মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ‘দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে।’ কিন্তু তেহরান ও তেল আবিরের পক্ষ থেকে এখনও অনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ অবস্থায় ‘যুদ্ধবিরতির’ খবর নিয়ে ধোঁয়াশা দৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সিএনএন জানায়, ইরানের গণমাধ্যমগুলো ‘যুদ্ধবিরতি’ শুরুর কথা বললেও সুনির্দিষ্ট বিবরণ এবং সময় নিয়ে এখনও বিভ্রান্তি রয়েছে।
ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে এখন যুদ্ধবিরতি ‘কার্যকর’। দয়া করে এটি লঙ্ঘন করবেন না!
এদিকে, ইরানের প্রেস টিভি জানিয়েছে, ইসরায়েলি অধিকৃত অঞ্চলে ইরানের চারটি হামলার পর যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে।
দেশটির আধা-সরকারি তাসনিম সংবাদ সংস্থা তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ‘বাস্তবায়নের পর্যায়ে’ প্রবেশ করেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ এবং ওয়াইনেটও যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার খবরে শিরোনাম করেছে।
এর আগে, সোমবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে, তার এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানিয়েছিল তেহরান টাইমস। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিও বলেছেন, এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বা সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।
উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান।