Dhaka ০৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের আহ্বান, কুয়েট ভিসিকে আল্টিমেটাম

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১৬:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ২৯ Time View

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে কুয়েটের উপাচার্যকে (ভিসি) পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন তারা।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে ‘কুয়েট বাঁচাতে শাহবাগ ব্লকেড’ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

কুয়েটের শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতীকী অনশন পালনেরও আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে, বুধবার বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে, সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজিত একটি কর্মসূচি থেকে কুয়েটের উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে উপাচার্যকে অপসারণ করা না হলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ‘কুয়েট বাঁচাতে শাহবাগ অবরোধ’-এর ঘোষণা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার রাত ১০টার মধ্যে কুয়েটের উপাচার্য পদত্যাগ না করায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে এসে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। রাত ১১টার পরে আরও কয়েকশ শিক্ষার্থী তাদের সাথে অবরোধে যোগ দেন, ফলে রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। এরপর কর্মসূচি ঘোষণা করে রাত ১২টায় শাহবাগ সড়ক ত্যাগ করেন তারা।

এদিকে, কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একদল নেতাকর্মী। 

এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

তবে, কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থার মধ্যে ১৪ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া, বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম ৪ মে ও আবাসিক হলগুলো ২ মে খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তারা পরদিন ১৫ এপ্রিল দুপুরে একের পর এক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেই সঙ্গে উপাচার্যকে অপসারণের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কুয়েটের ৩২ জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। এর আগে, ২০ এপ্রিল এক দফা দাবি পূরণের জন্য আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

আজ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের আহ্বান, কুয়েট ভিসিকে আল্টিমেটাম

Update Time : ০৩:১৬:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে কুয়েটের উপাচার্যকে (ভিসি) পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন তারা।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে ‘কুয়েট বাঁচাতে শাহবাগ ব্লকেড’ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

কুয়েটের শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতীকী অনশন পালনেরও আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে, বুধবার বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে, সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজিত একটি কর্মসূচি থেকে কুয়েটের উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে উপাচার্যকে অপসারণ করা না হলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ‘কুয়েট বাঁচাতে শাহবাগ অবরোধ’-এর ঘোষণা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার রাত ১০টার মধ্যে কুয়েটের উপাচার্য পদত্যাগ না করায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে এসে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। রাত ১১টার পরে আরও কয়েকশ শিক্ষার্থী তাদের সাথে অবরোধে যোগ দেন, ফলে রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। এরপর কর্মসূচি ঘোষণা করে রাত ১২টায় শাহবাগ সড়ক ত্যাগ করেন তারা।

এদিকে, কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একদল নেতাকর্মী। 

এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

তবে, কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থার মধ্যে ১৪ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া, বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম ৪ মে ও আবাসিক হলগুলো ২ মে খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তারা পরদিন ১৫ এপ্রিল দুপুরে একের পর এক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেই সঙ্গে উপাচার্যকে অপসারণের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কুয়েটের ৩২ জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। এর আগে, ২০ এপ্রিল এক দফা দাবি পূরণের জন্য আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন।