Dhaka ০৭:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় সকালে তালিকা থেকে বাদ \ দুপুরে মৃত্যু \ বিকেলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন \ এলাকায় আলোচনার ঝড়

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ১৩৬ Time View

মোঃ সাইদুল ইসলাম নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর ধামইরহাটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জামুকা  কর্তৃক গঠিত কমিটি দ্বারা যাচাই বাছাই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নোটিশ বোর্ডে সাটানো হয়। এ তালিকায় সাক্ষী ও মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্য সঠিক নয়,তাই মুক্তিযুদ্ধ যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি ও সদস্যগণ কৃর্তক সর্বসম্মতিক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলীর নাম বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ তুলেছেন নিহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

জানা গেছে, চলতি মাসের ৬ফেব্রুয়ারী তারিখে ধামইরহাট উপজেলার ৮৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়। প্রতিবেদন ফরমে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর চলতি মাসের ২২তারিখে দেখানো হলেও তা প্রকাশ করা হয় বৃহস্পতিবার। এতে ৫৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম বাতিল করা হয়। বাতিল তালিকায় নাম থাকায় কথা শুনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলী (৮০) স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ মেয়ে এবং এক ছেলে রেখে গেছেন। তার গেজেট নম্বর-৩০৩৪। বিকেলে সাড়ে ৪টায় দিকে নিজ গ্রাম উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের অর্ন্তগত নেউটা গোপাইডাঙ্গা গ্রামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গণপতি রায়, ধামইরহাট থানার এস আই নুরুল ইসলাম, এএসআই আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফরমুদ হোসেন প্রমুখ। সাহার আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন,তার পিতা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।

এদিকে জামুকা কর্ৃতক যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে তার বাবা বোনের বাড়ী উপজেলা সাহাপুর গ্রামে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার পিতা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কিন্ত জামুকা কর্তৃক যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে আমার বোনের বাড়ী উপজেলা সাহাপুর গ্রামে সকাল ১১টার দিকে স্ট্রোক করে মারা যান।

উপজেলার যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফরমুদ হোসেন জানান, সাহার উদ্দীন ছিলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম এভাবে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি সে সহ্য করতে পারেননি। একজন মুক্তিযোদ্ধার উপর এটি অবিচার বলে মনে করি।

ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব গনপতি রায় বলেন, যাচাই বাছাই প্রতিবেদন প্রকাশের সাথে এ মৃত্যুর কোন যোগসূত্র নেই। তিনি একজন বয়স্ক ব্যক্তি। অসুস্থ্যর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া এটা প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চুরান্ত তালিকা প্রকাশের আপিল করার সুযোগ রয়েছে যারা প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ পরেছেন। তাকে সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়। তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন তাহলে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হলো কেন এমন প্রশ্ন করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এড়িয়ে যান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

নওগাঁয় সকালে তালিকা থেকে বাদ \ দুপুরে মৃত্যু \ বিকেলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন \ এলাকায় আলোচনার ঝড়

Update Time : ০১:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১

মোঃ সাইদুল ইসলাম নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর ধামইরহাটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জামুকা  কর্তৃক গঠিত কমিটি দ্বারা যাচাই বাছাই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নোটিশ বোর্ডে সাটানো হয়। এ তালিকায় সাক্ষী ও মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্য সঠিক নয়,তাই মুক্তিযুদ্ধ যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি ও সদস্যগণ কৃর্তক সর্বসম্মতিক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলীর নাম বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ তুলেছেন নিহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

জানা গেছে, চলতি মাসের ৬ফেব্রুয়ারী তারিখে ধামইরহাট উপজেলার ৮৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়। প্রতিবেদন ফরমে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর চলতি মাসের ২২তারিখে দেখানো হলেও তা প্রকাশ করা হয় বৃহস্পতিবার। এতে ৫৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম বাতিল করা হয়। বাতিল তালিকায় নাম থাকায় কথা শুনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলী (৮০) স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ মেয়ে এবং এক ছেলে রেখে গেছেন। তার গেজেট নম্বর-৩০৩৪। বিকেলে সাড়ে ৪টায় দিকে নিজ গ্রাম উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের অর্ন্তগত নেউটা গোপাইডাঙ্গা গ্রামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গণপতি রায়, ধামইরহাট থানার এস আই নুরুল ইসলাম, এএসআই আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফরমুদ হোসেন প্রমুখ। সাহার আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন,তার পিতা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।

এদিকে জামুকা কর্ৃতক যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে তার বাবা বোনের বাড়ী উপজেলা সাহাপুর গ্রামে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্ট্রোক করে মারা যান বলে অভিযোগ করে মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার পিতা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কিন্ত জামুকা কর্তৃক যাচাই বাছাই প্রতিবেদনে বাতিল তালিকায় নাম থাকার কথা শুনে আমার বোনের বাড়ী উপজেলা সাহাপুর গ্রামে সকাল ১১টার দিকে স্ট্রোক করে মারা যান।

উপজেলার যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফরমুদ হোসেন জানান, সাহার উদ্দীন ছিলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম এভাবে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি সে সহ্য করতে পারেননি। একজন মুক্তিযোদ্ধার উপর এটি অবিচার বলে মনে করি।

ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব গনপতি রায় বলেন, যাচাই বাছাই প্রতিবেদন প্রকাশের সাথে এ মৃত্যুর কোন যোগসূত্র নেই। তিনি একজন বয়স্ক ব্যক্তি। অসুস্থ্যর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া এটা প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চুরান্ত তালিকা প্রকাশের আপিল করার সুযোগ রয়েছে যারা প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ পরেছেন। তাকে সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়। তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন তাহলে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হলো কেন এমন প্রশ্ন করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এড়িয়ে যান।