Dhaka ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন প্রস্তাব দিলো ইসরায়েল

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:২৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৭ Time View

দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের গাজায় উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মিসরের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল আল কাহেরা নিউজ টিভি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।

গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কাছে ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা পৌঁছেছে। গোষ্ঠীটির মুখপাত্র আবু জুহরি জানিয়েছেন, তারা প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করছেন এবং ‘যত শিগগির সম্ভব’ এ ইস্যুতে নিজেদের সম্ভাবনা জানাবেন গোষ্ঠীর হাইকমান্ড।

তবে সেই প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে, তা পুরোপুরি অনিশ্চিত। কারণ প্রস্তাবনায় এই প্রথমবারের মতো ইসরায়েল হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রিকরণের দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামাস যদি নিজেদের নিরস্ত্র করতে সম্মত হয়, কেবল তাহলেই গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে গোষ্ঠীটির সঙ্গে পরবর্তী আলোচনার সেশন শুরু করবে ইসরায়েল।

হামাস এই শর্ত মানবে কি না— এখনও তা অনিশ্চিত। রয়টার্সকে এ ইস্যুতে আবু জুহরি বলেন, “হামাসের নিরস্ত্রিকরণ ইস্যুটির সঙ্গে অন্তত ১০ লাখ রেডলাইন যুক্ত। নতুন প্রস্তাব নিয়ে গোষ্ঠীর হাইকমান্ড আলোচনায় বসবেন। দেখা যাক কী সিন্ধান্ত নেন তারা।”

তিনি আরও বলেছেন যে হামাস যত শিগগির সম্ভব এ ইস্যুতে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে।

এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়েছিল হামাস। সেখানে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সব সেনা সরিয়ে নিতে সম্মত হয়, তাহলে হামাসও গাজায় বন্দি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করে দেবে।

তবে নিরাপত্তার অজুহাতে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়নি ইসরায়েল। ফলে জিম্মিরাও মুক্তি পায়নি।

তবে এবার হামাস শিগগিরই প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে আশা করছেন মধ্যস্থতাকারীরা। মিসরের এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “হামাস এখন খুব ভালো করেই জানে যে সময় কত মূল্যবান এবং আমার বিশ্বাস, তারা শিগগিরই এ প্রস্তাবে সাড়া দেবে।”

২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

আকস্মিক এই হামলার পর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। টানা ১৫ মাস অভিযান চালানোর পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তবে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও জিম্মিদের মুক্তি ইস্যুতে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

সূত্র : রয়টার্স

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন প্রস্তাব দিলো ইসরায়েল

Update Time : ০৪:২৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের গাজায় উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মিসরের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল আল কাহেরা নিউজ টিভি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।

গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কাছে ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা পৌঁছেছে। গোষ্ঠীটির মুখপাত্র আবু জুহরি জানিয়েছেন, তারা প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করছেন এবং ‘যত শিগগির সম্ভব’ এ ইস্যুতে নিজেদের সম্ভাবনা জানাবেন গোষ্ঠীর হাইকমান্ড।

তবে সেই প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে, তা পুরোপুরি অনিশ্চিত। কারণ প্রস্তাবনায় এই প্রথমবারের মতো ইসরায়েল হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রিকরণের দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামাস যদি নিজেদের নিরস্ত্র করতে সম্মত হয়, কেবল তাহলেই গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে গোষ্ঠীটির সঙ্গে পরবর্তী আলোচনার সেশন শুরু করবে ইসরায়েল।

হামাস এই শর্ত মানবে কি না— এখনও তা অনিশ্চিত। রয়টার্সকে এ ইস্যুতে আবু জুহরি বলেন, “হামাসের নিরস্ত্রিকরণ ইস্যুটির সঙ্গে অন্তত ১০ লাখ রেডলাইন যুক্ত। নতুন প্রস্তাব নিয়ে গোষ্ঠীর হাইকমান্ড আলোচনায় বসবেন। দেখা যাক কী সিন্ধান্ত নেন তারা।”

তিনি আরও বলেছেন যে হামাস যত শিগগির সম্ভব এ ইস্যুতে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে।

এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়েছিল হামাস। সেখানে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সব সেনা সরিয়ে নিতে সম্মত হয়, তাহলে হামাসও গাজায় বন্দি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করে দেবে।

তবে নিরাপত্তার অজুহাতে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়নি ইসরায়েল। ফলে জিম্মিরাও মুক্তি পায়নি।

তবে এবার হামাস শিগগিরই প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে আশা করছেন মধ্যস্থতাকারীরা। মিসরের এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “হামাস এখন খুব ভালো করেই জানে যে সময় কত মূল্যবান এবং আমার বিশ্বাস, তারা শিগগিরই এ প্রস্তাবে সাড়া দেবে।”

২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

আকস্মিক এই হামলার পর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। টানা ১৫ মাস অভিযান চালানোর পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তবে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও জিম্মিদের মুক্তি ইস্যুতে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

সূত্র : রয়টার্স