মহামারী করোনভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থেকেছেন ক্রিকেটাররা। ফিটনেস ধরে রাখতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঘরেই নানা শরীরচর্চা করেছেন তারা। এরপর বেশ কিছুদিন ব্যক্তিগত অনুশীলনের পর এবার দলগত অনুশীলনে নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অনুশীলন শেষে এক ভিডিও বার্তায় ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জানালেন, অনেকদিন পর দলগত অনুশীলন করতে পেরে উৎফুল্ল তিনি।

এতদিন ব্যাটিং কোচের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যক্তিগত অনুশীলন করেছিলেন রিয়াদ। অনুশীলন শেষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, আমরা ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু করেছি, ব্যাটিং করছি ৪-৫ সপ্তাহ হলো। ব্যক্তিগতভাবে অনেকগুলো কাজ করার ছিল। ব্যাটিং কোচের সাথে কথা হয়েছিল, সে নির্দেশনা অনুসারে কী কী কাজ করা দরকার ছিল বোলিং মেশিনে সেসব করেছি।

তিনি আরও বলেন, এখন সতীর্থদের সাথে কাজ করছি, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা হচ্ছে। সতীর্থরাও বেশ উৎফুল্ল এবং আমিও। কারণ দিনশেষে এটা একটা দলীয় খেলা, দলের সবার সাথে মিলে অনুশীলনটা যদি উপভোগ করা যায় ওটা আরও বেশি কার্যকর হয় নিজের জন্য ও সতীর্থদের জন্য।

বাসায় বন্দি থাকা দিনগুলোতে রানিং ও শরীরচর্চা করতে পারলেও নিজেদের দক্ষতার উন্নতি ঘটানোর সুযোগ ছিল না ক্রিকেটারদের। সেই সুযোগ পেয়ে এবং দীর্ঘদিন পর দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে খুশি রিয়াদ।

তিনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, অনেকদিন পর আমরা আজ মিরপুরে দলবদ্ধ অনুশীলন শুরু করলাম। ভালো লাগছে। লকডাউনের সময়টা খুবই কঠিন ছিল, কারণ দল থেকে দূরে, অনুশীলন থেকে দূরে। কিন্তু যতটুকু বাসায় করতে পেরেছি, রানিং বা জিমের কাজগুলো। কিন্তু স্কিলের কাজগুলো করতে পারছিলাম না।

আজ প্রথম দিনের অনুশীলনে দুপুর আড়াইটায় মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয় বাংলাদেশ দল। সেখানে জৈব-সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে ১৬ ক্রিকেটারের সঙ্গে আরও ছিলেন- হোড হোচ, বোলিং কোচসহ কোচিং স্টাফের ৪ সদস্য।

এদিকে, আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফর শেষপর্যন্ত হবে কীনা, এনিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন সিরিজটির প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। এজন্য ২৭ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াড প্রস্তুত করেছে বিসিবি। শনিবার পাওয়া ফলাফলে সাপোর্ট স্টাফসহ ২৭ ক্রিকেটারের সবারই করোনা নেগেটিভ এসেছে।

তবে আপাতত ১৮ জন ক্রিকেটার নিয়ে জৈব-সুরক্ষা বলয় তৈরি করেছে বিসিবি। বাকিরা ঢাকার বাইরে থেকে আসায় এখনো আইসোলেশনে আছেন। যোগ দেননি প্রথম দিনের অনুশীলনে। আজ রোববার ১৮ ক্রিকেটারের মধ্যে ১৬ জন অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন। অনুপস্থিত ছিলেন করোনা থেকে সদ্য সেরে ওঠা সাইফ হাসান ও মোহাম্মদ মিঠুন।

দলগত অনুশীলনে না থাকলেও অ্যাকাডেমি মাঠে নিজেদের মতো করে ফিটনেস ট্রেনিং নিয়ে কাজ করেছেন নাঈম হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা। দুপুর আড়াইটায় মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয় বাংলাদেশ দল।

অনুশীলনের শুরুতে প্রথম ১৫ মিনিট নিজেদের মতো গা-গরম করেন মুশফিক-মুমিনুলরা। এরপর ১৫ মিনিট ধরে চলে টিম মিটিং। টিম মিটিং শেষে ১০ মিনিটের রানিং পর্ব। এরপর স্কিল ট্রেনিংয়ের অংশ হিসেবে ১৫ মিনিট ফুটবল অনুশীলন করেন ১৬ ক্রিকেটার। খানিক বিরতি দিয়ে শুরু হয় সেন্ট্রাল উইকেটে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন। এই অনুশীলন চলে বেলা ৫টা পর্যন্ত।

এভাবে পালাক্রমে ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৬ সেপ্টেম্বর প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে ক্যাম্পের অনুশীলন।

প্রথম দিনের অনুশীলনে যারা উপস্থিত ছিলেন:সাদমান ইসলাম, রুবেল হোসেন, আল-আমিন হোসেন, মুশফিকুর রহিম, তাইজুল ইসলাম, মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ, ইয়াসিন রাব্বি, ইমরুল কায়েস, নুরুল হাসান সোহান, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সৌম্য সরকার।

যারা উপস্থিত ছিলেন না: মোহাম্মদ মিঠুন, শফিউল ইসলাম, নাঈম হাসান, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী, এবাদত হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ও সাইফ হাসান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে