এ সময় বেশিরভাগ মানুষই বাড়ি থেকে কাজ করছেন। এতে অবসাদ বাড়ছে। অকারণেই মন খারাপ হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন করোনা আবহে মন সতেজ রাখা অত্যান্ত জরুরি। মানুসিক স্বাস্থ্য যদি ভাল থাকে যেকোন রকম বিপদে লড়াই করার মতো মনের জোর পাওয়া যাবে। তাই সামগ্রিকভাবে মনকে সতেজ রাখতে বাড়িতে নিয়মিত অভ্যাস করুন এই যোগ ব্যায়াম। এই ব্যায়ামটি চেয়ারে বসে সহজেই করতে পারবেন।

হাঁটা চলা, বসে থাকা-সহ সব কাজকর্মেই আমাদের মেরুদণ্ডের ওপর চাপ পড়ে। তাই নিয়ম করে শিরদাঁড়ার কিছু আসন করা দরকার। সামনে ঝুঁকে আসন অর্থাৎ ফরোয়ার্ড ফোল্ড আসন অভ্যাস করলে মেরুদণ্ডের জড়তা কাটে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। পিঠ, কোমর ও ঘাড়ে ব্যথার ঝুঁকি কমে। প্রচলিত পদ্ধতিতে দাঁড়িয়ে আসনটি অভ্যাস করা হয়। যাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে আসন করা সম্ভব নয়, তাঁরা চেয়ারে বসে আসনটি অভ্যাস করবেন। চেয়ার যোগ বালাসন ও পশ্চিমোত্তাসনের সমন্বয়ে ফরোয়ার্ড ফোল্ড আসনটি করা হয়।

কীভাবে করবেন:

• টানটান করে পা ঝুলিয়ে চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। দুই হাত থাকুক কোলের ওপর। চোখ বন্ধ করে ঘাড়, পিঠ ও মাথা সোজা করে বসুন। এটিই হল আসন শুরুর অবস্থান।

• দুই হাত ঊরুর ওপর রেখে গভীর ভাবে শ্বাস নিন। এ বারে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে নিতম্ব থেকে মাথা-সহ সমস্ত শরীর সামনের দিকে হাঁটু অবধি ঝোঁকাতে হবে।

• এ বারে দুই হাত পায়ের মাঝখানে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। আবার ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কনুই ও বাম হাত দিয়ে ডান হাতের কনুই ধরে থাকতে পারেন। যেমন সুবিধে হবে সেই ভঙ্গিমায় মাথা হাঁটু পর্যন্ত ঝোঁকান।

• এই অবস্থানে স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস নিতে মনে মনে ১০ পর্যন্ত গুনতে হবে।

• এ বারে শ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে সোজা হয়ে বসুন। দুই হাত রাখুন ঊরুর ওপর।

• এক রাউন্ড হল। ৫–৭ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।

• মনে রাখবেন, আসনটি শুরুর সময় যেটুকু সম্ভব ততটুকুই সামনে ঝুঁকবেন। শুরুতে মেরুদণ্ডের স্টিফনেসের জন্যে ঝুঁকতে অসুবিধে হলেও ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।

• আসন অভ্যাস শেষ হলে শুরুর অবস্থানে ফিরে কিছু ক্ষণ চোখ বন্ধ করে বসুন। স্বাভাবিক শ্বাস নিয়ে অনুভব করুন কেমন বোধ করছেন।

সতর্কতা:

পিঠে, কোমরে বা ঘাড়ে খুব ব্যথা বা স্লিপ ডিস্ক থাকলে এবং অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ থাকলে এই আসনটি অভ্যাস করা অনুচিত।

যাঁরা মাটিতে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে আসন অভ্যাস করতে অপারগ, তাঁদের জন্যে সিটেড ফরোয়ার্ড ফোল্ড চেয়ার যোগা অত্যন্ত উপযোগী। সামনে ঝোঁকার জন্য পিঠ, ঘাড়, মাথা-সহ সমস্ত শিরদাঁড়ার টেনশন অনেকটা কমে। পেটের পেশীতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। নীচের দিকে ঝুঁকলে মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে যাওয়ায় মস্তিষ্কের আরাম হয় এবং বেঁচে থাকার আনন্দ বাড়ে। এই আসনটি মূলত সমগ্র মেরুদণ্ডকে উজ্জীবিত করে সামগ্রিক ভাবে চনমনে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল থাকতে সাহায্য করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে