Dhaka ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩৬০০, নিখোঁজ আরও শতাধিক

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:২৬:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ২১ Time View

কয়েক দশকের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রতিবেশী মিয়ানমারে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের নিচে এখনও শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

এছাড়া হতাহতদের সন্ধানে দেশটিতে এখনও উদ্ধার তৎপরাতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬০০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে সোমবার রাজ্য প্রশাসন পরিষদের তথ্য দল জানিয়েছে। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল আরও মৃতদেহ খুঁজে বের করার কাজ করছে বলেও জানিয়েছে তারা।

সিনহুয়া নিউজের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৫ হাজার ১৭ জন আহত হয়েছেন এবং এখনও আরও ১৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

গত ২৮ মার্চ ৭ দশমিক ৭ মাত্রার মহাশক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার। এরপর আরেকটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে দেশটিতে। দেশটিতে এক শতাব্দির বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে শত শত বছরের প্রাচীন গির্জা ও আধুনিক ভবনও ধসে যায়।

ভূমিকম্পের পর সর্বপ্রথম চীন, রাশিয়া এবং ভারত সেখানে উদ্ধারকারী পাঠায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দল মিয়ানমারে যায়। তারা ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও তাদের শনাক্ত করার কাজটি করছেন।

পৃথিবীতে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ সহায়তায়য় যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন দাতব্য সংস্থা ইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও মিয়ানমারকে ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। একইসঙ্গে দেশটি জানিয়ে দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে এমন চিন্তা করা অযৌক্তিক।

এদিকে সাগাইং অঞ্চলে ভূমিকম্পের পর উদ্ধার তৎপরতা ও মানবিক প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হয়েছে। সামরিক সরকারের অনুমোদন ছাড়া অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না সেখানে।

জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) জানিয়েছে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে সাগাইং অঞ্চলে কমপক্ষে ৬৯৩ জন মারা গেছেন, মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাব এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারের ধীরগতির কারণে উদ্ধার অভিযান বিলম্বিত হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ-এর প্রতিবেদনে সাগাইং-এর একজন বাসিন্দার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “উদ্ধার অভিযান কেবল কায়িক শ্রমের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। কারণ ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের জন্য ব্যাকহোর মতো কোনও ভারী যন্ত্রপাতি নেই। ফলস্বরূপ, অনেক মানুষ অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩৬০০, নিখোঁজ আরও শতাধিক

Update Time : ০৪:২৬:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

কয়েক দশকের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রতিবেশী মিয়ানমারে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের নিচে এখনও শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

এছাড়া হতাহতদের সন্ধানে দেশটিতে এখনও উদ্ধার তৎপরাতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬০০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে সোমবার রাজ্য প্রশাসন পরিষদের তথ্য দল জানিয়েছে। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল আরও মৃতদেহ খুঁজে বের করার কাজ করছে বলেও জানিয়েছে তারা।

সিনহুয়া নিউজের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৫ হাজার ১৭ জন আহত হয়েছেন এবং এখনও আরও ১৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

গত ২৮ মার্চ ৭ দশমিক ৭ মাত্রার মহাশক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার। এরপর আরেকটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে দেশটিতে। দেশটিতে এক শতাব্দির বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে শত শত বছরের প্রাচীন গির্জা ও আধুনিক ভবনও ধসে যায়।

ভূমিকম্পের পর সর্বপ্রথম চীন, রাশিয়া এবং ভারত সেখানে উদ্ধারকারী পাঠায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দল মিয়ানমারে যায়। তারা ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও তাদের শনাক্ত করার কাজটি করছেন।

পৃথিবীতে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ সহায়তায়য় যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন দাতব্য সংস্থা ইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও মিয়ানমারকে ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। একইসঙ্গে দেশটি জানিয়ে দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে এমন চিন্তা করা অযৌক্তিক।

এদিকে সাগাইং অঞ্চলে ভূমিকম্পের পর উদ্ধার তৎপরতা ও মানবিক প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হয়েছে। সামরিক সরকারের অনুমোদন ছাড়া অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না সেখানে।

জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) জানিয়েছে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে সাগাইং অঞ্চলে কমপক্ষে ৬৯৩ জন মারা গেছেন, মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাব এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারের ধীরগতির কারণে উদ্ধার অভিযান বিলম্বিত হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ-এর প্রতিবেদনে সাগাইং-এর একজন বাসিন্দার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “উদ্ধার অভিযান কেবল কায়িক শ্রমের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। কারণ ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের জন্য ব্যাকহোর মতো কোনও ভারী যন্ত্রপাতি নেই। ফলস্বরূপ, অনেক মানুষ অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।”