Dhaka ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি-সরকারের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সব দলই বিব্রত : জামায়াত

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৩৭:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • 34

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের যৌথ সংবাদ সম্মেলন ইতিহাসের বিরল ঘটনা। এ ঘটনায় দেশের বাকি সব দলই কিছুটা বিব্রত। এখানেই আপত্তি ছিল জামায়াতে ইসলামীর।

বুধবার (১৮ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর অংশ না নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে এটিকেই উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নিরপেক্ষতা হারালে সরকারপ্রধান ও ঐকমত্য কমিশন বেশি দূর এগোতে পারবে না।

তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতের আমিরের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, এরপর প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতে ইসলামীর বক্তব্য অনুধাবনের চেষ্টা করেছেন। পরবর্তী সময়ে জামায়াতে ইসলামী বুধবারের আলোচনায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তাহের আরও বলেন, আমরা কখনোই সরকারকে ব্যর্থ করতে চাই না। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই।

বুধবারের আলোচনা প্রসঙ্গে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) গঠনের পক্ষে। এর মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে। তবে এনসিসির গঠন ও আওতা নিয়ে ভিন্নমতের কথা জানান তিনি।

এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছে জামায়াত। এ প্রসঙ্গে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগও এই কমিটির আওতায় না রাখার পক্ষে জামায়াতে ইসলামী। তবে বিষয়টি আরও আলোচনার দাবি রাখে।

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির যৌথ বৈঠক নিয়ে জামায়াতের আপত্তি

গত ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে আগামী রমজান শুরুর আগের সপ্তাহে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলা হয়। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিংয়েও আসেন অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির প্রতিনিধিরা।

ওই বৈঠকের পরদিন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বলা হয়, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন ও বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়; যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয়। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকে যে জামায়াত থাকবে না— এ বিষয়ে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। কারণ হিসেবে দলটি বলেছে, প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে জামায়াতকে ‘ইগনোর’ করা হয়েছে বলে মনে করে দলটি।

তবে গতকাল বৈঠকের পর বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা মনে করছি, আলোচনায় তারা অংশ নেবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

বিএনপি-সরকারের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সব দলই বিব্রত : জামায়াত

Update Time : ১২:৩৭:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের যৌথ সংবাদ সম্মেলন ইতিহাসের বিরল ঘটনা। এ ঘটনায় দেশের বাকি সব দলই কিছুটা বিব্রত। এখানেই আপত্তি ছিল জামায়াতে ইসলামীর।

বুধবার (১৮ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর অংশ না নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে এটিকেই উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নিরপেক্ষতা হারালে সরকারপ্রধান ও ঐকমত্য কমিশন বেশি দূর এগোতে পারবে না।

তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতের আমিরের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, এরপর প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতে ইসলামীর বক্তব্য অনুধাবনের চেষ্টা করেছেন। পরবর্তী সময়ে জামায়াতে ইসলামী বুধবারের আলোচনায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তাহের আরও বলেন, আমরা কখনোই সরকারকে ব্যর্থ করতে চাই না। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই।

বুধবারের আলোচনা প্রসঙ্গে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) গঠনের পক্ষে। এর মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে। তবে এনসিসির গঠন ও আওতা নিয়ে ভিন্নমতের কথা জানান তিনি।

এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছে জামায়াত। এ প্রসঙ্গে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগও এই কমিটির আওতায় না রাখার পক্ষে জামায়াতে ইসলামী। তবে বিষয়টি আরও আলোচনার দাবি রাখে।

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির যৌথ বৈঠক নিয়ে জামায়াতের আপত্তি

গত ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে আগামী রমজান শুরুর আগের সপ্তাহে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলা হয়। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিংয়েও আসেন অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির প্রতিনিধিরা।

ওই বৈঠকের পরদিন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বলা হয়, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন ও বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়; যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয়। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকে যে জামায়াত থাকবে না— এ বিষয়ে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। কারণ হিসেবে দলটি বলেছে, প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে জামায়াতকে ‘ইগনোর’ করা হয়েছে বলে মনে করে দলটি।

তবে গতকাল বৈঠকের পর বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা মনে করছি, আলোচনায় তারা অংশ নেবে।