Dhaka ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বয়স : হাবিবুর রহমান

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৫৬:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২০
  • ২০০ Time View
ছোট গল্প :   বয়স
কবি হাবিবুর রহমান
রাত। মাহিম বাড়িতে যায়নি। তার বাবা মাও কিছু বলেনা। কেননা ছেলে বি এ পাশ করেছে। মাহিম ও তার বন্ধু শিবলু বট গাছের নিচে।
মাহিম বলল,”চল যাই। “
শিবলু বলল,”না দোস্ত আমি যাবনা। “
মাহিম বলল,”অভ্যেস কর,পরে পারবিনা। “
শিবলু কিছু বলল না।
মাহিম বাস্তির এক ঘরে চলে গেল। শিবলু বট তলায় বসে রইলো। চারদিকে অন্ধকার। কেউ নেই। দিনের বেলায় যে দু একজন ভদ্র তারা বস্তির দিকে ছুটে।
দু একটি মরা বটের পাতা শিবলুর গায়ে এসে পড়ে। শিবলুর বিরক্ত লাগে। আধা ঘন্টা কেটে গেল। এখন রাত বারটা।
 জামা খুলে মাহিম গায়ে বাতাস করতে করতে এলো। শিবলু চেচিয়ে বলল,”গায়ে হাত দিবিনা। “
মাহিম হেসে বলল,”তুই মেয়ে নাকি। “
শিবলু বলল,”তুই অপবিত্র। “
তারপর কেউ কিছু বলল না। হাটতে থাকলো। শিবলু ও মাহিমের বাড়ি পাশাপাশি।
বাড়ি হতে বাড়ন শিবলু যেন মাহিমের সাথে না মিশে।
যে যার বাড়িতে চলে গেল।
মাহিমের বাড়ির দরজা খোলাই থাকে। মাহিম ঘরে আসে। গোসল সারে। খাবার খায়। তার বাবা মা আগেই ঘুমিয়ে গেছে।
শিবলুর দরজা বন্ধ।
শিবলু আর জীবনেও মাহিমের সাথে ঘুরবেনা। মশার কামড় খেতে খেতে রাতটাই গেল।
শিবলুর মা জানালার পাশে এলো বলল,”বাহিরেই থাক তোর এটাই শাস্তি। “
শিবলু কিছু বলেনা।
অপরাধ তো তার। শয়তান বন্ধুর সঙ্গ নিলে এমনি হয়।
সকাল।
শিবলু বাড়ির ভেতর গেল। বাবা মা গালি গালাজ করলো। মাহিম ফোন দিল। শিবলু ধরলো না।
কয়েকদিন কেটে গেল।
মাহিম বস্তি পাড়ায় একাই যায়। তার নেশা। বস্তিতে না গেলে ঘুম আসেনা। পুরাতন অভ্যাস।
অপরদিকে শিবলু পড়ায় মন দিল। আর কোনো বন্ধুর সাথে মিশেনা। বিশেষ করে মাহিমের সাথে। বেশ কয়েক মাস কেটে যায়। মাহিমের মাথার চুল অনেক উঠে গেছে।
আর ভালো বন্ধুরাও তার সাথে মিশেনা। সঙ্গ মন্দ। নিয়মিত বস্তিতে যায়। টাকা দিয়ে যৌবনের চাহিদা মিটায়।
বাড়ির শাসন নেই। সবাই জানে মাহিম ভালো ছেলে। অপরদিকে শিবলুর বাবা মা শিবলুকে বিয়ে দেয়।
আরও কয়েক মাস কেটে যায়। শিবলু বউ মা বাবা নিয়ে সুখেই আছে।
অপরদিকে মাহিম শুধু টাকা খরচ করছে আর ঢালছে। নেশাও করে।
পরিবার মনে করে তার ছেলে ভালোই আছে। এখনও বয়স হয়নি।
দিন রাত মাহিম নেশায় মেতে থাকে। খারাপ বন্ধুর সঙ্গ পায়। অঢেল টাকা থাকলে খারাপ বন্ধুর অভাব হয়না।
তিন বছর কেটে গেল।
রাত। মাহিম ও শামিম বাস্তি পাড়ায়।
মাহিম বলল,”চল ঢুকি। “
শামিম বলল,”এক ঘরেই যাই। “
মাহিম বলল,”এক মাগিতেই নেশা।”
শামিম বলল,”কথা না কই দোস্ত,নেশা ধরেছে। “
গভীর রাত। শামিম ও মাহিম মাগি ঘরে আটকা পড়ে। সে রাতেই শালিস বসে। এক লাখ টাকা জড়িমানা দিয়ে  মাহিমের বাপ মাহিমকে নিয়ে যায়।
মাহিমের দিনে দিনে আরও অপরাধ বাড়তে থাকে।
পরের মাসে দুবার বস্তি পাড়ায় আটকা পড়ে। হাজী ছবিরের তো মান আর থাকেনা। কি করার এক মাত্র ছেলে। মান সম্মান আর থাকলো না।
এবার বাপ মা সিদ্ধান্ত নিল মাহিমকে তারা বিয়ে দিবে। কিন্তু মেয়ে পায়না। কেউ চরিত্রহীন মাহিমের হাতে মেয়ে দিতে চায়না। লুচ্চারা কখনও ভালো হয়না। লুচ্চা ভালো হবার নয়। কার এতো মেয়ে বেশি যে গাঙ্গে ফেলে দিবে। মাহিম বস্তিতেই পড়ে থাকে। অপরদিকে বাবা মার কষ্ট বাড়তে থাকে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

