Dhaka ০৭:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘টিভিতে দেহি কত মাইনষেরে কত টেহা দেন, আমারে এই একটা টেহা দিতে এত কষ্ট!’

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৫৬:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মার্চ ২০২১
  • ১১০ Time View

হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় একটি নাটক ছিল বহুব্রীহি। সেই নাটকে আমি ‘সোবহান সাহেব’ নামে এক দানশীল ও হৃদয়বান ব্যক্তির চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম, যিনি মানুষকে বিপদে-আপদে সাহায্য ও আশ্রয় দেন। নাটকটা যখন প্রচার হচ্ছিল, সে-সময় একদিন বাজারে গিয়েছি। এক বৃদ্ধ ভিখারিনি এগিয়ে এসে সাহায্য চাইলেন। কিছু দেবো না বলে দিলাম; কিন্তু তিনি পিছু ছাড়লেন না, টাকা চাইতেই লাগলেন। একসময় তার সব উপরোধ-আকুতি উপেক্ষা করে আমি যখন বাজার শেষে গাড়িতে উঠতে যাব তখন পুনরায় তার কাতর অনুরোধ ‘একটা টেহা দ্যান না বাবা।’

এবার কিছুটা ধমকে উঠলাম ‘এই যান তো যান। টাকা দিতে পারব না, যান!’ আমার বিরক্তি দেখে মহিলা হতভম্ব। সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন ‘টিভিতে দেহি কত মাইনষেরে কত টেহা দেন, আমারে এই একটা টেহা দিতে এত কষ্ট!’

খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন। ঘটনাটা আমাকে বেশ নাড়া দিল। অভিনয়ের শক্তিটা নতুন করে উপলব্ধি করলাম। এজন্যেই আমি নাটক রচনার ক্ষেত্রে কোনো চরিত্রকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করি না। যেমন, শাশুড়ি বা পুলিশের চরিত্র। কারণ অধিকাংশ দর্শক একেই বাস্তব হিসেবে ধারণা করে বসে। ফলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।

আমার শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামের রেলওয়ে কলোনিতে। তখন মা-বাবার সাথে বিভিন্ন নাটকের আসরে যেতাম। এভাবেই নাটকের প্রতি ভালবাসা জন্মে। ১০ বছর বয়সে বন্ধুদের নিয়ে টিপু সুলতান নাটকে অভিনয় করি। তারপর স্কুল কলেজ কলোনির অনুষ্ঠান— অভিনয়ের কোনো সুযোগই কোথাও হাতছাড়া করি নি। সবার মুখে শুনতাম একটা কথা এই ছেলের অভিনয় তো অভিনয়ই মনে হয় না! আমার খুব মন খারাপ হতো কথাটা শুনে। এটা কি প্রশংসা নাকি অন্য কিছু বুঝতাম না। এদিকে অভিনয়ের নেশাও পেয়ে বসেছে। বুয়েটে পড়াকালীন ভার্সিটির কোথাও নাটক হয়েছে আর আমি অভিনয় করি নি, এমনটা কখনো হয় নি।

১৯৬৭ সালে বুয়েটে পড়াশোনা শেষ হলো। প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিলাম ঢাকা ওয়াসায়। সেটাও নাটকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার সুবিধার্থেই, কারণ ঐ চাকরিতে ঢাকার বাইরে বদলি নেই।

এর মধ্যে জিয়া হায়দারের নাম শুনলাম। তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় নামে একটি নাট্যদল গঠন করতে যাচ্ছেন। আমি যথারীতি যুক্ত হলাম। ওখানে গিয়ে বুঝলাম আগে যা করেছি সবই না বুঝে, না জেনে। ভেতর থেকে যা এসেছে তা-ই করেছি। কিন্তু জিয়া হায়দার, আমার নাটকের শিক্ষাগুরু, তিনিই প্রথম শেখালেন প্রকৃত অভিনয়টা আসলে কী। তিনি বলতেন, অভিনয় না করাটাই শ্রেষ্ঠ অভিনয়। আমার অভিনয় যে অভিনয়ই মনে হয় না, তা শুনে কষ্ট পেতাম। নাগরিকে গিয়ে বুঝলাম ওটা স্রষ্টাপ্রদত্ত গুণ। আমি স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ, এই গুণটা আমার সহজাত। সেই থেকে আমি সবসময় এটাকেই ধরে রাখার চেষ্টা করেছি।

এভাবেই আমার নাট্যচর্চা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেল। স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সেই সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রামের পাশাপাশি আমরা নানাভাবে সাংস্কৃতিক আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছিলাম। পশ্চিমা অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ আমরা শহীদ মিনারে, মাঠে-ময়দানে, রাস্তাঘাটে নাটক করতাম।

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ আমাদের একটি নাটক মঞ্চস্থ করার কথা ছিল রক্ত দিলাম স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি। একপর্যায়ে কোমায় চলে গেলাম। কোমা থেকে ফেরার পর দেখি হাসপাতালে আমি একা শয্যাশায়ী। ডাক্তার-নার্স কেউ নেই। দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শুনলাম আমার মেয়ে বিপাশা জন্মগ্রহণ করেছে, সে আমার স্ত্রীর সাথে গ্রামের বাড়িতে আছে।

মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে না পারার বেদনা তো ছিলই, তার চেয়ে বেশি যা আমাকে ব্যথিত করল, সেটা হলো, প্রফেসর ডা. ফজলে রাব্বীর মৃৃত্যু। ১৫ ডিসেম্বর স্বাধীনতা-বিরোধীদের হাতে তিনি অপহৃত ও নিহত হন। মাসকয়েক আগে তার চিকিৎসাতেই আমি সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম।

স্বাধীনতার পর চলচ্চিত্রেও অভিনয় শুরু করি। ১৯৭২ সালে আমার প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয়। ছবিটা ছিল বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম।

পরবর্তীতে শিশুদের নিয়ে আমি কিছু নাটক নির্মাণ করেছি। শিশুদের মনটাকে বুঝতে চেয়েছি। আমরা শিশুদের বুঝি না, কারণ বুঝতে চাই না। ওদের ওপর জোর খাটাতে গিয়ে নানা মানসিক চাপ সৃষ্টি করি। এ ব্যাপারে আমি সচেতন হয়েছি আমার বাবাকে দেখে। তিনি ছিলেন সব্যসাচী মানুষ। বিচিত্র বিষয়ে ছিল তার জ্ঞান ও আগ্রহ। তিনি আমাকে বাগান করা, ছবি আঁকা, মাছ ধরা শিখিয়েছেন। কিন্তু কখনো কিছু চাপিয়ে দেন নি।

যে শিশুদের নিয়ে আমি কাজ করেছি তারা অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা। জীবনের এ পর্যায়ে এই কাজগুলোই আমি করতে চাই। নিজে যা শিখেছি, যেটুকু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সেটা ছড়িয়ে দিতে চাই। এই বিরামহীন কাজ করে যাওয়ার জন্যে দরকার সুস্থ থাকা।

নিজেকে সুস্থ রাখতে আমি কিছু বিষয় মেনে চলি। বাইরের কোনো খাবার বিশেষত ফাস্টফুড খাই না। ফাস্টফুড ও চিনি, দুটোই কিন্তু বিষ। চিনির উৎস হতে পারে ফল। বাংলাদেশের ওপর স্রষ্টার বিশেষ রহমত আমাদের এত বিচিত্র সব ফল রয়েছে, যে সময়ে যে ফল পাওয়া যায় সেই ঋতুর রোগের প্রতিষেধকও সেই ফল।

আর একটা কথা আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমার কাজ ও পরিবার নিয়েই আমার জীবন। কাজের বাইরে যতটুকু সময়, সেটা আমার পরিবারের। আমার জীবনে কোনো আড্ডা বা ক্লাব কিছুই নেই।

কোয়ান্টামের একটা কথা আমার বেশ পছন্দের রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। ব্যক্তিগত জীবনেও এটা প্রয়োগ করে আমি লাভবান হয়েছি। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন সমাজে বিশেষ অবদান রাখছে। ধর্মবর্ণনির্বিশেষে বহু মানুষ যোগ দিয়েছে কোয়ান্টামের এই মিলনমেলায়। এখানে এসে প্রশান্ত হওয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ তার ভেতরের শক্তিকে উপলব্ধি করেন। এতে তিনি যেমন উপকৃত হচ্ছেন, এগিয়ে যাচ্ছে জাতিও।

লিখাটি বিশিষ্ট অভিনেতা আবুল হায়াতের ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালের মুক্ত আলোচনা থেকে সংগৃহীত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

‘টিভিতে দেহি কত মাইনষেরে কত টেহা দেন, আমারে এই একটা টেহা দিতে এত কষ্ট!’

