পাকিস্তানের সঙ্গে ‘শর্তসাপেক্ষ’ যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত। এছাড়া সিন্দু নদ চুক্তি স্থগিত করে পাকিস্তানে পানির যে প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছিল সেটিও বিদ্যমান থাকবে বলে দেশটির একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
চারদিন ড্রোন ও মিসাইল হামলার পর শনিবার (১০ মে) যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় ভারত ও পাকিস্তান।
সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিতের পাশাপাশি ভিসা প্রদান, সীমান্ত বন্ধসহ ভারত আরও যেসব ব্যবস্থা নিয়েছিল সেগুলোও পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণার পর ভারতের পররাষ্টমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক্সে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানের মিলিটারি অপারেশন্সের প্রধান ভারতের মিলিটারি অপারেশন্স প্রধানের কাছে ফোন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। এরপর এতে রাজি হয় ভারত। যা স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে কার্যকর হয়। জয়শঙ্কর তার পোস্টে জানান, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের আপোসহীন নীতি চলমান থাকবে।
এছাড়া যুদ্ধবিরতির পর সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করে, তারা পাকিস্তানের বড় তিনটি মিসাইল হামলা শুধু প্রতিহতই করেনি; সঙ্গে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এতে করে পাকিস্তানের আকাশসীমা রক্ষার সামর্থ্য দুর্বল করে দিয়েছে তারা।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, পাকিস্তান ও ভারতের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে এই চুক্তি হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ওই ঘটনা নিয়েই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। যা পরবর্তীতে পূর্ণ সংঘাতে পরিণত হয়। পেহেলগামের হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ চুক্তি বাতিল করে। ৬০ বছর পুরোনো এ চুক্তির আওতায় পাকিস্তান সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাব নদী থেকে নির্বিঘ্নে পানি পাচ্ছিল। অপরদিকে ভারত পাচ্ছিল শতদ্রু, বিয়াস এবং রবি নদীর পানি।
কিন্তু ভারত চুক্তিটি স্থগিত করে পাকিস্তানে ওই তিনটি নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। তারা কাশ্মিরের দুটি জায়গায় হাইডো ইলেকট্রিক প্রজেক্টের জলাধারে আরও পানি জমিয়ে রাখার ব্যবস্থা করছে। এটি করে পাকিস্তানে পানির প্রবাহ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে তারা। এছাড়া ওই অঞ্চলে বন্ধ থাকা আরও ছয়টি প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি।
ভারত যখন সিন্ধুর পানি প্রবাহ বন্ধের উদ্যোগ নেয় তখন পাকিস্তান হুমকি দেয় বিষয়টিকে তারা যুদ্ধের কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করবে। তাদের হুমকি সত্ত্বেও সিন্ধুর পানি চুক্তি স্থগিত থাকবেই বলে জানিয়েছে সূত্রটি। যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে ‘শুধু সামরিক ক্ষেত্রে’— বলেন তিনি।
সূত্র: এনডিটিভি