আশরাফুল ইসলাম সুমন, সিংড়া,নাটোর:

আর কত বয়স হলে সরকারি সুবিধা পাবেন আমার মা। বয়স তো কম হয়নি।এখন ঠিকমত চলতেও পারে না। অথচ একটা বয়স্ক ভাতা কার্ড, বিধবা ভাতা কার্ড বা সরকারি যে কোনো সুবিধা আজও পাইনি। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে গেলেও কোনো লাভ হয়নি। দেখবো, শুধু এটুকু বলেই কাজ শেষ এলাকার জনপ্রতিনিধিদের।

এভাবেই ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের বিশ্বাসপুর চালাপাড়া গ্রামের শ্রীমতি মিনি’র ছেলে পলাশ কুজুর।

তিনি বলেন, মা এখন পায়ের হাটুর ওপর ভর করে চলাফেরা করেন। গ্রামাঞ্চলে প্রচণ্ড শীত। তবুও একটা কম্বলও জোটেনি। আমরা অভাবি মানুষ। ভোটের সময় নানা কথা বললেও বাস্তবে কথা রাখেন না এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। সরকারি সুবিধা পায় বড় লোকেরা, কিন্তু আমাদের ভাগ্যে জোটে না।

শ্রীমতি মিনি’র বয়স এখন ৬৩ বছর। আট বছর আগে স্বামী পুন্নু কুজুর মারা গেছেন। দুই ছেলে এক মেয়ের জননী শ্রীমতি মিনি। বর্তমানে খুব অসুস্থ।

শ্রীমতি মিনি বলেন, আমার দুই ছেলে থেকেও নেই তারা তাদের বউ ছেলে নিয়ে আলাদা জায়গায় বসবাস করে। গরিব মানুষ স্বামীও মারা গেছেন। বেঁচে আছি একভাবে। শীতে একটি কম্বল হলে ভালোভাবে শীতটা কাটাতে পারতাম। এখন আর ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারিনা কষ্ট হয়।

শ্রীমতি মিনি’র নাতি সুবাস চন্দ্র জানান, ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী দাদির বয়স ৬৩ বছর। কিন্ত তার বয়স আসলে আরো অনেক বেশি। সব সময় তিনি নানা রকম রোগে-শোকে ভোগেন। তার জন্য ওষুধ কেনা লাগে। আবার মাঝে মাঝে একটু ভালো কিছু খাওয়ার আবদার করেন। কিন্তু অর্থাভাবে সব সময় কিনে দিতে পারি না। এজন্য খুব খারাপ লাগে। তার যদি একটা ভাতা কার্ড থাকতো তাহলে অন্তত প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে দিতে পারতাম।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা আর স্বজনপ্রীতির কারণে এই মানুষটি বয়স্ক ভাতা পাননি এবং আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে শ্রীমতি মিনি’র পড়নের কাপড়ও ঠিক মত জোটে না। মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে বলেও এতদিনে একটি বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা অথবা সরকারি কোনো সুবিধা জোটেনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, শ্রীমতি মিনি’র এমন দুরবস্থার বিষয়ে আমাকে কেউ কখনো কিছু জানায়নি। এছাড়া সরকারি কোনো কার্ডের বিষয়েও বলেনি। স্হানীয় একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে জেনেছি এখন যেহেতু জেনেছি তখন তাকে সরকারি সহযোগিতার বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে