Dhaka ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগামী ২৮ আগস্ট খুলছে মহিলা সমিতি মঞ্চ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২০
  • ১১৯ Time View

করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় ৫ মাস বন্ধ ছিল সবকিছু। আগস্ট মাস থেকে আবার কর্ম চাঞ্চল্যতা ফিরে আসছে। খোলা হয়েছে অফিস-আদালত। তেমনি বিনোদন কেন্দ্রগুলিও এতদিন বন্ধ ছিল। ফের খুলতে শুরু করেছে সবকিছু। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর মোমেনা চৌধুরীর ‘লাল জমিন’ নাটক নিয়ে খুলছে মহিলা সমিতি মঞ্চ। 

আগামী ২৮ আগস্ট লাল জমিন নাটকের মধ্য দিয়ে আবার জ্বলবে মহিলা সমিতির মঞ্চের আলো। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মঞ্চায়িত হবে মান্নান হিরা রচিত ও সুদীপ চক্রবর্তী নির্দেশিত এই নাটকটি। এতে একক অভিনয় করেছেন মোমেনা চৌধুরী। নাটকটি ২০০ বারের ওপরে মঞ্চায়িত হয়েছে।

নাটকের বিষয়: মুক্তিযুদ্ধ। গল্পে দেখা যায়, মোমেনা তার অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক সংলাপ বলে যান আর দর্শকদের চোখের কোণে পানি জমতে শুরু করে। একক অভিনয়। মঞ্চ নাটকের এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

নাটকের শুরুর দিকে মোমেনা ধীরস্থির থাকলেও খানিক পরে পাল্টে যায় তার অভিনয়ের ধরণ। তখন ফুটে উঠে মঞ্চ মাতানোর মুন্সিয়ানা।

১৪ বছর বয়সী কিশোরী। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তার জীবন। দুরন্ত বালিকা জীবন, বর্ণিল কৈশোর, দুঃসহ বয়ঃসন্ধিকাল। মুহূর্তেই এক কাল থেকে আরেককালে চলে যান তিনি, সঙ্গে নিয়ে যান যেন দর্শককেও। মঞ্চই বাড়ির উঠোন, খড় ছিটানো, এক্কাদোক্কা খেলা, ফসল মলনের জায়গা, পদ্ম-শাপলা ফোটা বিল। দর্শকের সামনে পুরো মঞ্চটাই যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। মোমেনার অভিনয় ধীরে ধীরে এক অনন্য উচ্চতায় উঠতে শুরু করে।

হলভর্তি সব দর্শক স্তম্ভিত হয়ে মোমেনার অভিনয় দেখে। নিশ্চুপ মুগ্ধতায়। নাটকের ঠিক মাঝামাঝিতে দেখা যায় খানখান হয়ে ভেঙে পড়া মোমেনার স্বপ্ন।

শেষে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধে পাওয়া বাংলাদেশ যেন লুটেরাদের রাজ্য। অবাধ শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা আর প্রতারণার অভয়ারণ্য। পরিচালক মান্নান হীরা দর্শককে নিয়ে যান আরও অনেক গহীনে। তা না হলে কি প্রত্যেক দর্শকের চোখেই অশ্রু ঝরে?

২০১১ সালে শূন্যন নামের রেপার্টরি দল মঞ্চে আনে মান্নান হীরার লেখা নাটক ‘লাল জমিন’, নির্দেশনার দায়িত্ব পান সুদীপ চক্রবর্তী। মোমেনা চৌধুরীর আত্মপ্রকাশ ঘটে একক অভিনেত্রী হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় চৌদ্দ ছুঁই-ছুঁই এক কিশোরীকে নিয়ে নাটকের গল্প। তার মুক্তিযুদ্ধ, জীবনযুদ্ধ নিয়ে এগিয়ে চলে কাহিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরীর জীবনে ঘটে যায় ভয়ানক সব ঘটনা। কিশোরীর সাদা ধবধবে জমিন-জীবন নয় মাসে কী করে একটা ‘লাল জমিন’ হয়ে ওঠে, তা নিয়েই এই নাটক।

এই নাটক সম্পর্কে মোমেনা চৌধুরী বলেন, ‘লাল জমিন যেদিন থেকে শুরু করেছি সেদিন থেকে আজ অবধি আমার চিন্তা-চেতনার রাজ দখল করে আছে নাটকটিই। এটি এখন আমার জীবনেরই অংশ। ’

এর সাফল্য, স্বপ্ন প্রসঙ্গে মোমেনা চৌধুরী বলেন, ‘লালজমিনকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য আমার পরিবারের প্রত্যেক সদস্য যে ছাড় দিয়েছে তাতে কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি। তারা ছাড় না দিলে লাল জমিনকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না। দেশ-বিদেশে অনেকেই এরই মধ্যে লাল জমিন দেখেছেন।’

নিজের স্বপ্নের কথা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এটি মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্যপ্রকাশ, তাই আমার স্বপ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালজমিন দেখানোর। আমার বিশ্বাস এ স্বপ্ন একদিন নিশ্চয়ই পূরণ হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

