কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে দুটি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া তিনজন হলেন উপজেলার দোনারচর গ্রামের মান্নানের ছেলে ইউসূফ আলী, নাজির চৌধুরীর স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও রাসেলের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার।
আরও পড়ুনঃ ডেঙ্গুতে এক দিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৫৯
পৌর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানায়, উপজেলার দাউদকান্দি পৌর সদরে ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দোনারচর, সবজিকান্দি, দাউদকান্দি, সাহাপাড়া, বলদাখাল ও তুজারভাঙ্গা গ্রামগুলোতে দ্রুত বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে দুই ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬ শতাধিক।
এদের মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, নারী-শিশু ও বৃদ্ধারা আক্রান্ত হয়েছেন।
মে মাস থেকে এ পর্যন্ত উপজেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৩ শতাধিক রোগী এবং রাজধানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনজন।
এতে পুরো পৌরসভা জুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরনের ভীতি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন খন্দকার সুমন বলেন, আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ঝোপঝাড় পরিষ্কার, জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করছি ও ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।
৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সরকার বলেন, আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনজন মারা গেছেন। এখনো প্রায় শতাধিক আক্রান্ত হয়েছেন।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ১০২ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৮ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এছাড়া উপজেলার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ২৫৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ডেঙ্গু রোগীদের তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে দুটি ওয়ার্ডকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে মশকনিধন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।