পবিত্র কুরআন শতাব্দীর পর শতাব্দী জীবন ও জগৎ সম্পর্কে কোটি কোটি মানুষের অন্তর্দৃষ্টি খুলে দিয়েছে, বদলে দিয়েছে ভেতর থেকে, খুলে দিয়েছে তাদের সম্ভাবনার দ্বার, দিয়েছে প্রশান্ত ও পরিতৃপ্ত জীবন। এই জীবনের সঙ্গে মৃত্যুও যে জড়িত তাও উল্লেখ করেছেন।

‘আল্লাহই তোমাদের জীবন দান করেছেন। তিনিই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন। আবার তিনিই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করবেন। তারপরও মানুষ অতি-অকৃতজ্ঞ!’ (সূরা হজ, আয়াত ৬৬)

‘নিশ্চয়ই কখন কেয়ামত হবে তা শুধু আল্লাহই জানেন। তিনি মেঘ থেকে বৃষ্টিবর্ষণ করেন। তিনি জানেন জরায়ুতে কী আছে। অথচ কেউই জানে না আগামীকাল তার জন্যে কী অপেক্ষা করছে এবং কেউ জানে না কোথায় তার মৃত্যু হবে। শুধু আল্লাহই সর্বজ্ঞ, সব বিষয়ে অবহিত।’ (সূরা লোকমান, আয়াত ৩৪)

‘দূরাচারীরা কি মনে করে যে, তাদের জীবন ও মৃত্যু এবং বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলদের জীবন ও মৃত্যু একইরকম হবে? কত ভ্রান্ত ধারণা ওদের!’ (সূরা জাসিয়া, আয়াত ২১)

মৃত্যু অবধারিত:

‘নিশ্চয়ই মৃত্যুর সময় নির্ধারিত। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো মৃত্যু হতে পারে না। কেউ পার্থিব পুরস্কারের জন্যে কাজ করলে তাকে তার পুরস্কার ইহকালে দান করবো। আর যদি কেউ পরকালের জন্যে কাজ করে তবে তার পুরস্কার সে পরকালে পাবে। শোকরগোজার বান্দাদের কাজের ফল আমি নিশ্চয়ই দেবো।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৫)

‘সত্যের পথে তোমরা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করো বা নিহত হও, তোমরা আল্লাহর কাছেই সমবেত হবে।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৫৮)

‘প্রতিটি প্রাণকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। মহাবিচার দিবসে তোমাদের সবাইকে কর্মফল পুরোপুরিই দেয়া হবে। সফল মানুষ হবে সে-ই, যাকে লেলিহান আগুন থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে দাখিল করা হবে। আর শুধু পার্থিব জীবন তো এক মরীচিকাপূর্ণ ভোগ-বিভ্রম ছাড়া কিছুই নয়।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৮৫)

‘হে নবী! তোমার পূর্বেও আমি কোন মানুষকে অমরত্ব দান করিনি। তোমার মৃত্যু হলে ওরা কি চিরকাল বেঁচে থাকবে?’ (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩৪)

‘প্রত্যেক প্রাণই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আমি তোমাদের ভালো ও খারাপ অবস্থা দিয়ে পরীক্ষা করি। আর আমারই কাছে তোমাদের ফিরে আসতে হবে।’ (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩৫)

‘আল্লাহ মৃত্যু এলে বা ঘুমের সময় আত্মাকে তুলে নেন। তারপর যার মৃত্যু অবধারিত তার আত্মা রেখে দেন। আর অন্যদের আত্মা নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ফিরিয়ে দেন। সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগকারীদের জন্যে এর মধ্যে শিক্ষণীয় নিদর্শন রয়েছে!’ (সূরা জুমার, আয়াত ৪২)

‘হে মানুষ! আমিই জীবন দান করি। আমিই মৃত্যু ঘটাই। আমার কাছেই সবাইকে ফিরে আসতে হবে। যেদিন জমিন বিদীর্ণ হবে এবং মৃত্যুরা উত্থিত হয়ে ছুটতে থাকবে, তখন তাদের সমবেত করা খুব সহজ একটি কাজ।’ (সূরা কাফ, আয়াত ৪৩-৪৪)

‘আমি বিধান দিয়েছি যে, মৃত্যু সব সময় তোমাদের মাঝে অবস্থান করবে। আর তোমাদের অস্তিত্বের প্রকৃতি পরিবর্তন বা তোমাদের জানা নেই, এমন আকৃতিতে তোমাদের সৃষ্টি করা থেকে আমাকে বিরত রাখার শক্তি কারো নেই।’ (সূরা ওয়াকিয়া, আয়াত ৬০-৬১)

‘হে নবী ওদের বলুন, যে মৃত্যু থেকে তোমরা পালাতে চাচ্ছ, তোমাদেরকে সে মৃত্যুর মুখোমুখি হতেই হবে। শেষ পর্যন্ত তোমাদেরকে হাজির করা হবে দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহর কাছে। জীবদ্দশায় যা করেছ, তা তোমরা তখন পুরোপুরি জানতে ও উপলব্ধি করতে পারবে।’ (সূরা জুমআ, আয়াত ৮)

মৃত্যু শয্যায় তওবা:
‘সারাজীবন অন্যায় করে মৃত্যু শয্যায় এসে যারা বলে, আমি তওবা করলাম, তাদের তওবা কোন কাজে আসবে না। আর সত্য অস্বীকারকারী হিসেবেই যারা মৃত্যুবরণ করে, তাদের জন্যেও তওবা নয়। তাদের জন্যে আমি নিদারুণ শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছি।’ (সূরা নিসা, আয়াত ১৮)

মৃত্যুর পর পুনরুত্থান:
‘যারা মুক্তমন নিয়ে শোনে, তারাই সত্যের ডাকে সাড়া দেয়। মহাবিচার দিবসে আল্লাহ মৃতদের পুনর্জীবিত করবেন। তারপর তারা তাঁর কাছেই ফিরে যাবে।’ (সূরা আনজাম, আয়াত ৩৬)

‘তিনিই নিষ্প্রাণ থেকে প্রাণের উন্মেষ ঘটান আবার প্রাণকে করেন নিষ্প্রাণ। ধূসর জমিনকে তিনিই সজীব করে তোলেন। এমনিভাবে তোমাদেরও মৃত অবস্থা থেকে পুনরুত্থিত করা হবে।’ (সূরা রুম, আয়াত ১৯)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে