Dhaka ১২:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উন্নত রাষ্ট্র গড়তে যুবসমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • 31

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, যেকোনও দেশের উন্নতির জন্য কর্মক্ষম যুবশক্তিই প্রধান নিয়ামক। প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও দক্ষতায় শিক্ষিত যুবসমাজই পারে দেশকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে। কিন্তু তার জন্য সবচেয়ে জরুরি তরুণ সমাজকে মাদকমুক্ত রাখা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে “মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫” উপলক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, নারী, শিশু এবং কিশোরদের মাদক চোরাচালানের কাজে ব্যবহারের প্রবণতা উদ্বেগজনক। এতে তারা অপরাধে জড়াচ্ছে এবং মাদকাসক্ত হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় একসাথে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগস বা New Psychoactive Substances (NPS) এর আগমনে মাদক সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। এসব মাদক আইনের আওতায় এনে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৪’ ইতোমধ্যে প্রণীত হয়েছে। প্রথম ব্যাচের কর্মকর্তারা অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণও সম্পন্ন করেছে, যা অভিযান পরিচালনায় সহায়ক হবে।

উপদেষ্টা আরও জানান, সম্প্রতি এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি বিভাগীয় শহরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।

তিনি বলেন, মাদক সমস্যা শুধু আইন প্রয়োগ দিয়ে সমাধান সম্ভব নয়, এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকের চাহিদা হ্রাসে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

খোদা বখস চৌধুরী বলেন, মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব একটি পরিবারই ভালোভাবে বুঝতে পারে। সামাজিক প্রতিরোধের দিকটি জোরদার করতে হবে। সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, বাংলাদেশে মাদক উৎপাদন হয় না, এটি পাচার হয়ে আসে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।

আলোচনা সভায় মাদকবিরোধী ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। দিবস উপলক্ষে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থী, সেরা মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র এবং গবেষণায় অবদানের জন্য দুইটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেন উপদেষ্টা। তিনি ‘Annual Drug Report’ ও স্যুভেনিরের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং বেলুন উড়িয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরে মাদকবিরোধী স্টলও পরিদর্শন করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

উন্নত রাষ্ট্র গড়তে যুবসমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

Update Time : ০৮:০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, যেকোনও দেশের উন্নতির জন্য কর্মক্ষম যুবশক্তিই প্রধান নিয়ামক। প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও দক্ষতায় শিক্ষিত যুবসমাজই পারে দেশকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে। কিন্তু তার জন্য সবচেয়ে জরুরি তরুণ সমাজকে মাদকমুক্ত রাখা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে “মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫” উপলক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, নারী, শিশু এবং কিশোরদের মাদক চোরাচালানের কাজে ব্যবহারের প্রবণতা উদ্বেগজনক। এতে তারা অপরাধে জড়াচ্ছে এবং মাদকাসক্ত হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় একসাথে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগস বা New Psychoactive Substances (NPS) এর আগমনে মাদক সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। এসব মাদক আইনের আওতায় এনে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৪’ ইতোমধ্যে প্রণীত হয়েছে। প্রথম ব্যাচের কর্মকর্তারা অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণও সম্পন্ন করেছে, যা অভিযান পরিচালনায় সহায়ক হবে।

উপদেষ্টা আরও জানান, সম্প্রতি এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি বিভাগীয় শহরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ে পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।

তিনি বলেন, মাদক সমস্যা শুধু আইন প্রয়োগ দিয়ে সমাধান সম্ভব নয়, এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকের চাহিদা হ্রাসে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

খোদা বখস চৌধুরী বলেন, মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব একটি পরিবারই ভালোভাবে বুঝতে পারে। সামাজিক প্রতিরোধের দিকটি জোরদার করতে হবে। সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, বাংলাদেশে মাদক উৎপাদন হয় না, এটি পাচার হয়ে আসে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।

আলোচনা সভায় মাদকবিরোধী ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। দিবস উপলক্ষে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থী, সেরা মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র এবং গবেষণায় অবদানের জন্য দুইটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেন উপদেষ্টা। তিনি ‘Annual Drug Report’ ও স্যুভেনিরের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং বেলুন উড়িয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরে মাদকবিরোধী স্টলও পরিদর্শন করেন।