বিড়ির শুল্ক কমানোর জন্য সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ১০ জন সংসদ সদস্য। অথচ তাঁদের সম্মতিক্রমেই মহান জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের এই বাজেট। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো- এবারের বাজেটে বিড়ির উপর কোন শুল্কই বাড়ানো হয়নি।
বিগত চার বছরের ন্যায় এই বাজেটেও অপরিবর্তীত রাখা হয়েছে বিড়ির সম্পূরক শুল্ক। এ অবস্থায় বিড়ি কোম্পানির প্ররোচণায় সম্মানিত সাংসদের এই তৎপরতা নজিরবিহীন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের সাথে সাংঘর্ষিক।
দেশিয় শিল্পের নামে বিড়ি কোম্পানিগুলো বছরের পর বছর নানা সুবিধা পেয়ে আসছে। অর্থমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে করোনায় লক্ষ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের বেকার হওয়ার যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে- তার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক ২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘দি রেভিনিউ অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট আউটকাম অব বিড়ি ট্যাক্সেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে- বাংলাদেশে বিড়ি শিল্পে কর্মরত নিয়মিত, অনিয়মিত এবং চুক্তিভিক্তিক মিলিয়ে পূর্ণসময় কাজ করার সমতুল্য শ্রমিক সংখ্যা মাত্র ৪৬ হাজার ৯১৬ জন। সরকারিভাবে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হলে ৭৮.৪ শতাংশ বিড়ি শ্রমিক এই ক্ষতিকর পেশা ছেড়ে দিতে চায় বলে উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে- তামাক ব্যবহার করোনা মহামারীকে ত্বরান্বিত করে। অথচ করোনার অজুহাত দিয়েই সাংসদরা বিড়ির শুল্ক কমানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। বিড়ি মালিকদের ফাঁদে পা না দিয়ে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রী করেছেন, তার পূর্ণ বাস্তবায়নে সাহায্য করার জন্য নীতিপ্রণেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। -বিজ্ঞপ্তি।