দেশেই তৈরি হবে পদ্মা সেতুর রেল ট্র্যাকের সকল স্লিপার। কম সময়ে তৈরি ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং নির্মাণ ব্যয় কমাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্থাপন করা হয়েছে স্বয়ংক্রীয় স্লিপার উৎপাদন কারখানা।
প্রতিদিন ৫শ’ পিস উৎপাদন সক্ষমতার কারখানাটি ৬ মাসের মধ্যে সাড়ে তিন লাখ স্লিপার সরবরাহ করবে।
কাটা হচ্ছে রড, তৈরি হচ্ছে খাঁচা। আরেক দিকে প্রস্তত করা হচ্ছে কনক্রিট ও সিমেন্টের মশলা। নিদিষ্ট মাপের ছাঁচে ফেলে যান্ত্রিক কম্পনে নিশ্চিত করা হচ্ছে গাঁথুনি ঠিক আছে কিনা।
এর পর অটোমেটিক লাইন এ্যাসেম্বিলিং-এ তৈরি হচ্ছে, প্রি স্টেজ কনক্রিট স্লিপার। কারখানার ভেতরেই মান নিয়ন্ত্রণের সব ধরনের আয়োজন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অত্যাধুনিক এই স্লিপার কারখানায় তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতুর রেল লাইনের জন্যে ৬ ক্যাটাগরির স্লিপার।
ভাঙ্গা স্লিপার কারখানার সেফটি সুপারভাইজার মাহমুদ হাসান কামরান বলেন, আমাদের কাছে এটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। আমরা খুব দ্রুত সময়ে এই কাজটা শেষ করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছি।
শুধু মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রয়োজন ৮০ হাজার পিস। আর এই প্রকল্পে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ১শ’ ৭০ কিলোমিটারে প্রয়োজন সাড়ে তিন লাখ পিস স্লিপার। সবগুলো তৈরিতে সময় লাগবে ৫ থেকে ৬ মাস।
রেলওয়ের ট্র্যাক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাই বলেন, পদ্মা সেতুতে যে স্লিপার লাগবে সেগুলোও এখানে তৈরি হবে। শুধু ধরে নিয়ে যেয়ে বসাবো, বসাতে বেশি সময় লাগবে না।
পদ্মা রেল লিংক প্রজেক্ট ম্যানেজার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশনের জন্য মোট ৮০ হাজারের মতো স্লিপারের প্রয়োজন হবে। তার মধ্যে ২৩ হাজার ৭শ’ স্লিপার ব্লালান্সলেস ট্রাকের জন্য ব্যবহার করা হবে। এটা পদ্মা সেতু ও দুই পাশের ভায়াড্যাকের জন্য।
স্লিপার তৈরি করে আপাতত রাখা হচ্ছে প্রশস্ত ইয়ার্ডে। মান নিয়ন্ত্রণের দিক নিশ্চিত করতে স্লিপারের নমুনা পাঠানো হয়েছে চীনে। পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল আসবে বলে আশাবাদী প্রকল্প ব্যবস্থাপক।
বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম আরও বলেন, স্লিপারের কারখানাটি অত্যন্ত আধুনিক এবং ইম্পার্ন্টেড টেস্টের বিষয়টিও এখানে আছে। দুটি টেস্ট আছে যা বাংলাদেশে করা সম্ভব নয়, সেই টেস্টের জন্য ইতিমধ্যে চীনে পাঠানো হয়েছে।
কাজ শুরু হলে প্রতিদিনই কমপক্ষে ১ কিলোমিটার রেল লাইনে স্লিপার বসানোর প্রস্তুতি আছে বলেও জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।