Update Time : ০৫:৫৬:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মার্চ ২০২১

হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় একটি নাটক ছিল বহুব্রীহি। সেই নাটকে আমি ‘সোবহান সাহেব’ নামে এক দানশীল ও হৃদয়বান ব্যক্তির চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম, যিনি মানুষকে বিপদে-আপদে সাহায্য ও আশ্রয় দেন। নাটকটা যখন প্রচার হচ্ছিল, সে-সময় একদিন বাজারে গিয়েছি। এক বৃদ্ধ ভিখারিনি এগিয়ে এসে সাহায্য চাইলেন। কিছু দেবো না বলে দিলাম; কিন্তু তিনি পিছু ছাড়লেন না, টাকা চাইতেই লাগলেন। একসময় তার সব উপরোধ-আকুতি উপেক্ষা করে আমি যখন বাজার শেষে গাড়িতে উঠতে যাব তখন পুনরায় তার কাতর অনুরোধ ‘একটা টেহা দ্যান না বাবা।’

এবার কিছুটা ধমকে উঠলাম ‘এই যান তো যান। টাকা দিতে পারব না, যান!’ আমার বিরক্তি দেখে মহিলা হতভম্ব। সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন ‘টিভিতে দেহি কত মাইনষেরে কত টেহা দেন, আমারে এই একটা টেহা দিতে এত কষ্ট!’

খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন। ঘটনাটা আমাকে বেশ নাড়া দিল। অভিনয়ের শক্তিটা নতুন করে উপলব্ধি করলাম। এজন্যেই আমি নাটক রচনার ক্ষেত্রে কোনো চরিত্রকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করি না। যেমন, শাশুড়ি বা পুলিশের চরিত্র। কারণ অধিকাংশ দর্শক একেই বাস্তব হিসেবে ধারণা করে বসে। ফলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।

আমার শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামের রেলওয়ে কলোনিতে। তখন মা-বাবার সাথে বিভিন্ন নাটকের আসরে যেতাম। এভাবেই নাটকের প্রতি ভালবাসা জন্মে। ১০ বছর বয়সে বন্ধুদের নিয়ে টিপু সুলতান নাটকে অভিনয় করি। তারপর স্কুল কলেজ কলোনির অনুষ্ঠান— অভিনয়ের কোনো সুযোগই কোথাও হাতছাড়া করি নি। সবার মুখে শুনতাম একটা কথা এই ছেলের অভিনয় তো অভিনয়ই মনে হয় না! আমার খুব মন খারাপ হতো কথাটা শুনে। এটা কি প্রশংসা নাকি অন্য কিছু বুঝতাম না। এদিকে অভিনয়ের নেশাও পেয়ে বসেছে। বুয়েটে পড়াকালীন ভার্সিটির কোথাও নাটক হয়েছে আর আমি অভিনয় করি নি, এমনটা কখনো হয় নি।

১৯৬৭ সালে বুয়েটে পড়াশোনা শেষ হলো। প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিলাম ঢাকা ওয়াসায়। সেটাও নাটকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার সুবিধার্থেই, কারণ ঐ চাকরিতে ঢাকার বাইরে বদলি নেই।

এর মধ্যে জিয়া হায়দারের নাম শুনলাম। তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় নামে একটি নাট্যদল গঠন করতে যাচ্ছেন। আমি যথারীতি যুক্ত হলাম। ওখানে গিয়ে বুঝলাম আগে যা করেছি সবই না বুঝে, না জেনে। ভেতর থেকে যা এসেছে তা-ই করেছি। কিন্তু জিয়া হায়দার, আমার নাটকের শিক্ষাগুরু, তিনিই প্রথম শেখালেন প্রকৃত অভিনয়টা আসলে কী। তিনি বলতেন, অভিনয় না করাটাই শ্রেষ্ঠ অভিনয়। আমার অভিনয় যে অভিনয়ই মনে হয় না, তা শুনে কষ্ট পেতাম। নাগরিকে গিয়ে বুঝলাম ওটা স্রষ্টাপ্রদত্ত গুণ। আমি স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ, এই গুণটা আমার সহজাত। সেই থেকে আমি সবসময় এটাকেই ধরে রাখার চেষ্টা করেছি।

এভাবেই আমার নাট্যচর্চা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেল। স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সেই সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রামের পাশাপাশি আমরা নানাভাবে সাংস্কৃতিক আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছিলাম। পশ্চিমা অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ আমরা শহীদ মিনারে, মাঠে-ময়দানে, রাস্তাঘাটে নাটক করতাম।

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ আমাদের একটি নাটক মঞ্চস্থ করার কথা ছিল রক্ত দিলাম স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি। একপর্যায়ে কোমায় চলে গেলাম। কোমা থেকে ফেরার পর দেখি হাসপাতালে আমি একা শয্যাশায়ী। ডাক্তার-নার্স কেউ নেই। দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। শুনলাম আমার মেয়ে বিপাশা জন্মগ্রহণ করেছে, সে আমার স্ত্রীর সাথে গ্রামের বাড়িতে আছে।

মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে না পারার বেদনা তো ছিলই, তার চেয়ে বেশি যা আমাকে ব্যথিত করল, সেটা হলো, প্রফেসর ডা. ফজলে রাব্বীর মৃৃত্যু। ১৫ ডিসেম্বর স্বাধীনতা-বিরোধীদের হাতে তিনি অপহৃত ও নিহত হন। মাসকয়েক আগে তার চিকিৎসাতেই আমি সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম।

স্বাধীনতার পর চলচ্চিত্রেও অভিনয় শুরু করি। ১৯৭২ সালে আমার প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয়। ছবিটা ছিল বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম।

পরবর্তীতে শিশুদের নিয়ে আমি কিছু নাটক নির্মাণ করেছি। শিশুদের মনটাকে বুঝতে চেয়েছি। আমরা শিশুদের বুঝি না, কারণ বুঝতে চাই না। ওদের ওপর জোর খাটাতে গিয়ে নানা মানসিক চাপ সৃষ্টি করি। এ ব্যাপারে আমি সচেতন হয়েছি আমার বাবাকে দেখে। তিনি ছিলেন সব্যসাচী মানুষ। বিচিত্র বিষয়ে ছিল তার জ্ঞান ও আগ্রহ। তিনি আমাকে বাগান করা, ছবি আঁকা, মাছ ধরা শিখিয়েছেন। কিন্তু কখনো কিছু চাপিয়ে দেন নি।

যে শিশুদের নিয়ে আমি কাজ করেছি তারা অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা। জীবনের এ পর্যায়ে এই কাজগুলোই আমি করতে চাই। নিজে যা শিখেছি, যেটুকু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সেটা ছড়িয়ে দিতে চাই। এই বিরামহীন কাজ করে যাওয়ার জন্যে দরকার সুস্থ থাকা।

নিজেকে সুস্থ রাখতে আমি কিছু বিষয় মেনে চলি। বাইরের কোনো খাবার বিশেষত ফাস্টফুড খাই না। ফাস্টফুড ও চিনি, দুটোই কিন্তু বিষ। চিনির উৎস হতে পারে ফল। বাংলাদেশের ওপর স্রষ্টার বিশেষ রহমত আমাদের এত বিচিত্র সব ফল রয়েছে, যে সময়ে যে ফল পাওয়া যায় সেই ঋতুর রোগের প্রতিষেধকও সেই ফল।

আর একটা কথা আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমার কাজ ও পরিবার নিয়েই আমার জীবন। কাজের বাইরে যতটুকু সময়, সেটা আমার পরিবারের। আমার জীবনে কোনো আড্ডা বা ক্লাব কিছুই নেই।

কোয়ান্টামের একটা কথা আমার বেশ পছন্দের রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। ব্যক্তিগত জীবনেও এটা প্রয়োগ করে আমি লাভবান হয়েছি। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন সমাজে বিশেষ অবদান রাখছে। ধর্মবর্ণনির্বিশেষে বহু মানুষ যোগ দিয়েছে কোয়ান্টামের এই মিলনমেলায়। এখানে এসে প্রশান্ত হওয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ তার ভেতরের শক্তিকে উপলব্ধি করেন। এতে তিনি যেমন উপকৃত হচ্ছেন, এগিয়ে যাচ্ছে জাতিও।

লিখাটি বিশিষ্ট অভিনেতা আবুল হায়াতের ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালের মুক্ত আলোচনা থেকে সংগৃহীত।