Dhaka ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
মা-শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৌদিতে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা দুই মাস বাড়ালো ইসি সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনেই ভালো ফল পাওয়া যাবে না : কমিশন প্রধান ঢাকায় রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস, বাড়বে গরমের অনুভূতি জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় টেকসই কর্মসূচি বাড়ানো হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা রাজনৈতিক পর্যায়ে সার্কের অগ্রগতি হয়নি : নেপালের রাষ্ট্রদূত শান্তিরক্ষা মিশনে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ১৯১ রানেই অলআউট টাইগাররা প্রধান উপদেষ্টা কাতার সফরে যাচ্ছেন সোমবার

আন্তর্জাতিক স্বর্ন চোরাচালান চক্রের শিকার রাজশাহী বোয়ালিয়া থানা পুলিশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:২০:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
  • ১৭০ Time View

সানোয়ার আরিফ, রাজশাহী প্রতিনিধি:

রাজশাহীতে ২টি স্বর্ণের বারের মামলা নিয়ে বিপাকে পড়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এক প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যানের কথায় স্বর্ণেরবারসহ আসামীদের না ছাড়ায় বোয়ালিয়া থানা পুলিশকে এমন বিপাকে পড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মতিন ও সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারীরা।

ঘটনাসূত্রে জানা যায় গত ১ অক্টোবর সন্ধা সাড়ে ৬ টার সময় বর্নালীর মোড় এলাকায় গ্রামীন ট্রাভেলস বাস যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৫-২২৫১ পরিবহন থেকে ২ টি স্বর্ণের বারসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উপর রাজারামপুর (কুমারপাড়া),বর্তমান ঠিকানা রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি থানার দরগাকুশিরা এলাকার মৃত মহসিন আলীর ছেলে আজিজুর ইসলাম (৪০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন হরিনগর তাঁতিপাড়া এলাকার আঃ মঙ্গুর ছেলে ফারুক হোসেন (৩২) নামে দুইজনকে আটক করা হয় ।

উদ্ধার হওয়া ২টি স্বর্ণেরবারের বর্তমান বাজার মূল্য ১৫,১৫,৮২৪ টাকা। অভিযানে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শাহিন আখতার, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইফতেখার মোহাম্মদ আলআমিন,এটিএসআই মিনহাজুল হকসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন । তাদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের তথ্য মতে আটক দুই জনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করা পর্যন্ত থানা পুলিশ ও গ্রামীন ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষসহ বাসের যাত্রীরা ভিডিও করে রাখেন।

এরপর আটক আজিজুর ইসলাম (৪০) ও ফারুক হোসেন (৩২)কে থানায় নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় জিঙ্গাসাবাদ শেষে ১ অক্টোবর রাতে মামলা রজু সম্পূর্ন করে আটকদের থানায় রেখে ডিউটি শেষে বাড়ি চলে যান এসআই মতিন। । পরের দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ বার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু এসআই মতিনের মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে স্বর্ণেরবারসহ আসামীদের ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এসময় ঐ চেয়ারম্যানের ঘুষের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এস আই মতিন। চেয়ারম্যান বলেন- আসামী না ছাড়লে বোয়ালিয়া থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ সহ সকলকে দেখে নেয়া হবে এবং বিভিন্ন সাংবাদিক,আইজি, ডিআইজির কাছে অভিযোগ করবেন বলে হুমকি দেয় এই প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান। তার হুমকিতে কর্নপাত না করে ১অক্টোবর কর ফাঁকি দিয়ে সোনা আনায়ন করায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪সালের ২৫বি/১/বি ধারায় মামলা রুজু শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেন।

এদিকে সরেজমিন অনুসন্ধানে স্বর্ণেরবার উদ্ধারের বিষয়ে গ্রামীন ট্রাভেলস বাস যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৫-২২৫১ পরিবহনের ড্রাইভার,সুপারভাইজার ও হেলপারদের জিঙ্গাসা করলে তারা বলেন, গাড়ি ভর্তি যাত্রি ও আমাদের সামনে দুইজনকে তল্লাশি করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেন । যেগুলো আমাদের সামনেই জব্দ করে দুইজন যাত্রীকে আটক করে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে গ্রামীন ট্রাভেলস এর ম্যানেজার হাসান বলেন, আমাদের গাড়ি আটকানোর খবর শুনে আমি বর্নালির মোড়ে যায়। আমার সামনেই থানার পুলিশ সদস্যরা আটকদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের দুই জনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করা পর্যন্ত আমি মোবাইলে ভিডিও ধারন করি। সেখানে তাদের কাছ থেকে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার হয় যা আমার মোবাইলে ভিডিও আছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন পিপিএম বলেন, স্বর্ণেরবারের মামলা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তিনি। এতো গুলো অফিসার,গ্রামীন ট্রাভেলস এর যাত্রীরা ও গ্রামীন ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষের সামনে ভিডিও করে স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেও বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন,যেমন ‘মাদক ধরলেও দোষ, না ধরলেও দোষ। না ধরলে বলে পুলিশ মাদক ব্যবসা করে। ধরলে বলে পুলিশ ঢুকিয়ে দিয়েছে। ঠিক তেমন ঘটনাই ঘটেছে এই স্বর্ণেরবারের মামলা নিয়ে । এমন পরিস্থিতি হয়েছে কোন অফিসাররা কোন আসামী ধরতে গেলে এখন ভয় করছে। তারপরেও বিষয়টি আরএমপির সিনিয়র অফিসাররা তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

