বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম লেগে ঘরের মাঠ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কাতারের বিপক্ষে ভালো খেলেও ২-০ গোলে হেরেছিল জেমি ডে’র শিষ্যরা। তাই ফিরতি লেগে কাতারকে রুখে দেওয়ার স্বপ্ন ছিল জামাল ভূঁইয়াদের।

কিন্তু গুনে গুনে ৫ গোল হজম করতে হয়েছে তাদের, এর বিপরীতে একটি গোলও দিতে পারেনি জামাল-ইব্রাহিমরা।

শুক্রবার আব্দুল্লাহ বিন খলিফা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হওয়া ম্যাচে রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়ে খোলসবন্দি হয়ে পরে জামাল-ইব্রাহিমরা। সেখান থেকে আর বের হতে পারেনি তারা। তাতে ভালো কোনো সুযোগও তৈরি করতে পারেনি। কাতারের মুহুর্মূহ আক্রমণ সামলাতেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। গোলও হজম করতে হয়েছে ৫টি।

ম্যাচের প্রথমার্ধ ২ গোল এবং দ্বিতীয়ার্ধে আর ৩ গোল হজম করে বাংলাদেশ। কাতারের পক্ষে এদিন জোড়া গোল করেছেন আল মোয়েজ আলি ও আকরাম আফিফ। অন্য গোলটি করেন আব্দেলাজিজ। ‘ই’ গ্রুপের প্রিলিমিনারি রাউন্ডে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার। এর আগে ওমানের মাঠে ১-৪ গোলে হারটি ছিল সবচেয়ে বড়।

ম্যাচের ৭৩ শতাংশ বলের দখল ছিল কাতারের কাছে। গোল পোস্টে তারা ২৯টি শট নিয়েছিল। তার মধ্যে ৫টিতে গোল হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি ফিরিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ গোলপোস্টে একটিও শট নিতে পারেনি।

ঘরের মাঠে ম্যাচের ৯ মিনিটেই এগিয়ে যায় কাতার। আব্দুল আজিজ হাতেম গোল করে শুরুতেই এগিয়ে নেন দলকে। আকরাম আফিফ ৩৩ মিনিটে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। এর দুই মিনিট আগে আকরাম আফিফেরর শট গোলরক্ষক জিকো রুখে দিলেও এ দফায় জাল খুঁজে নেন আফিফ। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তার দূর পাল্লার শট শুধু চেয়ে চেয়ে দেখতে হয়েছে জিকোকে। করার ছিল না কিছুই। তাতে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

বিরতির পর ম্যাচের ৪৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের শট ফিস্ট করে প্রতিহত করেন জিকো। ৫৪ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণের ভুল কাজে লাগাতে পারেননি আহমেদ আলায়েলদিন। ৬৩ মিনিটে আল মোয়েজ আলির শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে রুখেন বাংলাদেশ গোল রক্ষক জিকো। পরের মিনিটেই আল বায়াতির শট ফিস্ট করে রুখেন।

তবে ৭২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আল মোয়েজ আলী ব্যবধান ৩-০ করেন। এর ৬ মিনিট পর আরও একটি গোল করেন তিনি। তার জোড়া গোলে কাতার এগিয়ে যায় ৪-০ ব্যবধানে। অবশ্য এই গোল করতে গিয়ে পোস্টের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

এরপর বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে তপু বর্মনকে তুলে নিয়ে নামান ইয়াসিন খানকে এবং ইব্রাহিমের পরিবর্তে নামান রাকিব হোসেনকে। শেষ দিকে বিপলুকে তুলে নিয়ে সুমন রেজাকে মাঠে নামানো হয়। কিন্তু এ পরিবর্তনে গোলের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।

উপরন্তু শেষ মুহূর্তের যোগ করা সময়ে (৯০+২) বাংলাদেশ আরও একটি গোল খেয়ে বসে। এ সময় আকরাম আফিফ নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন। তাতে ৫-০ ব্যবধানে হার মেনে মাঠ ছাড়ে জেমি ডের দল।

এই জয়ে ৬ ম্যাচ থেকে ১৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করে ‘ই’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই আছে কাতার। অন্যদিকে ৫ ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট সংগ্রহ করে বাংলাদেশ রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। তিনটি ম্যাচই হবে ঘরের মাঠে। প্রতিপক্ষ ভারত, আফগানিস্তান ও ওমান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে