Dhaka ০১:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিংড়ায় কচুরীপানার কারণে ২ হাজার একর রোপা ধান ডুবে যাওয়ার আশংকা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৪৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৩৪ Time View

মোঃ এনামুল হক বাদশা,সিংড়া(নাটোর) প্রতিনিধিঃ

নাটোরের সিংড়ায় বর্ষার পানি নাগর নদী দিয়ে নেমে আসার পথে প্রায় ২ কিঃমিঃ এলাকা জুড়ে বিশাল কচুরীপানার স্তুপ আটকে চলমান পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংলগ্ন ব্রীজে গত এক সপ্তাহ ধরে কচুরী পানার এই বিশাল স্তুপ আটকে এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃ পক্ষ কোন পদক্ষেপ নেননি বলে এলাকা বাসীর দাবি । এদিকে গত কয়েক দিন ধরে নদীর পানি নামতে না পারায় তাজপুর এবং পাশের ১০ থেকে ১২ টি গ্রামের মাঠের বর্ষাকালীন প্রায় ২ হাজার একর জমির রোপা ধান পানিতে ডুবে যাওয়ার আশংকা করছেন ওই এলাকার কৃষক। এছাড়া ২৫ থেকে ৩০ ফুট গভীর নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় তাজপুর ব্রীজও ঝুকির মধ্যে রয়েছে।
রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তাজপুর ব্রীজে আটকে থাকা কচুরীপানা পরিষ্কার করছেন ৫০ থেকে ৬০জন শ্রমিক। শ্রমিকরা জানান বিপদের মুখে বাধ্য হয়েই তাজপুর,খড়সতি, নওগাঁ, চক নওগাঁ,জয়নগর চক তাজপুর ভাদুরী পাড়া, কমরপুর মাহমুদপুর গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে গত ২ দিন ধরে এই কচুরীপানা সরিয়ে কিছুটা হলেও নদী পথে পানি নেমে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
তাজপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রহিদুল ইসলাম বলেন,আমি ২০ দিন আগে আমার ৭ বিঘা জমিতে চৌত্রিশ ধান রোপন করেছি। কিন্তু মাঠের পানি ফুসে উঠায় আমার সব জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে।
স্থানীয় হাফিজুর রহমান,নাজমুল হাসান সহ আরও কয়েকজন কৃষক জানান নদীর পানি বাধাগ্রস্থ হয়ে প্রতিদিন মাঠে যে ভাবে পানি বাড়ছে তাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মাঠের ফসলের পাশা পাশি এই এলাকার বাড়ি ঘরও পানিতে তলিয়ে যাবে।
তাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভপতি ঠিকাদার আব্দুল জোব্বার বলেন, নাগর নদীর প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট নদীর গভীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে গেছে এই কচুরীপানা আটকে থাকায়। কচুরীপানার স্তুপ এতো শক্ত যে এর উপর দিয়ে মানুষ হাটা চলা করতে পারছে। আমি প্রতমিন্ত্রী আলহাজ এড জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি মহোদয়ের নির্দেশে গত ২ দিন ধরে ৫ গ্রাম থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করে কচুরী পানা সরানোর উদ্যোগ নিয়েছি।

তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, তাৎক্ষনিক ভাবে আমি প্রতিমিন্ত্রীর কাছে এব্যাপারে কথা বলেছি,ভিডিও ও ছবি পাঠিয়েছি। মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে যাতে জনসাধারনের কোন অসুবিধার সৃষ্টি না হয়। এই কচুরীপানা আটকে থাকায় তাজপুর ব্রীজও হুমকির মধ্যে রয়েছে। আসলে শ্রমিক দিয়ে এটা সম্ভব নয়। নদীর স্রোতের গতিপথ বিপরীত দিকে পরিবর্তন হলে অর্থাৎ  র্স্রোতের দিকের পরির্বতন হলে প্রাকৃতিক ভাবে এটা এমনিতেই সরে যাবে। তার পরও যতটুকু সম্ভব এই কচুরী পানা সরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর জেলা পানি উন্নয়ন কর্মকতা মোঃ আবু রায়হান মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন,নদী থেকে কচুরী পানি সরানোর দায়িত্ব আমাদের নয়। কচুরী পানা থেকে নদীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কি দায়িত্বের মধ্যে পড়েনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমি ওখানে লোক পাঠাবো তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখবে বিষয়টি যদি আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

