Dhaka ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তুমি সুন্দর : হাবিবুর রহমান

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:২৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ২১৪ Time View
ছোট গল্পঃ তুমি সুন্দর,,,,,,,,,,
 হাবিবুর রহমান
রাতে কমিশনার রাজ্জাকের বাড়িতে কাশেম এলো। কাশেম লোকটা মাস্তান টাইপের।সোফায়  বসে মুখোমুখি দুজন।
কাশেম বলল,”কি জন্য ডেকেছেন? “
রাজ্জাক বলল,”বুঝোনা,কোনো ভাবেই যেন বিরোধী পক্ষ মাঠে নামতে না পারে। “
কাশেম বলল,”হুকুম দেন পা ভেঙ্গে দিই। ” রাজ্জাক বলল,” আমি না থাকলে তুমি  শেষ,বিরোধীদের দমন কর ভাই। “
কাশেম বলল,”বুদ্ধি দেন। “
রাজ্জাক বলল,”ওদের চরিত্রে কালি মেখে দাও,মামলা দাও,রাতের আধারে পোষ্টার ছিড়। ” কাশেম বলল,”বুঝে গেছি কমিশনার। “
তারপর কাশেম চায়ে চুমুক দিল। দুজনার আলোচনা চলতে থাকে। রাত অনেক হয়েছে। কাশেম বিদায় নিয়ে চলে গেল। কমিশনারও তার শোয়ার ঘরে গেল। কমিশনারের এক মাত্র মেয়ে নার্গিস। যেমন সুন্দরী তেমন গুনেও। নার্গিসের কয়েকদিন হলো চোখে ঘুম নেই। চ্যাটিং এ ব্যাস্ত। সে সিহাব নামের এক ছেলের সাথে চ্যাটিং করে। তাদের মধ্যে ছবি দেয়া নেয়া চলছে। সিহাব ম্যাসেন্জারে কল দিলেও নার্গিস ধরেনা। সপ্তাহ কেটে গেল। কলেজে গিয়েও তাদের চ্যাটিং বন্ধ হয়না। চুমুর ছবি বিনিময় করে দুজন। ছয় মাস পর সিহাব নার্গিসের দেখা হয়। তারা পার্কে বসে,সিহাব সুদর্শন, দেখতে অতুলনীয়।
নার্গিস তাকিয়ে আছে।
সিহাব বলল,”আমাকে দেখতে কেমন লাগছে নার্গিস? “
নার্গিস বলল,”তুমি সুন্দর। “
সিহাব বলল,”তুমিও সুন্দর। “
দুজনের হাসিতে পার্ক পাড়ায় আনন্দ ছড়িয়ে গেল। তারপর সিহাবের বুকে নার্গিস শুয়ে পড়ল। শিহাব তার চুলে হাত বুলিয়ে দেয়। নার্গিসের খুব ভালো লাগছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত নার্গিস পার্কে থাকলো।
তারপর তারা দুজন চলে গেল বাড়ির দিকে। কমিশনার রাজ্জাক ভোট নিয়ে ব্যস্ত। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। সামনে ভোট। মেয়ের খোঁজ রাখতে পারছেনা। আরও এক মাস কেটে গেল। এক সপ্তাহ পর ভোট। রাজ্জাক তার মেয়ের প্রেম লিলা জানলেও কিছু বলতে পারছেনা, কেননা ভোট। মেয়েকে শাসন করলেও মেয়ে যদি পালিয়ে যায় সেদিকেও তার ভয়। রাজ্জাক ও কাশেম কথা বলছে।
 রাজ্জাক বলল,”ভোটের পর শিহাবকে গুম করে দাও। “
কাশেম বলল,”ঠিক আছে কমিশনার,মাঠে তো আমাদের অবস্থান ভালো নয়। “
রাজ্জাক বলল,”কেন্দ্র দখল করে ছিল মারার পরিবেশ তৈরি কর। ” কাশেম বলল,”আমি তার ব্যবস্থা করে রেখেছি। “
আড়াল থেকে নার্গিস তাদের সব কথা শুনে। মনে মনে নার্গিস বলল,”বাবা যদি ভোটে জিতে তাহলে তো আমার ভালোবাসার মানুষকে মেরে ফেলবে, যা করার এখনি করব আমি। “
তারপর সারা রাত নার্গিসের ঘুম হয়নি। সিহাবকে জানিয়েছে তার বাবার গোপন প্লানের কথা। কমিশনার রাজ্জাক মোটেও ভালো লোক নয়। নার্গিস তার বাবা সমন্ধে খুব ভালো জানে -শয়তান একটা লোক। ভোটের রাত, সবাই ব্যস্ত। এই সুযোগ। নার্গিস ও সিহাব এ শহরে নেই। ঢাকায় পালিয়ে গেল। এদিকে রাত একটায় কমিশনার বাড়িতে এসে দেখে তার মেয়ে নেই। চারদিকে খুঁজেও পেলনা। তার মেয়ে পালিয়ে গেছে। মান সম্মান শেষ। সকাল হল, সবাই জেনে গেল। রাজ্জাক  কমিশনারের মেয়ে পালিয়ে গেছে। ভোটের দিন তাকে আর দেখা গেলনা মাঠে। সারাদিন ভোট মানুষ দিল। রাজ্জাক কমিশনার হেরে গেল। অন্যদিকে সিহাবের বন্ধুরা সিহাব ও নার্গিসকে বিয়ে দিয়ে দিল। দুমাস পর। দৈনিক খবরের কাগজে দেখলো সাবেক কমিশনার রাজ্জাক দূর্নীতির দায়ে গ্রেফতার।
সিহাব বলল,”তুমি সুন্দর। “
 নার্গিস বলল,”তাই তো আমি তোমার বউ। “
দুজন হাসি দিল। ঘরও হাসি দিল। তারা সুখি।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

তুমি সুন্দর : হাবিবুর রহমান

Update Time : ০৫:২৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
ছোট গল্পঃ তুমি সুন্দর,,,,,,,,,,
 হাবিবুর রহমান
রাতে কমিশনার রাজ্জাকের বাড়িতে কাশেম এলো। কাশেম লোকটা মাস্তান টাইপের।সোফায়  বসে মুখোমুখি দুজন।
কাশেম বলল,”কি জন্য ডেকেছেন? “
রাজ্জাক বলল,”বুঝোনা,কোনো ভাবেই যেন বিরোধী পক্ষ মাঠে নামতে না পারে। “
কাশেম বলল,”হুকুম দেন পা ভেঙ্গে দিই। ” রাজ্জাক বলল,” আমি না থাকলে তুমি  শেষ,বিরোধীদের দমন কর ভাই। “
কাশেম বলল,”বুদ্ধি দেন। “
রাজ্জাক বলল,”ওদের চরিত্রে কালি মেখে দাও,মামলা দাও,রাতের আধারে পোষ্টার ছিড়। ” কাশেম বলল,”বুঝে গেছি কমিশনার। “
তারপর কাশেম চায়ে চুমুক দিল। দুজনার আলোচনা চলতে থাকে। রাত অনেক হয়েছে। কাশেম বিদায় নিয়ে চলে গেল। কমিশনারও তার শোয়ার ঘরে গেল। কমিশনারের এক মাত্র মেয়ে নার্গিস। যেমন সুন্দরী তেমন গুনেও। নার্গিসের কয়েকদিন হলো চোখে ঘুম নেই। চ্যাটিং এ ব্যাস্ত। সে সিহাব নামের এক ছেলের সাথে চ্যাটিং করে। তাদের মধ্যে ছবি দেয়া নেয়া চলছে। সিহাব ম্যাসেন্জারে কল দিলেও নার্গিস ধরেনা। সপ্তাহ কেটে গেল। কলেজে গিয়েও তাদের চ্যাটিং বন্ধ হয়না। চুমুর ছবি বিনিময় করে দুজন। ছয় মাস পর সিহাব নার্গিসের দেখা হয়। তারা পার্কে বসে,সিহাব সুদর্শন, দেখতে অতুলনীয়।
