Dhaka ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউরোপের এক দেশ দখলের পাঁয়তারা ইসরায়েলিদের

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫০:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • 30

প্রতিদিনই মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজাকে সাক্ষাৎ নরকে পরিণত করার পর এবার ইউরোপের দিকেও নজর দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়ায় পরিণত হওয়া দেশটি। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনেদের সরিয়ে যেমন বস্তি স্থাপন করে যাচ্ছে ইসরায়েলিরা; তেমনি ইউরোপের দেশ সাইপ্রাসেও অনেক জমি চলে যাচ্ছে তাদের দখলে। 

সাইপ্রাসের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সাইপ্রাস মেইলের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই ভয়ংকর এক তথ্য।   

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইপ্রাসে গোপনে জমি কিনছেন ইসরায়েলিরা; ব্যাপক বিনিয়োগ করছেন আবাসন খাতে। এমনকি গোপনে কেনা ওইসব সম্পত্তি নিয়ে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ তৈরি করছেন ইসরায়েলিরা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও সেখানে গিয়ে থেকে এসেছেন বলে জানা গেছে। 

তথ্য উপাত্ত বলছে, গত পাঁচ বছরে সাইপ্রাসে আড়াই হাজারের বেশি সম্পত্তি কিনেছেন ইসরায়েলিরা। এরই মধ্যে ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ইসরায়েলিদের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫ হাজারে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘মিনি ইসরায়েল’ বানানো হচ্ছে সাইপ্রাসে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ তাদের।

মূলত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের সবচেয়ে বড় আশ্রয় শিবির হয়ে উঠেছিল ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস। সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে সংঘাতেও হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক সেখানে আশ্রয় নেন। গুঞ্জন আছে, কয়েকদিনের জন্য সাইপ্রাসে ছিলেন স্বয়ং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও। এবার গণমাধ্যমের খবর, সাইপ্রাসে গোপনে জমি কিনছেন ইসরায়েলিরা।
 
সাইপ্রাস মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করছেন সাইপ্রাসে ইসরায়েলি নাগরিকরা। এমন খবর সামনে আসতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির বামপন্থী রাজনৈতিক দল ‘আকেল’। তাদের দাবি, সেনা স্থাপনা, ঘাঁটি ও স্পর্শকাতর অবকাঠামোর কাছাকাছি জায়গায় ইচ্ছাকৃতভাবে জমি কেনা হচ্ছে।
 
এসব এস্টেট বা ভূসম্পত্তিকে সংরক্ষিত এলাকার মতো করে তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে কেবল ইসরায়েলিরাই প্রবেশ করতে পারবেন। স্থানীয়দের যাতায়াতের অনুমতি থাকবে না সেখানে।
 
আকেল আরও দাবি করেছে, এসব এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে জায়নবাদী স্কুল ও উপাসনালয়। যেটাকে সাংস্কৃতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের লক্ষণ হিসেবে দেখছে বামপন্থি রাজনৈতিক দলটি। ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোও বলছে, সাইপ্রাসকে ‘দ্বিতীয় ঘর’ হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন ইসরায়েলিরা।
 
সাইপ্রাসের সরকারি তথ্য বলছে, ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত লারনাকায় ১ হাজার ৪০০টির বেশি এবং লিমাসোলে ১ হাজার ১৫০টির বেশি সম্পত্তি কিনেছেন ইসরায়েলিরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘মিনি ইসরায়েল’ বানানো হচ্ছে এসব এলাকাকে।
 
এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টে দুটি বিল উত্থাপন করেছে আকেল। ‘গোল্ডেন ভিসা’ নীতিমালার সংস্কার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকদের জমি কেনার বিকল্প পদ্ধতিগুলো কঠোর নজরদারির আওতায় আনার দাবি দলটির। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে সাইপ্রাসের নিজস্ব ভূখণ্ড নিয়েই টানাপড়েন শুরু হবে বলে আশঙ্কা আকেলের।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

