Dhaka ১০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:১৭:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১০১ Time View

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৫ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করেছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর পুরো অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ৫ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, একনেকে অনুমোদিত ৫ প্রকল্পের মধ্যে ৪টি নতুন প্রকল্প এবং ১টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের বাস্তবায়ন খরচ ধরা হয়েছে ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

ইলিশের উৎপাদন ও প্রাপ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমিষের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালীন জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। মৎস্য অধিদফতর জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৪ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, সারাদেশে মোট ২৯ জেলার ১৩৪ উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন ও অভয়াশ্রম ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি।

তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় জাটকা ও মা ইলিশ আহরণকারী ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি জেলেদের ১০ হাজার বৈধ জাল বিতরণ করা হবে। একইসাথে প্রচার-প্রচারনার মাধ্যমে মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে জনসচেতনতা তৈরি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের বেশিরভাগ ইলিশ আমাদের এই অঞ্চলেই হয়। বাংলাদেশে উৎপাদন হয় ৬০ শতাংশ। নানা কারণে ইলিশ প্রজনন ও চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে ইলিশ উন্নয়ন প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলাশয়ের পাশাপাশি খাঁচায় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধকরণে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, নগদ সহায়তা ও কর্মহীন মৎসজীবিদের মাঝে চাল বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

জামালপুর জেলার দিগপাইত-সরিষাবাড়ি-তারাকান্দি সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন,এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী যে কোন সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছেন সংশ্লিষ্টদের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারকে সড়ক নির্মাণ যেমন করতে হবে, একইসাথে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী অপ্রয়োজনীয় রাস্তা নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, নিজের বাড়ির সামনে অপ্রয়োজনীয়ভাবে রাস্তা নির্মাণ বা প্রশস্তকরণের মানসিকতা পরিহার করতে হবে। কৃষিজমিসহ অন্যান্য স্থাপনা রক্ষায় নতুন সড়ক নির্মাণের চেয়ে বিদ্যমান সড়ক সংস্কারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
দিগপাইত-সরিষাবাড়ি-তারাকান্দি সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৭৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

একনেকে অনুমোদিত অন্য তিন প্রকল্প হলো-সীমান্ত এলাকায় বিজিবির ৭৩টি কম্পোজিট আধুনিক বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট নির্মাণ প্রকল্প, যাতে খরচ হবে ২৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ৮টি সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এছাড়া ৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামে একটি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন প্রকল্পের ১ম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা

Update Time : ০২:১৭:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৫ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করেছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর পুরো অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ৫ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, একনেকে অনুমোদিত ৫ প্রকল্পের মধ্যে ৪টি নতুন প্রকল্প এবং ১টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের বাস্তবায়ন খরচ ধরা হয়েছে ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

ইলিশের উৎপাদন ও প্রাপ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমিষের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালীন জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। মৎস্য অধিদফতর জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৪ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, সারাদেশে মোট ২৯ জেলার ১৩৪ উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন ও অভয়াশ্রম ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি।

তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় জাটকা ও মা ইলিশ আহরণকারী ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি জেলেদের ১০ হাজার বৈধ জাল বিতরণ করা হবে। একইসাথে প্রচার-প্রচারনার মাধ্যমে মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে জনসচেতনতা তৈরি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের বেশিরভাগ ইলিশ আমাদের এই অঞ্চলেই হয়। বাংলাদেশে উৎপাদন হয় ৬০ শতাংশ। নানা কারণে ইলিশ প্রজনন ও চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে ইলিশ উন্নয়ন প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলাশয়ের পাশাপাশি খাঁচায় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধকরণে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, নগদ সহায়তা ও কর্মহীন মৎসজীবিদের মাঝে চাল বিতরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

জামালপুর জেলার দিগপাইত-সরিষাবাড়ি-তারাকান্দি সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন,এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী যে কোন সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছেন সংশ্লিষ্টদের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারকে সড়ক নির্মাণ যেমন করতে হবে, একইসাথে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী অপ্রয়োজনীয় রাস্তা নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, নিজের বাড়ির সামনে অপ্রয়োজনীয়ভাবে রাস্তা নির্মাণ বা প্রশস্তকরণের মানসিকতা পরিহার করতে হবে। কৃষিজমিসহ অন্যান্য স্থাপনা রক্ষায় নতুন সড়ক নির্মাণের চেয়ে বিদ্যমান সড়ক সংস্কারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
দিগপাইত-সরিষাবাড়ি-তারাকান্দি সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৭৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

একনেকে অনুমোদিত অন্য তিন প্রকল্প হলো-সীমান্ত এলাকায় বিজিবির ৭৩টি কম্পোজিট আধুনিক বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট নির্মাণ প্রকল্প, যাতে খরচ হবে ২৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ৮টি সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এছাড়া ৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামে একটি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন প্রকল্পের ১ম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।