Dhaka ০৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফ্রিকাকে হেসেখেলে হারিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৩১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২
  • ৩৩ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক :

এবারের সিরিজে আমরা এমন কিছু করতে চাই, যা অতীতের কোনো বাংলাদেশ দল করেনি।’- টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

‘আমরা সিরিজ জিততে চাই। চেষ্টা করবো, এখন আর এসব বলার সময় নয়।’- টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

দক্ষিণ আফ্রিকায় গত ২০ বছরে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি বাংলাদেশ দল। তবুও এবারের সফরের আগে এভাবেই নিজেদের আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছিল বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক এবং কোচ।

নিজেদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অসাধারণ পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়লো টাইগাররা।

সেঞ্চুরিয়ানে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের পাড়ার দল বানিয়ে ৯ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়েছে তামিমের দল।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে সেঞ্চুরিয়ানে ৩৮ রানে জিতে ম্যাচ জেতার ইতিহাস নতুন করে লেখে টাইগাররা। সেই একই মাঠে তাসকিন আহমেদের বোলিং নৈপূন্যে ও অধিনায়ক তামিমের ব্যাট ভর করে সিরিজ জেতার নতুন ইতিহাস লিখলো টাইগাররা।

এদিন টসে জিতে আগে ব্যাট করা দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাসকিনের বোলিং তোপে মাত্র ১৫৪ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৬ ওভার ৩ বলে ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। অধিনায়ক তামিম ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।

১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝড়ো ব্যাটিং করেন তামিম। অপরপ্রান্তে ধীরস্থির ক্রিকেট খেলতে থাকেন লিটন। এই দুই ওপেনার ১২৭ রানের বড় জুটি গড়ে টাইগারদের জয় প্রায় নিশ্চিত করেন। লিটন পঞ্চাশ থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে ফিরলে ভাঙ্গে জুটিটি।

কেশভ মহারাজকে কাভারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টেম্বা বাভুমার তালুবন্দী হয়ে ৪৮ রানে ফেরেন লিটন।

এই ওপেনার ফিরলেও অপরপ্রান্তে দারুণ খেলতে থাকেন তামিম। সাকিবকে নিয়ে ২৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। তামিম ৫২ বলে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন। ছিলেন শতকের পথেও। তবে স্কোরবোর্ডে প্রয়োজনীয় রান ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। তার সঙ্গে সাকিব আল হাসান ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে সেঞ্চুরিয়ানে শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রোটিয়ান দুই ওপেনার জানেমান মালান ও কুইন্টন ডি কক উড়ন্ত সূচনা এনে দেয় দলকে। ৬ ওভারে রান তোলে ফেলে ৪০।

এরপরে মেহেদী মিরাজ ডি কককে ফেরালে রানের গতি কিছুটা কমে স্বাগতিকদের। ১২ রান করে ডি কক ফিরলেও একপ্রান্তে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে মালান।

অপরপ্রান্তে তিনে নামা কাইল ভেরেইনকে তাসকিন ফেরালে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। ওপেনার মালান ও চারে নামা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা সাবধানী ক্রিকেট খেলতে থাকেন। বাংলাদেশী বোলাররাও চাপে ফেলে এই দুই ব্যাটারকে।

বোলারদের চাপে শেষ পর্যন্ত ধরা দেন মালান ও বাভুমা। ওপেনার মালানকে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন। পরের ওভারে সাকিবের বলে এলবিডাব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন ২ রান করা বাভুমা।

এর দুই ওভার পরে ব্যাট হাতে ইনফর্ম ডুসেনকে ফেরান দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে আসা শরিফুল। ওভার দ্য উইকেট থেকে এই বাঁহাতি পেসারের লাফিয়ে ওঠা বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪ রান করা ডুসেন।

এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২৪ রানের জুটি গড়েন প্রিটোরিয়াস ও মিলার। যার মধ্যে ২০ রানই এসেছে প্রিটোরিয়াসের ব্যাট থেকে। ১টি করে চার ও ছয় হাঁকানো এই ব্যাটারকে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন তাসকিন।

এরপর এক ওভারে মিলার ও রাবাদাকে ফিরিয়ে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন এই পেসার। মিলার ফেরেন ১৬ রান করে। রাবাদাকে ৪ রানে ফিরিয়ে ৮ বছর পর আবার ফাইফারের স্বাদ পায় তাসকিন। তাসকিন ৮ ওভারেই ৫ উইকেট শিকার করেন।

এরপরে সাকিব লুঙ্গি এনগিডিকে শূন্য রানেই ফেরান। শেষদিকে কেশভ মহারাজ ২৮ রান করলে দেড়শো পেরোয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

তাসকিন ৯ ওভারে ৩৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন। সাকিব ২৪ রানে নেন ২টি উইকেট। এছাড়াও মিরাজ ২৭ রানে, শরিফুল ৩৭ রানে ১টি করে উইকেট শিকার করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