ইউরোপের এক দেশ দখলের পাঁয়তারা ইসরায়েলিদের

Update Time : ০১:৫০:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

প্রতিদিনই মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজাকে সাক্ষাৎ নরকে পরিণত করার পর এবার ইউরোপের দিকেও নজর দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়ায় পরিণত হওয়া দেশটি। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনেদের সরিয়ে যেমন বস্তি স্থাপন করে যাচ্ছে ইসরায়েলিরা; তেমনি ইউরোপের দেশ সাইপ্রাসেও অনেক জমি চলে যাচ্ছে তাদের দখলে। 

সাইপ্রাসের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সাইপ্রাস মেইলের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই ভয়ংকর এক তথ্য।   

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইপ্রাসে গোপনে জমি কিনছেন ইসরায়েলিরা; ব্যাপক বিনিয়োগ করছেন আবাসন খাতে। এমনকি গোপনে কেনা ওইসব সম্পত্তি নিয়ে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ তৈরি করছেন ইসরায়েলিরা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও সেখানে গিয়ে থেকে এসেছেন বলে জানা গেছে। 

তথ্য উপাত্ত বলছে, গত পাঁচ বছরে সাইপ্রাসে আড়াই হাজারের বেশি সম্পত্তি কিনেছেন ইসরায়েলিরা। এরই মধ্যে ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ইসরায়েলিদের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫ হাজারে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘মিনি ইসরায়েল’ বানানো হচ্ছে সাইপ্রাসে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ তাদের।

মূলত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের সবচেয়ে বড় আশ্রয় শিবির হয়ে উঠেছিল ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস। সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে সংঘাতেও হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক সেখানে আশ্রয় নেন। গুঞ্জন আছে, কয়েকদিনের জন্য সাইপ্রাসে ছিলেন স্বয়ং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও। এবার গণমাধ্যমের খবর, সাইপ্রাসে গোপনে জমি কিনছেন ইসরায়েলিরা।
 
সাইপ্রাস মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করছেন সাইপ্রাসে ইসরায়েলি নাগরিকরা। এমন খবর সামনে আসতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির বামপন্থী রাজনৈতিক দল ‘আকেল’। তাদের দাবি, সেনা স্থাপনা, ঘাঁটি ও স্পর্শকাতর অবকাঠামোর কাছাকাছি জায়গায় ইচ্ছাকৃতভাবে জমি কেনা হচ্ছে।
 
এসব এস্টেট বা ভূসম্পত্তিকে সংরক্ষিত এলাকার মতো করে তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে কেবল ইসরায়েলিরাই প্রবেশ করতে পারবেন। স্থানীয়দের যাতায়াতের অনুমতি থাকবে না সেখানে।
 
আকেল আরও দাবি করেছে, এসব এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে জায়নবাদী স্কুল ও উপাসনালয়। যেটাকে সাংস্কৃতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের লক্ষণ হিসেবে দেখছে বামপন্থি রাজনৈতিক দলটি। ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোও বলছে, সাইপ্রাসকে ‘দ্বিতীয় ঘর’ হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন ইসরায়েলিরা।
 
সাইপ্রাসের সরকারি তথ্য বলছে, ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত লারনাকায় ১ হাজার ৪০০টির বেশি এবং লিমাসোলে ১ হাজার ১৫০টির বেশি সম্পত্তি কিনেছেন ইসরায়েলিরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘মিনি ইসরায়েল’ বানানো হচ্ছে এসব এলাকাকে।
 
এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টে দুটি বিল উত্থাপন করেছে আকেল। ‘গোল্ডেন ভিসা’ নীতিমালার সংস্কার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকদের জমি কেনার বিকল্প পদ্ধতিগুলো কঠোর নজরদারির আওতায় আনার দাবি দলটির। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে সাইপ্রাসের নিজস্ব ভূখণ্ড নিয়েই টানাপড়েন শুরু হবে বলে আশঙ্কা আকেলের।