মা-শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক স্বর্ন চোরাচালান চক্রের শিকার রাজশাহী বোয়ালিয়া থানা পুলিশ

Update Time : ১১:২০:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০

সানোয়ার আরিফ, রাজশাহী প্রতিনিধি:

রাজশাহীতে ২টি স্বর্ণের বারের মামলা নিয়ে বিপাকে পড়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এক প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যানের কথায় স্বর্ণেরবারসহ আসামীদের না ছাড়ায় বোয়ালিয়া থানা পুলিশকে এমন বিপাকে পড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মতিন ও সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারীরা।

ঘটনাসূত্রে জানা যায় গত ১ অক্টোবর সন্ধা সাড়ে ৬ টার সময় বর্নালীর মোড় এলাকায় গ্রামীন ট্রাভেলস বাস যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৫-২২৫১ পরিবহন থেকে ২ টি স্বর্ণের বারসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উপর রাজারামপুর (কুমারপাড়া),বর্তমান ঠিকানা রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি থানার দরগাকুশিরা এলাকার মৃত মহসিন আলীর ছেলে আজিজুর ইসলাম (৪০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন হরিনগর তাঁতিপাড়া এলাকার আঃ মঙ্গুর ছেলে ফারুক হোসেন (৩২) নামে দুইজনকে আটক করা হয় ।

উদ্ধার হওয়া ২টি স্বর্ণেরবারের বর্তমান বাজার মূল্য ১৫,১৫,৮২৪ টাকা। অভিযানে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শাহিন আখতার, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইফতেখার মোহাম্মদ আলআমিন,এটিএসআই মিনহাজুল হকসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন । তাদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের তথ্য মতে আটক দুই জনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করা পর্যন্ত থানা পুলিশ ও গ্রামীন ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষসহ বাসের যাত্রীরা ভিডিও করে রাখেন।

এরপর আটক আজিজুর ইসলাম (৪০) ও ফারুক হোসেন (৩২)কে থানায় নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় জিঙ্গাসাবাদ শেষে ১ অক্টোবর রাতে মামলা রজু সম্পূর্ন করে আটকদের থানায় রেখে ডিউটি শেষে বাড়ি চলে যান এসআই মতিন। । পরের দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ বার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু এসআই মতিনের মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে স্বর্ণেরবারসহ আসামীদের ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এসময় ঐ চেয়ারম্যানের ঘুষের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এস আই মতিন। চেয়ারম্যান বলেন- আসামী না ছাড়লে বোয়ালিয়া থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ সহ সকলকে দেখে নেয়া হবে এবং বিভিন্ন সাংবাদিক,আইজি, ডিআইজির কাছে অভিযোগ করবেন বলে হুমকি দেয় এই প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান। তার হুমকিতে কর্নপাত না করে ১অক্টোবর কর ফাঁকি দিয়ে সোনা আনায়ন করায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪সালের ২৫বি/১/বি ধারায় মামলা রুজু শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেন।

এদিকে সরেজমিন অনুসন্ধানে স্বর্ণেরবার উদ্ধারের বিষয়ে গ্রামীন ট্রাভেলস বাস যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৫-২২৫১ পরিবহনের ড্রাইভার,সুপারভাইজার ও হেলপারদের জিঙ্গাসা করলে তারা বলেন, গাড়ি ভর্তি যাত্রি ও আমাদের সামনে দুইজনকে তল্লাশি করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেন । যেগুলো আমাদের সামনেই জব্দ করে দুইজন যাত্রীকে আটক করে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে গ্রামীন ট্রাভেলস এর ম্যানেজার হাসান বলেন, আমাদের গাড়ি আটকানোর খবর শুনে আমি বর্নালির মোড়ে যায়। আমার সামনেই থানার পুলিশ সদস্যরা আটকদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের দুই জনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করা পর্যন্ত আমি মোবাইলে ভিডিও ধারন করি। সেখানে তাদের কাছ থেকে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার হয় যা আমার মোবাইলে ভিডিও আছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন পিপিএম বলেন, স্বর্ণেরবারের মামলা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তিনি। এতো গুলো অফিসার,গ্রামীন ট্রাভেলস এর যাত্রীরা ও গ্রামীন ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষের সামনে ভিডিও করে স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেও বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন,যেমন ‘মাদক ধরলেও দোষ, না ধরলেও দোষ। না ধরলে বলে পুলিশ মাদক ব্যবসা করে। ধরলে বলে পুলিশ ঢুকিয়ে দিয়েছে। ঠিক তেমন ঘটনাই ঘটেছে এই স্বর্ণেরবারের মামলা নিয়ে । এমন পরিস্থিতি হয়েছে কোন অফিসাররা কোন আসামী ধরতে গেলে এখন ভয় করছে। তারপরেও বিষয়টি আরএমপির সিনিয়র অফিসাররা তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।