বয়স : হাবিবুর রহমান

Update Time : ১১:৫৬:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২০
ছোট গল্প :   বয়স
কবি হাবিবুর রহমান
রাত। মাহিম বাড়িতে যায়নি। তার বাবা মাও কিছু বলেনা। কেননা ছেলে বি এ পাশ করেছে। মাহিম ও তার বন্ধু শিবলু বট গাছের নিচে।
মাহিম বলল,”চল যাই। “
শিবলু বলল,”না দোস্ত আমি যাবনা। “
মাহিম বলল,”অভ্যেস কর,পরে পারবিনা। “
শিবলু কিছু বলল না।
মাহিম বাস্তির এক ঘরে চলে গেল। শিবলু বট তলায় বসে রইলো। চারদিকে অন্ধকার। কেউ নেই। দিনের বেলায় যে দু একজন ভদ্র তারা বস্তির দিকে ছুটে।
দু একটি মরা বটের পাতা শিবলুর গায়ে এসে পড়ে। শিবলুর বিরক্ত লাগে। আধা ঘন্টা কেটে গেল। এখন রাত বারটা।
 জামা খুলে মাহিম গায়ে বাতাস করতে করতে এলো। শিবলু চেচিয়ে বলল,”গায়ে হাত দিবিনা। “
মাহিম হেসে বলল,”তুই মেয়ে নাকি। “
শিবলু বলল,”তুই অপবিত্র। “
তারপর কেউ কিছু বলল না। হাটতে থাকলো। শিবলু ও মাহিমের বাড়ি পাশাপাশি।
বাড়ি হতে বাড়ন শিবলু যেন মাহিমের সাথে না মিশে।
যে যার বাড়িতে চলে গেল।
মাহিমের বাড়ির দরজা খোলাই থাকে। মাহিম ঘরে আসে। গোসল সারে। খাবার খায়। তার বাবা মা আগেই ঘুমিয়ে গেছে।
শিবলুর দরজা বন্ধ।
শিবলু আর জীবনেও মাহিমের সাথে ঘুরবেনা। মশার কামড় খেতে খেতে রাতটাই গেল।
শিবলুর মা জানালার পাশে এলো বলল,”বাহিরেই থাক তোর এটাই শাস্তি। “
শিবলু কিছু বলেনা।
অপরাধ তো তার। শয়তান বন্ধুর সঙ্গ নিলে এমনি হয়।
সকাল।
শিবলু বাড়ির ভেতর গেল। বাবা মা গালি গালাজ করলো। মাহিম ফোন দিল। শিবলু ধরলো না।
কয়েকদিন কেটে গেল।
মাহিম বস্তি পাড়ায় একাই যায়। তার নেশা। বস্তিতে না গেলে ঘুম আসেনা। পুরাতন অভ্যাস।
অপরদিকে শিবলু পড়ায় মন দিল। আর কোনো বন্ধুর সাথে মিশেনা। বিশেষ করে মাহিমের সাথে। বেশ কয়েক মাস কেটে যায়। মাহিমের মাথার চুল অনেক উঠে গেছে।
আর ভালো বন্ধুরাও তার সাথে মিশেনা। সঙ্গ মন্দ। নিয়মিত বস্তিতে যায়। টাকা দিয়ে যৌবনের চাহিদা মিটায়।
বাড়ির শাসন নেই। সবাই জানে মাহিম ভালো ছেলে। অপরদিকে শিবলুর বাবা মা শিবলুকে বিয়ে দেয়।
আরও কয়েক মাস কেটে যায়। শিবলু বউ মা বাবা নিয়ে সুখেই আছে।
অপরদিকে মাহিম শুধু টাকা খরচ করছে আর ঢালছে। নেশাও করে।
পরিবার মনে করে তার ছেলে ভালোই আছে। এখনও বয়স হয়নি।
দিন রাত মাহিম নেশায় মেতে থাকে। খারাপ বন্ধুর সঙ্গ পায়। অঢেল টাকা থাকলে খারাপ বন্ধুর অভাব হয়না।
তিন বছর কেটে গেল।
রাত। মাহিম ও শামিম বাস্তি পাড়ায়।
মাহিম বলল,”চল ঢুকি। “
শামিম বলল,”এক ঘরেই যাই। “
মাহিম বলল,”এক মাগিতেই নেশা।”
শামিম বলল,”কথা না কই দোস্ত,নেশা ধরেছে। “
গভীর রাত। শামিম ও মাহিম মাগি ঘরে আটকা পড়ে। সে রাতেই শালিস বসে। এক লাখ টাকা জড়িমানা দিয়ে  মাহিমের বাপ মাহিমকে নিয়ে যায়।
মাহিমের দিনে দিনে আরও অপরাধ বাড়তে থাকে।
পরের মাসে দুবার বস্তি পাড়ায় আটকা পড়ে। হাজী ছবিরের তো মান আর থাকেনা। কি করার এক মাত্র ছেলে। মান সম্মান আর থাকলো না।
এবার বাপ মা সিদ্ধান্ত নিল মাহিমকে তারা বিয়ে দিবে। কিন্তু মেয়ে পায়না। কেউ চরিত্রহীন মাহিমের হাতে মেয়ে দিতে চায়না। লুচ্চারা কখনও ভালো হয়না। লুচ্চা ভালো হবার নয়। কার এতো মেয়ে বেশি যে গাঙ্গে ফেলে দিবে। মাহিম বস্তিতেই পড়ে থাকে। অপরদিকে বাবা মার কষ্ট বাড়তে থাকে।