Dhaka ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬ হাজার সেনার মরদেহ, ১ হাজার যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে রাজি রাশিয়া-ইউক্রেন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • 43

রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয়েই ৬ হাজার করে মোট ১২ হাজার সেনার মৃতদেহ বিনিময়ে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি উভয় বাহিনীর যেসব সেনা আহত অবস্থায় বন্দি হয়েছেন, তাদেরকেও ছেড়ে দেওয়া হবে। এই সংখ্যা ১ হাজার জনেরও বেশি।

মে মাস থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে শান্তি সংলাপ শুরু করেছেন দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা। সেখানে এই সমঝোতায় তারা পৌঁছেছেন। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ। ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের যে প্রতিনিধিদলটি অবস্থান করছে, সেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা ‘অল-ফর-অল’ নীতির আওতায় উভয় পক্ষের গুরুতর আহত ও অসুস্থ সব সেনাদের মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছি। এছাড়া ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী সব সেনাকে মুক্তি দেওয়া হবে।”

“এছাড়া উভয়পক্ষ ৬ হাজার করে মোট ১২ হাজার সেনার মৃতদেহ বিনিময়ে সমঝোতা হয়েছে। আমরা এই যুদ্ধের জেরে যারা বন্দি হয়েছে এবং ইউক্রেনের যেসব শিশু অপহরণের শিকার হয়েছে— তারা সবাই যেন শিগগিরই মুক্তি পায়।”

ইস্তাম্বুলে অবস্থানরত রুশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাশিয়ার সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী এবং বর্তমানে পুতিনের সহকারী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি। সোমবার ইস্তাম্বুলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় যুদ্ধবন্দি ও মরদেহ বিনিময় সমঝোতায় পৌঁছেছি। ‘অল-ফর-অল’ নীতির আওতায় প্রথম ধাপে ৬ হাজার করে মৃত সেনা এবং গুরুতর আহত ও অসুস্থ সব সেনাকে মুক্তি দেওয়া হবে। পরের ধাপে উভয়পক্ষের ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী সব যুদ্ধবন্দি সেনা মুক্তি পাবে। এই সংখ্যাটি ১ হাজার জনের বেশি।”

“শুধু তাই নয়, আত্মীয়-স্বজনরা যেন মৃতদেহ এবং আহত ও অসুস্থ সেনাদের রিসিভ করতে আসতে পারেন, সেজন্য আমরা দুই অথবা তিন দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছি এবং কিয়েভ তাতে সম্মতি দিয়েছে। আমাদের সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে, খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে,” বলেছেন মেডিনস্কি।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, আড়াই বছরেরও বেশি সময় সবচেয়ে বড় এবং তাৎপর্যপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এটি তাৎপর্যপূর্ণ এই কারণে যে ১ জুন রোববার রাশিয়ার বিমানঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। বেশ অল্প সময়ের ব্যবধানে রাশিয়ার ৪টি বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে অন্তত ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। ১ জুনের এ হামলা ছিল রাশিয়ার বিমানঘাঁটিকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা।

সেই হামলার একদিন পরেই সেনাদের মরদেহ ও যুদ্ধাহত সেনাদের বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতায় পৌঁছাল রাশিয়া-ইউক্রেন।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

৬ হাজার সেনার মরদেহ, ১ হাজার যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে রাজি রাশিয়া-ইউক্রেন

Update Time : ০৩:১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয়েই ৬ হাজার করে মোট ১২ হাজার সেনার মৃতদেহ বিনিময়ে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি উভয় বাহিনীর যেসব সেনা আহত অবস্থায় বন্দি হয়েছেন, তাদেরকেও ছেড়ে দেওয়া হবে। এই সংখ্যা ১ হাজার জনেরও বেশি।

মে মাস থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে শান্তি সংলাপ শুরু করেছেন দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা। সেখানে এই সমঝোতায় তারা পৌঁছেছেন। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ। ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের যে প্রতিনিধিদলটি অবস্থান করছে, সেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা ‘অল-ফর-অল’ নীতির আওতায় উভয় পক্ষের গুরুতর আহত ও অসুস্থ সব সেনাদের মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছি। এছাড়া ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী সব সেনাকে মুক্তি দেওয়া হবে।”

“এছাড়া উভয়পক্ষ ৬ হাজার করে মোট ১২ হাজার সেনার মৃতদেহ বিনিময়ে সমঝোতা হয়েছে। আমরা এই যুদ্ধের জেরে যারা বন্দি হয়েছে এবং ইউক্রেনের যেসব শিশু অপহরণের শিকার হয়েছে— তারা সবাই যেন শিগগিরই মুক্তি পায়।”

ইস্তাম্বুলে অবস্থানরত রুশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাশিয়ার সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী এবং বর্তমানে পুতিনের সহকারী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি। সোমবার ইস্তাম্বুলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় যুদ্ধবন্দি ও মরদেহ বিনিময় সমঝোতায় পৌঁছেছি। ‘অল-ফর-অল’ নীতির আওতায় প্রথম ধাপে ৬ হাজার করে মৃত সেনা এবং গুরুতর আহত ও অসুস্থ সব সেনাকে মুক্তি দেওয়া হবে। পরের ধাপে উভয়পক্ষের ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী সব যুদ্ধবন্দি সেনা মুক্তি পাবে। এই সংখ্যাটি ১ হাজার জনের বেশি।”

“শুধু তাই নয়, আত্মীয়-স্বজনরা যেন মৃতদেহ এবং আহত ও অসুস্থ সেনাদের রিসিভ করতে আসতে পারেন, সেজন্য আমরা দুই অথবা তিন দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছি এবং কিয়েভ তাতে সম্মতি দিয়েছে। আমাদের সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে, খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে,” বলেছেন মেডিনস্কি।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, আড়াই বছরেরও বেশি সময় সবচেয়ে বড় এবং তাৎপর্যপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এটি তাৎপর্যপূর্ণ এই কারণে যে ১ জুন রোববার রাশিয়ার বিমানঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। বেশ অল্প সময়ের ব্যবধানে রাশিয়ার ৪টি বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে অন্তত ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। ১ জুনের এ হামলা ছিল রাশিয়ার বিমানঘাঁটিকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা।

সেই হামলার একদিন পরেই সেনাদের মরদেহ ও যুদ্ধাহত সেনাদের বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতায় পৌঁছাল রাশিয়া-ইউক্রেন।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি