ক্রীড়া ডেস্ক:

জিম্বাবুয়ের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর এবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচও হারল বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েয়ের কাছে পাঁচ উইকেটে হেরে গেছে সফরকারীরা। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ বড় সংগ্রহ ৩০৩ রান সংগ্রহ করলেও জিম্বাবুয়ের ইনোসেন্ট কাইয়া ও সিকান্দার রাজা শতক তুলে নিয়ে সহজেই জয় পায় স্বাগতিকরা।

বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া ৩০৪ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের প্রথম ওভার থেকে টাইগার বোলারদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। ইনিংসের প্রথম দুই ওভারের ভেতর মুস্তাফিজুর রহমান ও শরীফুল ইসলামের বোলিং তোপ সামলাতে না পেরে সাজঘরে ফেরার পথ বেছে নেন দুই রোডেশিয়ান ওপেনার রেগিস চাকাভবা ও তারিসাই মুসাকান্দা। মুস্তাফিজের শিকার বনে ২ রানে মাঠ ছাড়েন চাকাভবা আর শরীফুল তুলে নেন মুসাকান্দার উইকেট। ৬ রানে ২ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

শুরুর সেই ধাক্কা অনেকটাই সামলে নেন মেদভেরে আর ইনোসেন্ট কায়া। তাদের জুটিটা থিতু হয়ে গিয়েছিল। ৬৮ বলে ৫৬ রানের এই জুটিটি শেষতক ভাঙে রানআউটে। এর পরে ১৯ রানে আউট হয়ে ঘরে ফেরেন মেদভেরে। ১৪তম ওভারে এসে ৬২ রানে ৩ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

এরপরই কায়া আর সিকান্দার রাজার প্রতিরোধ গড়া জুটি। এই জুটিই ম্যাচ জিম্বাবুয়ের হাতে তুলে দেয়। ১৭২ বলে তাদের ১৯২ রানের ঝড়ো জুটিটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন মোসাদ্দেক, ইনিংসের ৪২তম ওভারে। স্লগ করতে গিয়ে ইনোসেন্ট কায়া টপ এজ হন। ১২২ বলে ১১ চার আর ২ ছক্কায় জিম্বাবুইয়ান এই ব্যাটার খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ১১০ রানের ইনিংস।

এর আগে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টস জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। প্রিয় সংস্করণে আগে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু এনে দেন সফরকারীদের দুই ওপেনার। তামিম ইকবাল আর লিটন দাসের ফিফটির পর তাদের দেখানো পথ ধরে ইনিংস গড়ে অর্ধশতক পেয়েছেন প্রায় ৩ বছর পর ওয়ানডেতে ফেরা এনামুল হক বিজয় ও বিরতি কাটিয়ে ফেরা মুশফিকুর রহিম।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেন বর্তমান অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সবার আগে ৮ হাজার রানের মাইলফলকে প্রবেশ করলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৫৭তম রান নেওয়ার মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৮ হাজার রান পূরণ হয় তামিমের।

তবে এরপর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি তামিম। ইনিংসের ২৬তম ওভারে সিকান্দার রাজার বলে আউট হওয়ার আগে ৮৮ বলে ৬২ রান করেছেন টাইগার অধিনায়ক। যা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৪তম হাফসেঞ্চুরি।

লিটন দাস দারুণ ব্যাটিং করছিলেন। এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ব্যক্তিগত ৮১ রানে এসে হঠাৎ পায়ে টান পড়ে ডানহাতি এই ব্যাটারের। এমনই অবস্থা যে উঠে দাঁড়াতেও পারলেন না। ফলে স্ট্রেচারে শুয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে।

এরপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ৭৬ বলে ৯৬ রানের ঝড়ো এক জুটি গড়েন এনামুল হক বিজয়। ছক্কা মেরে ৪৭ বলে ফিফটি পূরণ করেন বিজয়। ব্যক্তিগত ৭১ রানে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন ডিপ কভারে। কিন্তু এনগারাভার বলে সেই ক্যাচ ফেলে দেন মাদভেরে।

যদিও সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিন বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা বিজয়। নিজের নামের সঙ্গে আর দুই রান যোগ করেই ফের ক্যাচ তুলে দেন লংঅনের আকাশে। মুসাকান্দা সেটা তালুবন্দী করলে উইকেট পান নিয়াচি। ৬১ বলে বিজয়ের ৭৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৬ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কার মার।

এরপর মাহমুদউল্লাহ আর মুশফিকুর রহিম ২৫ বলে ৩৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে তিনশো পার করে দেন। মুশফিক ৪৯ বলে ৫ বাউন্ডারিতে অপরাজিত থাকেন ৫২ রানে। ১২ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২০ করেন মাহমুদউল­াহ। চারজনের ফিফটির ওপর ভর করে ৫০ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ৩০৩ রানের বিশাল সংগ্রহ দাড় করে বাংলাদেশ দল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে