Dhaka ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবন জঙ্গলে বাঘের আক্রমণে দুই মৎস্যজীবির মৃত্যু, স্বজনদের আহাজারি

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১৪:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২১
  • ৫২ Time View

তপনকান্তি মণ্ডল, বিশেষ প্রতিনিধি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা:

মাত্র চার দিনের ব্যবধানে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের আক্রমণে দুই মৎস্যজীবির মৃত্যু হলো।

রবিবার সকালে চারজন সঙ্গী নিয়ে নিরঞ্জন কয়াল কাঁকড়া ধরার উদ্দেশ্যে মরিচঝাঁপি জঙ্গলে রওনা হয়। কাঁকসা খালে নৌকা রেখে কাঁকড়া ধরতে নামলে হঠাৎ করেই নিরঞ্জন কয়াল (৫১) বাঘের শিকার হয়। স্বভাবসিদ্ধ ভাবে সবার অগোচরে বাঘটি তাকে নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে যায়। সেসময় সঙ্গীরা কেউ কাছাকাছি ছিল না। সহযাত্রী মনোরঞ্জন মণ্ডল, তরুবালা মণ্ডল, কিশোরী মণ্ডল, কমলা মণ্ডল সকলেই গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন কোস্টাল থানার অন্তর্গত সাতজেলিয়া পঞ্চায়েতের আনন্দপুর গ্ৰামের অধিবাসী। দারিদ্র্য এদের নিত্য সঙ্গী। তাই সরকারি অনুমতির পরোয়া না করে পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজ করতে হয়। উল্লেখ্য যে, গত বৃহস্পতিবার অন্ন দাস (৩৫) নামে এক মৎস্যজীবি বাঘের আক্রমণে মারা যায়। কয়েক বছর আগে নিরঞ্জনের দাদা অনাথবন্ধুও একই ভাবে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারায়।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীরা একে অন্যের খোঁজ পেলেও নিরঞ্জন কয়াল ফিরে না আসায় সকলে রীতিমতো জঙ্গল তল্লাশি করে। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত তাকে পাওয়া যায়নি। বনদপ্তরের কর্মীরাও অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। দিনের শেষে এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিরঞ্জনের স্ত্রী নমিতা কয়াল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সংসারে উপার্জনের আর কেউ থাকলোনা। এখনো স্থানীয় প্রশাসন বা সরকারি সাহায্যের কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে জেলা পরিষদ সদস্য অনিমেষ মণ্ডল পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

সুন্দরবন জঙ্গলে বাঘের আক্রমণে দুই মৎস্যজীবির মৃত্যু, স্বজনদের আহাজারি

Update Time : ১২:১৪:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২১

তপনকান্তি মণ্ডল, বিশেষ প্রতিনিধি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা:

মাত্র চার দিনের ব্যবধানে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের আক্রমণে দুই মৎস্যজীবির মৃত্যু হলো।

রবিবার সকালে চারজন সঙ্গী নিয়ে নিরঞ্জন কয়াল কাঁকড়া ধরার উদ্দেশ্যে মরিচঝাঁপি জঙ্গলে রওনা হয়। কাঁকসা খালে নৌকা রেখে কাঁকড়া ধরতে নামলে হঠাৎ করেই নিরঞ্জন কয়াল (৫১) বাঘের শিকার হয়। স্বভাবসিদ্ধ ভাবে সবার অগোচরে বাঘটি তাকে নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে যায়। সেসময় সঙ্গীরা কেউ কাছাকাছি ছিল না। সহযাত্রী মনোরঞ্জন মণ্ডল, তরুবালা মণ্ডল, কিশোরী মণ্ডল, কমলা মণ্ডল সকলেই গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন কোস্টাল থানার অন্তর্গত সাতজেলিয়া পঞ্চায়েতের আনন্দপুর গ্ৰামের অধিবাসী। দারিদ্র্য এদের নিত্য সঙ্গী। তাই সরকারি অনুমতির পরোয়া না করে পেটের দায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজ করতে হয়। উল্লেখ্য যে, গত বৃহস্পতিবার অন্ন দাস (৩৫) নামে এক মৎস্যজীবি বাঘের আক্রমণে মারা যায়। কয়েক বছর আগে নিরঞ্জনের দাদা অনাথবন্ধুও একই ভাবে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারায়।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীরা একে অন্যের খোঁজ পেলেও নিরঞ্জন কয়াল ফিরে না আসায় সকলে রীতিমতো জঙ্গল তল্লাশি করে। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত তাকে পাওয়া যায়নি। বনদপ্তরের কর্মীরাও অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। দিনের শেষে এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিরঞ্জনের স্ত্রী নমিতা কয়াল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সংসারে উপার্জনের আর কেউ থাকলোনা। এখনো স্থানীয় প্রশাসন বা সরকারি সাহায্যের কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে জেলা পরিষদ সদস্য অনিমেষ মণ্ডল পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।