Dhaka ০৭:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জবা ফুলের চায়ের যত গুণ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:১৯:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০২০
  • ১৯৮ Time View

জবা ফুলে এমনিতেই বেশ কিছু ওষধি গুণ রয়েছে। আর জবা ফুল থেকে তৈরি চা এখন খুবই জনপ্রিয়। ফুলের মত জবা ফুলের চাও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। সারা বিশ্বে জবা চায়ের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে।

জবা চায়ের কি কি উপকারিতা আছে তা জানলে হয়তো কেউই এটা মিস করতে চাইবেন না। এবার তা জেনে নিন…

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে:
সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, এই বিশেষ চায়ে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ নিমেষে রক্তচাপকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই জবা ফুলের চা খেতে পারেন যারা আজকাল অফিসে কাজের চাপ এবং দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যা থেকে রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন।

কোলেস্টেরল কমায়:
রক্তচাপ বাড়লে এবং খাওয়া দাওয়া নিয়মমতো না হলেই বাড়ে কোলেস্টেরল। সেখান থেকে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও বাড়ে। জবার চা হার্টে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। কোলেস্টেরলও জমতে দেয় না। এছাড়া ব্রেন ও হার্টের কোনও রকম ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় জবা ফুলের চা।

লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে:
সম্প্রতি বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে জবা ফুলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এর ফলে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে। সেই সঙ্গে অনেক উপকারও পাওয়া যায়। ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে:
জবা ফুলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড আমাদের শরীরে ভিটামিন সি’র চাহিদা মেটায়। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। যে কারণে সর্দি-কাশির আর্য়ুবেদিক ওষুধ তৈরিতেও জবা ফুল ব্যবহার করা হয়।

পিরিয়ডের সমস্যা মেটায়:
মেয়েদের বিশেষ সময়ে যদি নিয়মিত জবা ফুল দিয়ে বানানো চা খাওয়া যায়, তাহলে পিরিয়ড ক্র্যাম্প এবং যন্ত্রণা অনেকটাই কমে। সেই সঙ্গে অন্যান্য অস্বস্তিও দূর হয়। প্রসঙ্গত, হরমোনাল ইমব্যালেন্স কমাতেও এই পানীয়টি দারুন কাজে আসে। তাই মেয়েরা যদি প্রতিদিন এই চা পান করতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার মেলে।

মানসিক অবসাদ কমায়:
নানা কারণে মনটা খারাপ হলে ঝটপট এক কাপ জবার চা বানিয়ে পান করুন। এমনটা করলে দেখবেন মুড একেবারে ফ্রেশ হয়ে যাবে। কারণ এতে উপস্থিত উপকারি ভিটামিন এবং মিনারেল স্নায়ুতন্ত্রে তৈরি হওয়া প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি অ্যাংজাইটি কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।

ওজন কমায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জবার চা খেলে শরীরে শর্করা এবং স্টার্চের শোষণ কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে। বেশ কয়েকজন গবেষক এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে আরেকটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন। তাদের মতে জবা ফুলের চায়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরে অ্যামিলেস নামক একটি উপাদানের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।

যেভাবে বানাবেন:
জবা ফুলের পাঁপড়িগুলো ছিড়ে নিন সাবধানে। এবার মাঝখানের ডাঁটি ফেলে দিন। পানির মধ্যে দারচিনি বা এলাচ ফেলে ফুটিয়ে নিন। দশ মিনিট ফোটানোর পর রং বদলালে ছেঁকে নিন। মধু মিশিয়ে খান। গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারলে খুবই ভালো।

আর জবা ফুলের পাঁপড়ি সাতদিন রোদে ফেলে শুকিয়ে তা কাঁচের জারে সংরক্ষণ করেও রাখতে পারেন। তারপর চা তৈরির সময় মিলিয়ে নিতে পারেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

জবা ফুলের চায়ের যত গুণ

Update Time : ০৪:১৯:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০২০

জবা ফুলে এমনিতেই বেশ কিছু ওষধি গুণ রয়েছে। আর জবা ফুল থেকে তৈরি চা এখন খুবই জনপ্রিয়। ফুলের মত জবা ফুলের চাও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। সারা বিশ্বে জবা চায়ের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে।

জবা চায়ের কি কি উপকারিতা আছে তা জানলে হয়তো কেউই এটা মিস করতে চাইবেন না। এবার তা জেনে নিন…

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে:
সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, এই বিশেষ চায়ে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ নিমেষে রক্তচাপকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই জবা ফুলের চা খেতে পারেন যারা আজকাল অফিসে কাজের চাপ এবং দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যা থেকে রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন।

কোলেস্টেরল কমায়:
রক্তচাপ বাড়লে এবং খাওয়া দাওয়া নিয়মমতো না হলেই বাড়ে কোলেস্টেরল। সেখান থেকে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও বাড়ে। জবার চা হার্টে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। কোলেস্টেরলও জমতে দেয় না। এছাড়া ব্রেন ও হার্টের কোনও রকম ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় জবা ফুলের চা।

লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে:
সম্প্রতি বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে জবা ফুলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এর ফলে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে। সেই সঙ্গে অনেক উপকারও পাওয়া যায়। ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে:
জবা ফুলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড আমাদের শরীরে ভিটামিন সি’র চাহিদা মেটায়। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। যে কারণে সর্দি-কাশির আর্য়ুবেদিক ওষুধ তৈরিতেও জবা ফুল ব্যবহার করা হয়।

পিরিয়ডের সমস্যা মেটায়:
মেয়েদের বিশেষ সময়ে যদি নিয়মিত জবা ফুল দিয়ে বানানো চা খাওয়া যায়, তাহলে পিরিয়ড ক্র্যাম্প এবং যন্ত্রণা অনেকটাই কমে। সেই সঙ্গে অন্যান্য অস্বস্তিও দূর হয়। প্রসঙ্গত, হরমোনাল ইমব্যালেন্স কমাতেও এই পানীয়টি দারুন কাজে আসে। তাই মেয়েরা যদি প্রতিদিন এই চা পান করতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার মেলে।

মানসিক অবসাদ কমায়:
নানা কারণে মনটা খারাপ হলে ঝটপট এক কাপ জবার চা বানিয়ে পান করুন। এমনটা করলে দেখবেন মুড একেবারে ফ্রেশ হয়ে যাবে। কারণ এতে উপস্থিত উপকারি ভিটামিন এবং মিনারেল স্নায়ুতন্ত্রে তৈরি হওয়া প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি অ্যাংজাইটি কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।

ওজন কমায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জবার চা খেলে শরীরে শর্করা এবং স্টার্চের শোষণ কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে। বেশ কয়েকজন গবেষক এ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে আরেকটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন। তাদের মতে জবা ফুলের চায়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরে অ্যামিলেস নামক একটি উপাদানের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।

যেভাবে বানাবেন:
জবা ফুলের পাঁপড়িগুলো ছিড়ে নিন সাবধানে। এবার মাঝখানের ডাঁটি ফেলে দিন। পানির মধ্যে দারচিনি বা এলাচ ফেলে ফুটিয়ে নিন। দশ মিনিট ফোটানোর পর রং বদলালে ছেঁকে নিন। মধু মিশিয়ে খান। গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারলে খুবই ভালো।

আর জবা ফুলের পাঁপড়ি সাতদিন রোদে ফেলে শুকিয়ে তা কাঁচের জারে সংরক্ষণ করেও রাখতে পারেন। তারপর চা তৈরির সময় মিলিয়ে নিতে পারেন।