আফ্রিকাকে হেসেখেলে হারিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

Update Time : ০৪:৩১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২

স্পোর্টস ডেস্ক :

এবারের সিরিজে আমরা এমন কিছু করতে চাই, যা অতীতের কোনো বাংলাদেশ দল করেনি।’- টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

‘আমরা সিরিজ জিততে চাই। চেষ্টা করবো, এখন আর এসব বলার সময় নয়।’- টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

দক্ষিণ আফ্রিকায় গত ২০ বছরে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি বাংলাদেশ দল। তবুও এবারের সফরের আগে এভাবেই নিজেদের আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছিল বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক এবং কোচ।

নিজেদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অসাধারণ পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়লো টাইগাররা।

সেঞ্চুরিয়ানে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের পাড়ার দল বানিয়ে ৯ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়েছে তামিমের দল।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে সেঞ্চুরিয়ানে ৩৮ রানে জিতে ম্যাচ জেতার ইতিহাস নতুন করে লেখে টাইগাররা। সেই একই মাঠে তাসকিন আহমেদের বোলিং নৈপূন্যে ও অধিনায়ক তামিমের ব্যাট ভর করে সিরিজ জেতার নতুন ইতিহাস লিখলো টাইগাররা।

এদিন টসে জিতে আগে ব্যাট করা দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাসকিনের বোলিং তোপে মাত্র ১৫৪ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৬ ওভার ৩ বলে ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। অধিনায়ক তামিম ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।

১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝড়ো ব্যাটিং করেন তামিম। অপরপ্রান্তে ধীরস্থির ক্রিকেট খেলতে থাকেন লিটন। এই দুই ওপেনার ১২৭ রানের বড় জুটি গড়ে টাইগারদের জয় প্রায় নিশ্চিত করেন। লিটন পঞ্চাশ থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে আউট হয়ে ফিরলে ভাঙ্গে জুটিটি।

কেশভ মহারাজকে কাভারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টেম্বা বাভুমার তালুবন্দী হয়ে ৪৮ রানে ফেরেন লিটন।

এই ওপেনার ফিরলেও অপরপ্রান্তে দারুণ খেলতে থাকেন তামিম। সাকিবকে নিয়ে ২৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। তামিম ৫২ বলে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন। ছিলেন শতকের পথেও। তবে স্কোরবোর্ডে প্রয়োজনীয় রান ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। তার সঙ্গে সাকিব আল হাসান ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে সেঞ্চুরিয়ানে শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রোটিয়ান দুই ওপেনার জানেমান মালান ও কুইন্টন ডি কক উড়ন্ত সূচনা এনে দেয় দলকে। ৬ ওভারে রান তোলে ফেলে ৪০।

এরপরে মেহেদী মিরাজ ডি কককে ফেরালে রানের গতি কিছুটা কমে স্বাগতিকদের। ১২ রান করে ডি কক ফিরলেও একপ্রান্তে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে মালান।

অপরপ্রান্তে তিনে নামা কাইল ভেরেইনকে তাসকিন ফেরালে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। ওপেনার মালান ও চারে নামা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা সাবধানী ক্রিকেট খেলতে থাকেন। বাংলাদেশী বোলাররাও চাপে ফেলে এই দুই ব্যাটারকে।

বোলারদের চাপে শেষ পর্যন্ত ধরা দেন মালান ও বাভুমা। ওপেনার মালানকে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন। পরের ওভারে সাকিবের বলে এলবিডাব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন ২ রান করা বাভুমা।

এর দুই ওভার পরে ব্যাট হাতে ইনফর্ম ডুসেনকে ফেরান দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে আসা শরিফুল। ওভার দ্য উইকেট থেকে এই বাঁহাতি পেসারের লাফিয়ে ওঠা বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪ রান করা ডুসেন।

এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২৪ রানের জুটি গড়েন প্রিটোরিয়াস ও মিলার। যার মধ্যে ২০ রানই এসেছে প্রিটোরিয়াসের ব্যাট থেকে। ১টি করে চার ও ছয় হাঁকানো এই ব্যাটারকে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন তাসকিন।

এরপর এক ওভারে মিলার ও রাবাদাকে ফিরিয়ে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন এই পেসার। মিলার ফেরেন ১৬ রান করে। রাবাদাকে ৪ রানে ফিরিয়ে ৮ বছর পর আবার ফাইফারের স্বাদ পায় তাসকিন। তাসকিন ৮ ওভারেই ৫ উইকেট শিকার করেন।

এরপরে সাকিব লুঙ্গি এনগিডিকে শূন্য রানেই ফেরান। শেষদিকে কেশভ মহারাজ ২৮ রান করলে দেড়শো পেরোয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

তাসকিন ৯ ওভারে ৩৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন। সাকিব ২৪ রানে নেন ২টি উইকেট। এছাড়াও মিরাজ ২৭ রানে, শরিফুল ৩৭ রানে ১টি করে উইকেট শিকার করেন।