Dhaka ০৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আড়িয়াল খাঁ সেতুর উদ্বোধনের আগেই সংযোগ সড়ক ভাঙনের মুখে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২০:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০
  • ১৫২ Time View

বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলায় নদীর অব্যহত ভাঙন দেখা দেয়ায় উদ্বোধনের আগেই আড়িয়াল খাঁ সেতুর সংযোগ সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। সেতুটি যানচলাচলের জন্য খুলে দেয়ার আগেই সংযোগ সড়ক ভেঙে চলাচল অনুপযোগী হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জরুরিভাবে নদী ভাঙনরোধ করা না হলে সরকারের খরচ হওয়ায় ৭০ কোটি টাকা গচ্চা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চলাচলরত স্থানীয় সাধারণ মানুষ।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে- মুলাদী উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত ও উন্নত করার লক্ষে ২০১৪ সালে উপজেলার রামারপোল এলাকা দিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। দীর্ঘ দিন ধরে নির্মাণ কাজ চলার পরে অবশেষে সেতুটি কাজ সমাপ্ত করে কর্তৃপক্ষের নিকট বুঝিয়ে দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

সরকারের ‘সাউথ-ওয়েস্টার্ন রুরাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট’ এর আওতায় এ সেতু ও সংযোগ সড়কটির নির্মাণ কাজ চলছে। প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেড প্রায় ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মূল সেতুর কাজ সম্পন্ন করেছে এবং এমএসটি-এমডিই-জেভি নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠান ৩.৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে।

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বাটাজোর এলাকা থেকে মুলাদী উপজেলা হয়ে হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও কাজিরহাট থানার সাথে সড়ক যোগাযোগ আড়িয়াল খাঁ নদের কারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছিল। এ বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে ২০১৩ সালে প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

সেতুটি হয়ে মুলাদীর নাজিরপুরের সাথে মোল্লার হাট ও কুতুবপুরেরও সংযোগ সড়ক রয়েছে। ৪৩২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৮২ মিটার প্রস্থ সেতুটিতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ৭.৩০ মিটার বা ২৪ ফুট। ১১২টি পাইলের ওপর ‘প্রি-স্টেসড কংক্রিট গার্ডার’ দিয়ে এ সেতুটি নির্মিত হয়েছে। আটটি ১১২ মিটার ডায়ামিটার ও ৪৮ মিটার লম্বা কাস্ট ইন সিটু পাইলের এ সেতুটিতে পিলার রয়েছে ১২টি। ১১.২৯১ মিটার উচ্চতার এবাটমেন্টের ৫টি স্প্যানের এ সেতুটি নির্মাণে জমি হুকুম দখল করতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ একর।

নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হান্নান মাতুব্বর বলেন, উপজেলার আড়িয়াল খাঁ সেতুটি নির্মাণের ফলে মুলাদী, হিজলা, কাজিরহাট থানাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ সহজেই রাজধানী ঢাকার সাথে অনায়াসেই যোগাযোগ করতে পারবে। সেতুটি খুলে দেয়া হলে সড়ক পথে ঢাকাতে যাতায়াতের সময় কমে যাবে প্রায় ২ ঘণ্টা। আড়িয়াল খাঁ নদীর অব্যহত ভাঙনে মুলাদী-কালকিনি সংযোগ সেতুর নিচে ও এর আশপাশের এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এভাবে নদী ভাঙতে থাকলে অচিরেই সেতুর সংযোগসড়ক ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এবং সেতুটি অকার্যকর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা লিটন সিকদার বলেন, নদী শাসন না করায় এবং অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্বপ্নের সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে উদ্বোধনের আগেই সাধারণ মানুষের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান জানান, সংযোগ সড়কের কাজ কিছুটা অসমাপ্ত থাকায় সেতুটি এখনও যান ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়নি। নদী ভাঙনের হুমকির মুখে থাকা সেতুর সংযোগসড়ক রক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

আড়িয়াল খাঁ সেতুর উদ্বোধনের আগেই সংযোগ সড়ক ভাঙনের মুখে

Update Time : ০৬:২০:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০২০

বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলায় নদীর অব্যহত ভাঙন দেখা দেয়ায় উদ্বোধনের আগেই আড়িয়াল খাঁ সেতুর সংযোগ সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। সেতুটি যানচলাচলের জন্য খুলে দেয়ার আগেই সংযোগ সড়ক ভেঙে চলাচল অনুপযোগী হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জরুরিভাবে নদী ভাঙনরোধ করা না হলে সরকারের খরচ হওয়ায় ৭০ কোটি টাকা গচ্চা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চলাচলরত স্থানীয় সাধারণ মানুষ।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে- মুলাদী উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত ও উন্নত করার লক্ষে ২০১৪ সালে উপজেলার রামারপোল এলাকা দিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। দীর্ঘ দিন ধরে নির্মাণ কাজ চলার পরে অবশেষে সেতুটি কাজ সমাপ্ত করে কর্তৃপক্ষের নিকট বুঝিয়ে দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

সরকারের ‘সাউথ-ওয়েস্টার্ন রুরাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট’ এর আওতায় এ সেতু ও সংযোগ সড়কটির নির্মাণ কাজ চলছে। প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেড প্রায় ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মূল সেতুর কাজ সম্পন্ন করেছে এবং এমএসটি-এমডিই-জেভি নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠান ৩.৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে।

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বাটাজোর এলাকা থেকে মুলাদী উপজেলা হয়ে হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও কাজিরহাট থানার সাথে সড়ক যোগাযোগ আড়িয়াল খাঁ নদের কারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছিল। এ বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে ২০১৩ সালে প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

সেতুটি হয়ে মুলাদীর নাজিরপুরের সাথে মোল্লার হাট ও কুতুবপুরেরও সংযোগ সড়ক রয়েছে। ৪৩২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৮২ মিটার প্রস্থ সেতুটিতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ৭.৩০ মিটার বা ২৪ ফুট। ১১২টি পাইলের ওপর ‘প্রি-স্টেসড কংক্রিট গার্ডার’ দিয়ে এ সেতুটি নির্মিত হয়েছে। আটটি ১১২ মিটার ডায়ামিটার ও ৪৮ মিটার লম্বা কাস্ট ইন সিটু পাইলের এ সেতুটিতে পিলার রয়েছে ১২টি। ১১.২৯১ মিটার উচ্চতার এবাটমেন্টের ৫টি স্প্যানের এ সেতুটি নির্মাণে জমি হুকুম দখল করতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ একর।

নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হান্নান মাতুব্বর বলেন, উপজেলার আড়িয়াল খাঁ সেতুটি নির্মাণের ফলে মুলাদী, হিজলা, কাজিরহাট থানাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার হাজার হাজার মানুষ সহজেই রাজধানী ঢাকার সাথে অনায়াসেই যোগাযোগ করতে পারবে। সেতুটি খুলে দেয়া হলে সড়ক পথে ঢাকাতে যাতায়াতের সময় কমে যাবে প্রায় ২ ঘণ্টা। আড়িয়াল খাঁ নদীর অব্যহত ভাঙনে মুলাদী-কালকিনি সংযোগ সেতুর নিচে ও এর আশপাশের এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এভাবে নদী ভাঙতে থাকলে অচিরেই সেতুর সংযোগসড়ক ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এবং সেতুটি অকার্যকর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা লিটন সিকদার বলেন, নদী শাসন না করায় এবং অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্বপ্নের সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে উদ্বোধনের আগেই সাধারণ মানুষের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান জানান, সংযোগ সড়কের কাজ কিছুটা অসমাপ্ত থাকায় সেতুটি এখনও যান ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়নি। নদী ভাঙনের হুমকির মুখে থাকা সেতুর সংযোগসড়ক রক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।