Dhaka ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেলেই যেতে হলো পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক নেতাকে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০৩:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মে ২০২১
  • ৫৪ Time View

মহীতোষ গায়েন, মফস্বল সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ:

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জামিনের আদেশে স্থগিতাদেশ। জেলেই যেতে হলো পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক নেতাকে। রাতে অসুস্থ মদন।

দিনভর নাটকের পর শেষ পর্যন্ত মাঝরাতে জেলে যেতে হলো নারদ-কাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূলের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং কলকাতার সাবেক মেয়রকে। মধ্যরাতে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ শুনানিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও এ দিন বিকেলেই সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত তাদের জামিনের নির্দেশ দিয়েছিল। রাতে হাইকোর্ট সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ ঘোষণা করে।

নাটকের শুরু সোমবার সকালে। সিবিআইয়ের  বিশেষ টিম প্রথমে কলকাতা পুরসভার সাবেক মেয়র এবং বর্তমানে পুরপ্রশাসনের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর একে একে আরেক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। শোভন আগে তৃণমূলে থাকলেও বছরখানেক আগে বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। যদিও বিধানসভা ভোটে টিকিট না পাওয়ায় তিনি ফের তৃণমূলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। চার নেতাই ২০১৬ সালে নারদ-মামলায় জড়িত বলে সিবিআইয়েকর দাবি। এই মামলায় জড়িত অন্য নেতাদের একাংশ এখন বিজেপিতে। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কুদেব পান্ডা– সকলকেই নারদ স্টিং অপারেশনে দেখা গিয়েছিল। অভিযোগ, তারা বিজেপিতে চলে যাওয়ায় সিবিআই তাদের আটক করেনি।

মন্ত্রীরা গ্রেফতার হওয়ার পরেই সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইকে তিনি বলেন, মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করলে তাকেও গ্রেপ্তার করতে হবে। নিজাম প্যালেসে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন তিনি। নিজাম প্যালেস এবং রাজভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূলকর্মীরা। তারই মধ্যে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি শুরু হয়।

বিকেলে আদালত চারজনকেই অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি দেয়। তার খানিক আগেই অবশ্য মমতা নিজাম প্যালেস ছেড়ে চলে গেছেন। জামিন ঘোষণা হওয়ার পরে নেতাদের বাড়ি ফেরার প্রস্তুতিও শুরু হয়। তারই মধ্যে মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে। মধ্য রাত পর্যন্ত সেখানে শুনানি চলার পরে হাইকোর্ট সিবিআই আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়। রাতেই কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় চার নেতাকে।

রাত প্রায় তিনটে নাগাদ জেলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় মদন মিত্রের। নির্বাচন পর্বে তিনি শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ছিলেন। রাতেই মদনকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে যাওয়া হয়। উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর কেবিনে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। রাতে অসুস্থ বোধ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। তাকেও উডবার্নের ১০৬ নম্বর ঘরে ভর্তি করা হয়। সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ফের জেলে ফেরত আনা হয়। ফিরহাদ হাকিমের বড় মেয়ে এবং জামাই রাতে নিজাম প্যালেসে বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। নিজাম প্যালেস থেকে জেলে যাওয়ার পথে ফিরহাদের সঙ্গে দেখা হয় তাদের।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

জেলেই যেতে হলো পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক নেতাকে

Update Time : ০৩:০৩:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মে ২০২১

মহীতোষ গায়েন, মফস্বল সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ:

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জামিনের আদেশে স্থগিতাদেশ। জেলেই যেতে হলো পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক নেতাকে। রাতে অসুস্থ মদন।

দিনভর নাটকের পর শেষ পর্যন্ত মাঝরাতে জেলে যেতে হলো নারদ-কাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূলের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং কলকাতার সাবেক মেয়রকে। মধ্যরাতে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ শুনানিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও এ দিন বিকেলেই সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত তাদের জামিনের নির্দেশ দিয়েছিল। রাতে হাইকোর্ট সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ ঘোষণা করে।

নাটকের শুরু সোমবার সকালে। সিবিআইয়ের  বিশেষ টিম প্রথমে কলকাতা পুরসভার সাবেক মেয়র এবং বর্তমানে পুরপ্রশাসনের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর একে একে আরেক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। শোভন আগে তৃণমূলে থাকলেও বছরখানেক আগে বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। যদিও বিধানসভা ভোটে টিকিট না পাওয়ায় তিনি ফের তৃণমূলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। চার নেতাই ২০১৬ সালে নারদ-মামলায় জড়িত বলে সিবিআইয়েকর দাবি। এই মামলায় জড়িত অন্য নেতাদের একাংশ এখন বিজেপিতে। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কুদেব পান্ডা– সকলকেই নারদ স্টিং অপারেশনে দেখা গিয়েছিল। অভিযোগ, তারা বিজেপিতে চলে যাওয়ায় সিবিআই তাদের আটক করেনি।

মন্ত্রীরা গ্রেফতার হওয়ার পরেই সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইকে তিনি বলেন, মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করলে তাকেও গ্রেপ্তার করতে হবে। নিজাম প্যালেসে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন তিনি। নিজাম প্যালেস এবং রাজভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূলকর্মীরা। তারই মধ্যে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি শুরু হয়।

বিকেলে আদালত চারজনকেই অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি দেয়। তার খানিক আগেই অবশ্য মমতা নিজাম প্যালেস ছেড়ে চলে গেছেন। জামিন ঘোষণা হওয়ার পরে নেতাদের বাড়ি ফেরার প্রস্তুতিও শুরু হয়। তারই মধ্যে মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে। মধ্য রাত পর্যন্ত সেখানে শুনানি চলার পরে হাইকোর্ট সিবিআই আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়। রাতেই কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় চার নেতাকে।

রাত প্রায় তিনটে নাগাদ জেলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় মদন মিত্রের। নির্বাচন পর্বে তিনি শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ছিলেন। রাতেই মদনকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে যাওয়া হয়। উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর কেবিনে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। রাতে অসুস্থ বোধ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। তাকেও উডবার্নের ১০৬ নম্বর ঘরে ভর্তি করা হয়। সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ফের জেলে ফেরত আনা হয়। ফিরহাদ হাকিমের বড় মেয়ে এবং জামাই রাতে নিজাম প্যালেসে বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। নিজাম প্যালেস থেকে জেলে যাওয়ার পথে ফিরহাদের সঙ্গে দেখা হয় তাদের।