সিংড়ায় কচুরীপানার কারণে ২ হাজার একর রোপা ধান ডুবে যাওয়ার আশংকা

Update Time : ১২:৪৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

মোঃ এনামুল হক বাদশা,সিংড়া(নাটোর) প্রতিনিধিঃ

নাটোরের সিংড়ায় বর্ষার পানি নাগর নদী দিয়ে নেমে আসার পথে প্রায় ২ কিঃমিঃ এলাকা জুড়ে বিশাল কচুরীপানার স্তুপ আটকে চলমান পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংলগ্ন ব্রীজে গত এক সপ্তাহ ধরে কচুরী পানার এই বিশাল স্তুপ আটকে এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃ পক্ষ কোন পদক্ষেপ নেননি বলে এলাকা বাসীর দাবি । এদিকে গত কয়েক দিন ধরে নদীর পানি নামতে না পারায় তাজপুর এবং পাশের ১০ থেকে ১২ টি গ্রামের মাঠের বর্ষাকালীন প্রায় ২ হাজার একর জমির রোপা ধান পানিতে ডুবে যাওয়ার আশংকা করছেন ওই এলাকার কৃষক। এছাড়া ২৫ থেকে ৩০ ফুট গভীর নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় তাজপুর ব্রীজও ঝুকির মধ্যে রয়েছে।
রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তাজপুর ব্রীজে আটকে থাকা কচুরীপানা পরিষ্কার করছেন ৫০ থেকে ৬০জন শ্রমিক। শ্রমিকরা জানান বিপদের মুখে বাধ্য হয়েই তাজপুর,খড়সতি, নওগাঁ, চক নওগাঁ,জয়নগর চক তাজপুর ভাদুরী পাড়া, কমরপুর মাহমুদপুর গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে গত ২ দিন ধরে এই কচুরীপানা সরিয়ে কিছুটা হলেও নদী পথে পানি নেমে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
তাজপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রহিদুল ইসলাম বলেন,আমি ২০ দিন আগে আমার ৭ বিঘা জমিতে চৌত্রিশ ধান রোপন করেছি। কিন্তু মাঠের পানি ফুসে উঠায় আমার সব জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে।
স্থানীয় হাফিজুর রহমান,নাজমুল হাসান সহ আরও কয়েকজন কৃষক জানান নদীর পানি বাধাগ্রস্থ হয়ে প্রতিদিন মাঠে যে ভাবে পানি বাড়ছে তাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মাঠের ফসলের পাশা পাশি এই এলাকার বাড়ি ঘরও পানিতে তলিয়ে যাবে।
তাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভপতি ঠিকাদার আব্দুল জোব্বার বলেন, নাগর নদীর প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট নদীর গভীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে গেছে এই কচুরীপানা আটকে থাকায়। কচুরীপানার স্তুপ এতো শক্ত যে এর উপর দিয়ে মানুষ হাটা চলা করতে পারছে। আমি প্রতমিন্ত্রী আলহাজ এড জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি মহোদয়ের নির্দেশে গত ২ দিন ধরে ৫ গ্রাম থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করে কচুরী পানা সরানোর উদ্যোগ নিয়েছি।

তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, তাৎক্ষনিক ভাবে আমি প্রতিমিন্ত্রীর কাছে এব্যাপারে কথা বলেছি,ভিডিও ও ছবি পাঠিয়েছি। মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে যাতে জনসাধারনের কোন অসুবিধার সৃষ্টি না হয়। এই কচুরীপানা আটকে থাকায় তাজপুর ব্রীজও হুমকির মধ্যে রয়েছে। আসলে শ্রমিক দিয়ে এটা সম্ভব নয়। নদীর স্রোতের গতিপথ বিপরীত দিকে পরিবর্তন হলে অর্থাৎ  র্স্রোতের দিকের পরির্বতন হলে প্রাকৃতিক ভাবে এটা এমনিতেই সরে যাবে। তার পরও যতটুকু সম্ভব এই কচুরী পানা সরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর জেলা পানি উন্নয়ন কর্মকতা মোঃ আবু রায়হান মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন,নদী থেকে কচুরী পানি সরানোর দায়িত্ব আমাদের নয়। কচুরী পানা থেকে নদীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কি দায়িত্বের মধ্যে পড়েনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমি ওখানে লোক পাঠাবো তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখবে বিষয়টি যদি আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।