Dhaka ১১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ডিবির আতিকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহন ও হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:০২:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২০
  • ৫০১ Time View

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ

রাজশাহী জেলা ডিবি পুলিশের আতিকের বিরুদ্ধে ঘূষ গ্রহনসহ নিরিহ মানূষকে ফাঁসিয়ে হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভুগি পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুলিশের উদ্ধর্তন অফিসার সহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

১৪ নভেম্বর সকাল ১০ টায় রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভুগি পরিবার এই অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী ভুক্তভুগি পরিবার বলেন, গত শনিবার ৭ নভেম্বর রাত ১ টার সময় দূর্গাপুর থানার ঝালুকা গ্রামে মোস্তফার ছেলে রাজু (৩০) কে তার শয়ন কক্ষ থেকে আটক করেন জেলা ডিবি পুলিশের সাদা পোশাকে ৫ সদস্য। রাজুকে আটকের অনেক পরে তার মা রজুফাকে ডাকেন পুলিশ। সে সময় রাজুর মা রজুফাকে একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করার কথা বলে চলে আসেন পুলিশ। রাজুর মা উপান্তর না পেয়ে কুহাড় গ্রামের রাজুর মামাতো ভাই জনাব আলীর ছেলে মাছ ব্যবসায়ী ওমর ফারুককে ফোন দেন। ওমর ফারুক এসে ফোন নম্বর নিয়ে খোঁজ নিলে জানতে পারেন জেলা পুলিশের আতিক রেজা নামের এক ব্যক্তির মোবাইল নম্বর সেটি। তাৎক্ষনিক অর্থ্যাৎ ঐ রাতে আতিক রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওমর ফারুক। যোগাযোগ করলে ডিবির আতিক রেজা তার পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় দিয়ে ওমর ফারুক বলেন আমি রাজুর মামাতো ভাই । তখন ডিবির আতিক ওমর ফারুককে ৫নং ঝালুকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাহার আলীর বাড়ির নিকট ডাকেন। তখন ওমর ফারুক ও তার বড় ভাই সাবেক ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিনকে সঙ্গে নিয়ে আতিক রেজার সঙ্গে দেখা করেন। আতিক রেজার কাছে গেলে ৫ জন সাদা পোশাকে একটি সাদা রংগের মাইক্রোসহ দেখতে পায়। এ সময় আতিক রেজা জানায়, তারা রাজুকে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ আটক করেছে। রাজুকে ছাড়াতে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। ওমর ফারুক ঐ সময় তাদের আর্থিক অবস্থার সোচনীয় বললে তারা দরদামের এক পর্যায়ে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। আতিক রেজা এ সময় আরও বলেন এই মামলার অন্য আসামী রাজুর আর আপনার আরেক ভাই আজমত। তাকে এই মামলায় না জড়াতে চাইলে এই রাতেই ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসেন অন্যথায় রাজু তো জেলে যাবেই সঙ্গে আজমত আসামী হবে। পরে রাতেই ওমর ফারুকের চাচা খলিলুর রহমানের নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়ে আতিক রেজার হাতে দেয়। বাকি ৪ লক্ষ টাকা পরে দিন ৮ নভেম্বর সকাল ১১ টায় দিবে মর্মে সময় নেয় ফারুক।

পরের দিন আজমতের সঙ্গে কথা বললে সে টাকা দিবে না মর্মে জানিয়ে দেয় । তার একই প্রশ্ন আমি কেন টাকা দিবো। এ দিকে আতিকের একের পর এক হুমকি আসতে থাকে ফারুকের নিকট । টাকা না পেয়ে ওমর ফারুকের পর চরম ক্ষেপে যান আতিক রেজা। পরে ফারুককে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠেন আতিক। এর ধারাবাহিকতায় গত ১১ নভেম্বর আবারো আতিক ফোন দেন ওমর ফারুককে । এ সময় ওমর ফারুকের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেন আর বলেন টাকা এবার ১০ লাখ দিবি, তোকে ফাঁসাবো আর তোর ভাই ব্রাদার যারা আছে তাদের সবাইকে ফাঁসাতে যা যা করা লাগে করবো। এ অবস্থায় চরম হুমকি ও আতংকের মধ্যে অতিবাহিত করছে ভুক্তভুগি পরিবার।

প্রসঙ্গত, জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দের জেরে রাজুকে ফাঁসানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে । সংবাদ সম্মেলনে রাজুর মা রজুফা বলেন, রাতে তার ছেলে ঘরে শুয়ে ছিল। তাকে তার ঘর থেকে আটক করেন পুলিশ। পরে জানাতে পারেন রাজুর নিকট থেকে মাদক ও অস্ত্র পাওয়া গেছে। রাজু কোন সিগারেট বিড়ি খায় না, সে মাদক দিয়ে কি করবে। এলাকাবাসী সবাই জানে রাজু কেমন ছেলে। রাজুকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে । প্রতিপক্ষের নিকট থেকে সুবিধা নিয়ে আতিক রেজা অস্ত্র দিয়ে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে বলে উল্লেখ্য করেন রাজুর মা রজুফা।

উল্লেখ্য যে, আতিক রেজা রাজশাহী জেলা ডিবি পুলিশে ইন্সেপেক্টর পদে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে মাসিক মাসোয়ারা সহ আটক বানিজ্যের অভিযোগ বহু পুরাতন। জেলা জুড়ে প্রতিটি মাদক স্পট থেকে শুরু করে জুয়া, হোটেল, গরু পাচারকারীসহ চোরাকারবাবীদের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচন গ্রহন করেন বলে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক অনেকই জানান।

এই বিষয়ে ডিবি পুলিশ ইন্সপেক্টর আতিক রেজার বক্তব্য নেয়ার জন্য তাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

