Dhaka ০৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেটের ঘোষণা আগামী নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে : আলী রীয়াজ ট্রাম্প-জিনপিং তৈরি করবে না, মোদিও ধাক্কা দিয়ে কিছু করতে পারবে না রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা কারিগরি শিক্ষার্থীদের জুলাই গণঅভ্যুত্থান যাতে ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ ইন্টারপোলে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন বিচার-সংস্কার-গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামছে এনসিপি তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন হুনানের গভর্নর

কবিগুরুর জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি : মহীতোষ গায়েন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১
  • ১৮৪ Time View

‘হে নূতন, দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ।

তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন সূর্যের মতন।’

নিজের জন্মদিন পঁচিশে বৈশাখকে এভাবেই ডাক দিয়েছিলেন কবিগুরু। মহাকালের যাত্রায় ব্যতিক্রমী এক ‘রবি’র কিরণে উজ্জ্বল এই পঁচিশে বৈশাখ। ১৮৬১ সালের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোয় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, গল্পকার, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ ও চিত্রশিল্পী। তবে প্রধানত তিনি কবি। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। বাঙালি সমাজে তার রচিত সংগীতের জনপ্রিয়তা এত বছর পরেও তুলনাহীনভাবে বাড়ছে। তিনি প্রায় ২ হাজার গান রচনা করেন। অধিকাংশ গানে সুরারোপ করেন। তার সমগ্র গান ‘গীতবিতান’ গ্রন্থে রয়েছে।

কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি আমাদের জাতীয় সংগীত। ভারতের জাতীয় সংগীতটিও কবির লেখা। জীবিতকালে তার প্রকাশিত মৌলিক কবিতাগ্রন্থ হচ্ছে ৫২টি, উপন্যাস ১৩, ছোটগল্পের বই ৯৫, প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬ এবং নাটকের বই ৩৮টি। কবির মৃত্যুর পর বিশ্বভারতী থেকে ৩৬ খণ্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া ১৯ খণ্ডের রয়েছে ‘রবীন্দ্র চিঠিপত্র’। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত কবির আঁকা চিত্রকর্মের সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৭৪টি চিত্রকর্ম শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত আছে। কবির প্রথম চিত্র প্রদর্শনী দক্ষিণ ফ্রান্সের শিল্পীদের উদ্যোগে প্যারিসের পিগাল আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাতা সারদা সুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুুরুষেরা খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী দীর্ঘ রোগভোগের পর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ১৩৪৮ সালের বাইশে শ্রাবণ (ইংরেজি-৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈতৃক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।

১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। ১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘গীতাঞ্জলী’। এই বইয়ের জন্য কবি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৯১ সাল থেকে পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নির্দেশে তিনি নিজেদের পরিবারের জমিদারি দেখা শুরু করেন।

এর মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, পাবনার শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসর এবং উড়িষ্যার জমিদারিগুলো। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান। কবি বিশ্বভ্রমণ করেন বারো বার। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেটের ঘোষণা

কবিগুরুর জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি : মহীতোষ গায়েন

Update Time : ০৫:১০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১

‘হে নূতন, দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ।

তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন সূর্যের মতন।’

নিজের জন্মদিন পঁচিশে বৈশাখকে এভাবেই ডাক দিয়েছিলেন কবিগুরু। মহাকালের যাত্রায় ব্যতিক্রমী এক ‘রবি’র কিরণে উজ্জ্বল এই পঁচিশে বৈশাখ। ১৮৬১ সালের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোয় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, গল্পকার, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ ও চিত্রশিল্পী। তবে প্রধানত তিনি কবি। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। বাঙালি সমাজে তার রচিত সংগীতের জনপ্রিয়তা এত বছর পরেও তুলনাহীনভাবে বাড়ছে। তিনি প্রায় ২ হাজার গান রচনা করেন। অধিকাংশ গানে সুরারোপ করেন। তার সমগ্র গান ‘গীতবিতান’ গ্রন্থে রয়েছে।

কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি আমাদের জাতীয় সংগীত। ভারতের জাতীয় সংগীতটিও কবির লেখা। জীবিতকালে তার প্রকাশিত মৌলিক কবিতাগ্রন্থ হচ্ছে ৫২টি, উপন্যাস ১৩, ছোটগল্পের বই ৯৫, প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬ এবং নাটকের বই ৩৮টি। কবির মৃত্যুর পর বিশ্বভারতী থেকে ৩৬ খণ্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া ১৯ খণ্ডের রয়েছে ‘রবীন্দ্র চিঠিপত্র’। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত কবির আঁকা চিত্রকর্মের সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৭৪টি চিত্রকর্ম শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত আছে। কবির প্রথম চিত্র প্রদর্শনী দক্ষিণ ফ্রান্সের শিল্পীদের উদ্যোগে প্যারিসের পিগাল আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাতা সারদা সুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুুরুষেরা খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী দীর্ঘ রোগভোগের পর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ১৩৪৮ সালের বাইশে শ্রাবণ (ইংরেজি-৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈতৃক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।

১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। ১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘গীতাঞ্জলী’। এই বইয়ের জন্য কবি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৯১ সাল থেকে পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নির্দেশে তিনি নিজেদের পরিবারের জমিদারি দেখা শুরু করেন।

এর মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, পাবনার শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসর এবং উড়িষ্যার জমিদারিগুলো। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান। কবি বিশ্বভ্রমণ করেন বারো বার। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন।