদ্ধা।

তারা আরো বলেন, দেশের জন্য আমরা প্রাণ হাতে নিয়ে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু নিজেদের স্বার্থের জন্য কমিটির সদস্যরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই স্বীকৃতি দিচ্ছেন না। এটা আমাদের জন্য ভীষণ লজ্জার। আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন- মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান, কবিকুঞ্জের সভাপতি রুহুল আমিন প্রামানিক, মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক কুমার, রাজশাহী সিটি করপোর্রেশনের প্যানেল মেয়র-২ রজব আলী, আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু, মুক্তযুদ্ধ পাঠাগারের সহ-সভাপতি মজিদা বিথী, সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, এফএ ফাউন্ডেশনের মহানগর সভাপতি আলতাফ হোসেন প্রমুখ।

এ বিষয়ে মহানগর যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাজশাহী মহানগরীর ৫৫২ জন ভাতাভোগীর মধ্যে ১৬০ জনের ব্যাপারে জামুকার সুপারিশ ছিল না। সুপারিশ ছাড়া তারা গেজেটভুক্ত হয়েছিলেন। সে কারণে জামুকা তাদের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করতে বলে। নিয়মনীতি অনুসরণ করেই যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশ ছাড়াই বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়া রাজশাহীর ১৬০ জনকে নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হয় গত মাসে। চার সদস্যের কমিটি যাচাই-বাছাই করে। তাঁদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পেলেও ১২৬ জনের গেজেটে নিয়মিত রাখার সুপারিশ করেনি কমিটি। তবে ৩৪ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটে নিয়মিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশ না পাওয়া ১২৬ জনের মধ্যে ৮৪ জনের আবেদন সরাসরি নামঞ্জুর করা হয়েছে। ২৬ জন গেজেট নিয়মিত করার আবেদনই করেননি। তাই তাদের ব্যাপারেও সুপারিশ করা হয়নি। এ ছাড়া আটজনের ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত এসেছে বলে কমিটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ে নতুন কমিটি ও প্রকাশ্যে সাক্ষ্য নেওয়ার দাবি

Update Time : ০৪:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গেজেট নিয়মিত করার সুপারিশ না পাওয়া মুক্তিযোদ্ধারা।

তাঁরা নতুন বাছাই কমিটি গঠন ও প্রকাশ্যে সাক্ষ্য নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন। এসব দাবিতে ১০ মার্চ বুধবার সকালে তাঁরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আবদুল আজিজ মাস্টার। মানববন্ধন পরিচালনা করেন সেক্টর কমান্ডার ফোরামের রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, চার সদস্যের কমিটির মধ্যে একজন ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। বাকি তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কমিটিতে ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজনের ব্যাপারে আমাদেরই প্রশ্ন রয়েছে।
কর্মসূচিতে বক্তারা আরও বলেন, জামুকার নির্দেশনায় ছিল প্রকাশ্যে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে। সাক্ষ্য আইনেও এটা আছে। কিন্তু যাচাই-বাছাইকালে প্রকাশ্যে কারও সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। যারা সুপারিশ পাননি তারা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজনীতির বলি হয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে বাদ পড়া সবাই মুক্তিযোদ্ধা।

তারা আরো বলেন, দেশের জন্য আমরা প্রাণ হাতে নিয়ে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু নিজেদের স্বার্থের জন্য কমিটির সদস্যরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই স্বীকৃতি দিচ্ছেন না। এটা আমাদের জন্য ভীষণ লজ্জার। আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন- মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান, কবিকুঞ্জের সভাপতি রুহুল আমিন প্রামানিক, মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক কুমার, রাজশাহী সিটি করপোর্রেশনের প্যানেল মেয়র-২ রজব আলী, আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু, মুক্তযুদ্ধ পাঠাগারের সহ-সভাপতি মজিদা বিথী, সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, এফএ ফাউন্ডেশনের মহানগর সভাপতি আলতাফ হোসেন প্রমুখ।

এ বিষয়ে মহানগর যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাজশাহী মহানগরীর ৫৫২ জন ভাতাভোগীর মধ্যে ১৬০ জনের ব্যাপারে জামুকার সুপারিশ ছিল না। সুপারিশ ছাড়া তারা গেজেটভুক্ত হয়েছিলেন। সে কারণে জামুকা তাদের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করতে বলে। নিয়মনীতি অনুসরণ করেই যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশ ছাড়াই বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়া রাজশাহীর ১৬০ জনকে নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হয় গত মাসে। চার সদস্যের কমিটি যাচাই-বাছাই করে। তাঁদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পেলেও ১২৬ জনের গেজেটে নিয়মিত রাখার সুপারিশ করেনি কমিটি। তবে ৩৪ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটে নিয়মিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশ না পাওয়া ১২৬ জনের মধ্যে ৮৪ জনের আবেদন সরাসরি নামঞ্জুর করা হয়েছে। ২৬ জন গেজেট নিয়মিত করার আবেদনই করেননি। তাই তাদের ব্যাপারেও সুপারিশ করা হয়নি। এ ছাড়া আটজনের ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত এসেছে বলে কমিটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।