রাজশাহীতে ডিবির আতিকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহন ও হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

Update Time : ০৬:০২:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২০

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ

রাজশাহী জেলা ডিবি পুলিশের আতিকের বিরুদ্ধে ঘূষ গ্রহনসহ নিরিহ মানূষকে ফাঁসিয়ে হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভুগি পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুলিশের উদ্ধর্তন অফিসার সহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

১৪ নভেম্বর সকাল ১০ টায় রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভুগি পরিবার এই অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী ভুক্তভুগি পরিবার বলেন, গত শনিবার ৭ নভেম্বর রাত ১ টার সময় দূর্গাপুর থানার ঝালুকা গ্রামে মোস্তফার ছেলে রাজু (৩০) কে তার শয়ন কক্ষ থেকে আটক করেন জেলা ডিবি পুলিশের সাদা পোশাকে ৫ সদস্য। রাজুকে আটকের অনেক পরে তার মা রজুফাকে ডাকেন পুলিশ। সে সময় রাজুর মা রজুফাকে একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করার কথা বলে চলে আসেন পুলিশ। রাজুর মা উপান্তর না পেয়ে কুহাড় গ্রামের রাজুর মামাতো ভাই জনাব আলীর ছেলে মাছ ব্যবসায়ী ওমর ফারুককে ফোন দেন। ওমর ফারুক এসে ফোন নম্বর নিয়ে খোঁজ নিলে জানতে পারেন জেলা পুলিশের আতিক রেজা নামের এক ব্যক্তির মোবাইল নম্বর সেটি। তাৎক্ষনিক অর্থ্যাৎ ঐ রাতে আতিক রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওমর ফারুক। যোগাযোগ করলে ডিবির আতিক রেজা তার পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় দিয়ে ওমর ফারুক বলেন আমি রাজুর মামাতো ভাই । তখন ডিবির আতিক ওমর ফারুককে ৫নং ঝালুকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাহার আলীর বাড়ির নিকট ডাকেন। তখন ওমর ফারুক ও তার বড় ভাই সাবেক ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিনকে সঙ্গে নিয়ে আতিক রেজার সঙ্গে দেখা করেন। আতিক রেজার কাছে গেলে ৫ জন সাদা পোশাকে একটি সাদা রংগের মাইক্রোসহ দেখতে পায়। এ সময় আতিক রেজা জানায়, তারা রাজুকে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ আটক করেছে। রাজুকে ছাড়াতে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। ওমর ফারুক ঐ সময় তাদের আর্থিক অবস্থার সোচনীয় বললে তারা দরদামের এক পর্যায়ে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। আতিক রেজা এ সময় আরও বলেন এই মামলার অন্য আসামী রাজুর আর আপনার আরেক ভাই আজমত। তাকে এই মামলায় না জড়াতে চাইলে এই রাতেই ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসেন অন্যথায় রাজু তো জেলে যাবেই সঙ্গে আজমত আসামী হবে। পরে রাতেই ওমর ফারুকের চাচা খলিলুর রহমানের নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়ে আতিক রেজার হাতে দেয়। বাকি ৪ লক্ষ টাকা পরে দিন ৮ নভেম্বর সকাল ১১ টায় দিবে মর্মে সময় নেয় ফারুক।

পরের দিন আজমতের সঙ্গে কথা বললে সে টাকা দিবে না মর্মে জানিয়ে দেয় । তার একই প্রশ্ন আমি কেন টাকা দিবো। এ দিকে আতিকের একের পর এক হুমকি আসতে থাকে ফারুকের নিকট । টাকা না পেয়ে ওমর ফারুকের পর চরম ক্ষেপে যান আতিক রেজা। পরে ফারুককে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠেন আতিক। এর ধারাবাহিকতায় গত ১১ নভেম্বর আবারো আতিক ফোন দেন ওমর ফারুককে । এ সময় ওমর ফারুকের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেন আর বলেন টাকা এবার ১০ লাখ দিবি, তোকে ফাঁসাবো আর তোর ভাই ব্রাদার যারা আছে তাদের সবাইকে ফাঁসাতে যা যা করা লাগে করবো। এ অবস্থায় চরম হুমকি ও আতংকের মধ্যে অতিবাহিত করছে ভুক্তভুগি পরিবার।

প্রসঙ্গত, জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দের জেরে রাজুকে ফাঁসানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে । সংবাদ সম্মেলনে রাজুর মা রজুফা বলেন, রাতে তার ছেলে ঘরে শুয়ে ছিল। তাকে তার ঘর থেকে আটক করেন পুলিশ। পরে জানাতে পারেন রাজুর নিকট থেকে মাদক ও অস্ত্র পাওয়া গেছে। রাজু কোন সিগারেট বিড়ি খায় না, সে মাদক দিয়ে কি করবে। এলাকাবাসী সবাই জানে রাজু কেমন ছেলে। রাজুকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে । প্রতিপক্ষের নিকট থেকে সুবিধা নিয়ে আতিক রেজা অস্ত্র দিয়ে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে বলে উল্লেখ্য করেন রাজুর মা রজুফা।

উল্লেখ্য যে, আতিক রেজা রাজশাহী জেলা ডিবি পুলিশে ইন্সেপেক্টর পদে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে মাসিক মাসোয়ারা সহ আটক বানিজ্যের অভিযোগ বহু পুরাতন। জেলা জুড়ে প্রতিটি মাদক স্পট থেকে শুরু করে জুয়া, হোটেল, গরু পাচারকারীসহ চোরাকারবাবীদের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচন গ্রহন করেন বলে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক অনেকই জানান।

এই বিষয়ে ডিবি পুলিশ ইন্সপেক্টর আতিক রেজার বক্তব্য নেয়ার জন্য তাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।