আগামী ২৮ আগস্ট খুলছে মহিলা সমিতি মঞ্চ

Update Time : ০৪:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২০

করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় ৫ মাস বন্ধ ছিল সবকিছু। আগস্ট মাস থেকে আবার কর্ম চাঞ্চল্যতা ফিরে আসছে। খোলা হয়েছে অফিস-আদালত। তেমনি বিনোদন কেন্দ্রগুলিও এতদিন বন্ধ ছিল। ফের খুলতে শুরু করেছে সবকিছু। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর মোমেনা চৌধুরীর ‘লাল জমিন’ নাটক নিয়ে খুলছে মহিলা সমিতি মঞ্চ। 

আগামী ২৮ আগস্ট লাল জমিন নাটকের মধ্য দিয়ে আবার জ্বলবে মহিলা সমিতির মঞ্চের আলো। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মঞ্চায়িত হবে মান্নান হিরা রচিত ও সুদীপ চক্রবর্তী নির্দেশিত এই নাটকটি। এতে একক অভিনয় করেছেন মোমেনা চৌধুরী। নাটকটি ২০০ বারের ওপরে মঞ্চায়িত হয়েছে।

নাটকের বিষয়: মুক্তিযুদ্ধ। গল্পে দেখা যায়, মোমেনা তার অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক সংলাপ বলে যান আর দর্শকদের চোখের কোণে পানি জমতে শুরু করে। একক অভিনয়। মঞ্চ নাটকের এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

নাটকের শুরুর দিকে মোমেনা ধীরস্থির থাকলেও খানিক পরে পাল্টে যায় তার অভিনয়ের ধরণ। তখন ফুটে উঠে মঞ্চ মাতানোর মুন্সিয়ানা।

১৪ বছর বয়সী কিশোরী। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তার জীবন। দুরন্ত বালিকা জীবন, বর্ণিল কৈশোর, দুঃসহ বয়ঃসন্ধিকাল। মুহূর্তেই এক কাল থেকে আরেককালে চলে যান তিনি, সঙ্গে নিয়ে যান যেন দর্শককেও। মঞ্চই বাড়ির উঠোন, খড় ছিটানো, এক্কাদোক্কা খেলা, ফসল মলনের জায়গা, পদ্ম-শাপলা ফোটা বিল। দর্শকের সামনে পুরো মঞ্চটাই যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। মোমেনার অভিনয় ধীরে ধীরে এক অনন্য উচ্চতায় উঠতে শুরু করে।

হলভর্তি সব দর্শক স্তম্ভিত হয়ে মোমেনার অভিনয় দেখে। নিশ্চুপ মুগ্ধতায়। নাটকের ঠিক মাঝামাঝিতে দেখা যায় খানখান হয়ে ভেঙে পড়া মোমেনার স্বপ্ন।

শেষে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধে পাওয়া বাংলাদেশ যেন লুটেরাদের রাজ্য। অবাধ শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা আর প্রতারণার অভয়ারণ্য। পরিচালক মান্নান হীরা দর্শককে নিয়ে যান আরও অনেক গহীনে। তা না হলে কি প্রত্যেক দর্শকের চোখেই অশ্রু ঝরে?

২০১১ সালে শূন্যন নামের রেপার্টরি দল মঞ্চে আনে মান্নান হীরার লেখা নাটক ‘লাল জমিন’, নির্দেশনার দায়িত্ব পান সুদীপ চক্রবর্তী। মোমেনা চৌধুরীর আত্মপ্রকাশ ঘটে একক অভিনেত্রী হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় চৌদ্দ ছুঁই-ছুঁই এক কিশোরীকে নিয়ে নাটকের গল্প। তার মুক্তিযুদ্ধ, জীবনযুদ্ধ নিয়ে এগিয়ে চলে কাহিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরীর জীবনে ঘটে যায় ভয়ানক সব ঘটনা। কিশোরীর সাদা ধবধবে জমিন-জীবন নয় মাসে কী করে একটা ‘লাল জমিন’ হয়ে ওঠে, তা নিয়েই এই নাটক।

এই নাটক সম্পর্কে মোমেনা চৌধুরী বলেন, ‘লাল জমিন যেদিন থেকে শুরু করেছি সেদিন থেকে আজ অবধি আমার চিন্তা-চেতনার রাজ দখল করে আছে নাটকটিই। এটি এখন আমার জীবনেরই অংশ। ’

এর সাফল্য, স্বপ্ন প্রসঙ্গে মোমেনা চৌধুরী বলেন, ‘লালজমিনকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য আমার পরিবারের প্রত্যেক সদস্য যে ছাড় দিয়েছে তাতে কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি। তারা ছাড় না দিলে লাল জমিনকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না। দেশ-বিদেশে অনেকেই এরই মধ্যে লাল জমিন দেখেছেন।’

নিজের স্বপ্নের কথা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এটি মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্যপ্রকাশ, তাই আমার স্বপ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালজমিন দেখানোর। আমার বিশ্বাস এ স্বপ্ন একদিন নিশ্চয়ই পূরণ হবে।’