নার্গিস তাকিয়ে আছে।
সিহাব বলল,”আমাকে দেখতে কেমন লাগছে নার্গিস? “
নার্গিস বলল,”তুমি সুন্দর। “
সিহাব বলল,”তুমিও সুন্দর। “
দুজনের হাসিতে পার্ক পাড়ায় আনন্দ ছড়িয়ে গেল। তারপর সিহাবের বুকে নার্গিস শুয়ে পড়ল। শিহাব তার চুলে হাত বুলিয়ে দেয়। নার্গিসের খুব ভালো লাগছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত নার্গিস পার্কে থাকলো।
তারপর তারা দুজন চলে গেল বাড়ির দিকে। কমিশনার রাজ্জাক ভোট নিয়ে ব্যস্ত। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। সামনে ভোট। মেয়ের খোঁজ রাখতে পারছেনা। আরও এক মাস কেটে গেল। এক সপ্তাহ পর ভোট। রাজ্জাক তার মেয়ের প্রেম লিলা জানলেও কিছু বলতে পারছেনা, কেননা ভোট। মেয়েকে শাসন করলেও মেয়ে যদি পালিয়ে যায় সেদিকেও তার ভয়। রাজ্জাক ও কাশেম কথা বলছে।
 রাজ্জাক বলল,”ভোটের পর শিহাবকে গুম করে দাও। “
কাশেম বলল,”ঠিক আছে কমিশনার,মাঠে তো আমাদের অবস্থান ভালো নয়। “
রাজ্জাক বলল,”কেন্দ্র দখল করে ছিল মারার পরিবেশ তৈরি কর। ” কাশেম বলল,”আমি তার ব্যবস্থা করে রেখেছি। “
আড়াল থেকে নার্গিস তাদের সব কথা শুনে। মনে মনে নার্গিস বলল,”বাবা যদি ভোটে জিতে তাহলে তো আমার ভালোবাসার মানুষকে মেরে ফেলবে, যা করার এখনি করব আমি। “
তারপর সারা রাত নার্গিসের ঘুম হয়নি। সিহাবকে জানিয়েছে তার বাবার গোপন প্লানের কথা। কমিশনার রাজ্জাক মোটেও ভালো লোক নয়। নার্গিস তার বাবা সমন্ধে খুব ভালো জানে -শয়তান একটা লোক। ভোটের রাত, সবাই ব্যস্ত। এই সুযোগ। নার্গিস ও সিহাব এ শহরে নেই। ঢাকায় পালিয়ে গেল। এদিকে রাত একটায় কমিশনার বাড়িতে এসে দেখে তার মেয়ে নেই। চারদিকে খুঁজেও পেলনা। তার মেয়ে পালিয়ে গেছে। মান সম্মান শেষ। সকাল হল, সবাই জেনে গেল। রাজ্জাক  কমিশনারের মেয়ে পালিয়ে গেছে। ভোটের দিন তাকে আর দেখা গেলনা মাঠে। সারাদিন ভোট মানুষ দিল। রাজ্জাক কমিশনার হেরে গেল। অন্যদিকে সিহাবের বন্ধুরা সিহাব ও নার্গিসকে বিয়ে দিয়ে দিল। দুমাস পর। দৈনিক খবরের কাগজে দেখলো সাবেক কমিশনার রাজ্জাক দূর্নীতির দায়ে গ্রেফতার।
সিহাব বলল,”তুমি সুন্দর। “
 নার্গিস বলল,”তাই তো আমি তোমার বউ। “
দুজন হাসি দিল। ঘরও হাসি দিল। তারা সুখি।