সুবীর মণ্ডল, বাঁকুুুড়া জেলা প্রতিনিধি:

কেন্দ্রীয় সরকারের পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ‍্যাস ও ভোজ‍্য তেলের লাগামছাড়া মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন  ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে  প্রতিবাদ- সমাবেশ  কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি  ব্লকের পেট্রোল পাম্পের সামনে গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে  বক্তব্য রাখেন  তৃণমূল কংগ্রেসের  নেতৃত্ববৃন্দ। প্রচুর মানুষের সমাবেশ ঘটে  সর্বত্রই। সাধারণ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি  একটা  আতঙ্ক  সৃষ্টি করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই জনবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ  সাধারণ মানুষেরও  । নিত্য প্রয়োজনীয়  জিনিসপত্রের দাম  বৃদ্ধির পেছনে  মূল কারণ পেট্রোল,ডিজেল ও রান্নার    গ্যাসের  লাগামছাড়া মূল্য বৃদ্ধি বলে মনে করছে  ভুক্তভোগীরা । পরিবহন খরচ বেড়ে চলেছে। ফলে   ক্রেতাদের উপর  চাপছে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা। দিশেহারা হয়ে পড়েছে  সাধারণ মানুষ সহ সবাই। ফলশ্রুতি জনমানসে কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবমূর্তিতে কালি লাগছে।   সরকারের  প্রতি  বিরূপ মনোভাব  সৃষ্টি  হচ্ছে  । সাধারণ মানুষের অভিমত, এর দায়   স্বীকার করে কেন্দ্রীয় সরকার   কিছু  সুরাহা করুক ।এর প্রভাব পড়েছে  হেঁসেলে। মানুষ হতাশ  হয়ে পড়েছে।  সংসার  চালাতে হিমসিম খাচ্ছে  সাধারণ মানুষ। এর থেকে  মুক্তির কথা ভাবছে। রোজগার  একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তারপর  আকাশ  ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি ‘,মরার উপরে খাঁড়ার ঘা’। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ক্ষত হেঁসেলে ভীষণ প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।  বাঁকুুুড়া জেলার অন্যান্য ব্লকের মতোই খাতড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে  পেট্রোল ও ডিজেলের অস্বাভাবিক   মূল্যবৃদ্ধি -র প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচিত অনুষ্ঠিত হয় খাতড়া মহকুমা শহরের প্রাণকেন্দ্র করালীর মোড়ে। সমাবেশ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা  পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।বহু  মানুষের  সমাগম ঘটে । উপস্থিত ছিলেন  তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা  সহ সভাপতি, খাতড়া মহকুমা শহরের জনপ্রিয় নেতা  শ্রী  মানিক মিত্র, ব্লক  সভাপতি শ্রী  আনন্দ মোহন মাহাত,খাতড়া শহর সভাপতি শ্রী  উদয় সেনগুপ্ত মহাশয়  সহ সাতটি অঞ্চলের সভাপতি ও  বিভিন্ন  নেতৃত্ববৃন্দ।

জেলা সহ সভাপতি মানিক মিত্র মহাশয় বক্তব্যে জানালেন, ”  আজ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য আকাশ ছোঁয়া। মানুষ  চরম দুর্ভোগে পড়েছে। একটার পর একটা, জনবিরোধী নীতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আর নৈতিকভাবে সরকারে থাকা  উচিত নয়; আগামী ২০২৪ সালে বি,জে,পি মুক্ত সরকার গঠনের  লক্ষ্যে  আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি  লাগাতার  চালিয়ে যেতে চাই  এবং  সেই সাথে  সাধারণ মানুষকে  নিয়ে  জনমত গড়ে তুলতে সচেষ্ট হব।”    ব্লক  সভাপতির বক্তব্যেও একই সুর। তবে  ভিন্ন  সুরও শোনা গেল  , ইন্দপুর ব্লকের শিক্ষক  মহাশয়  দেবদুলাল সাহানা কথায়, তাঁর   মন্তব্য  ,” অস্বাভাবিক  পেট্রাপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য  কম-বেশি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী।

বাঁকুুুড়া জেলার    ধলডাঙ্গা পেট্রোল পাম্পেও সমাবেশ করে  অবস্থান বিক্ষোভ হয়।
পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ‍্যাস ও ভোজ‍্য তেলের লাগামছাড়া মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাঁকুড়া ব্লক 2 -এর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শালবনি পেট্রল পাম্পে অবস্থান বিক্ষোভ হয় । পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাস এর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিষ্ণুপুর ব্লক এর জয়কৃষ্ণ পেট্রোল পাম্প এর সামনে বিক্ষোভ মিছিলে উপস্তিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলার সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি সৈয়দ হাবিবুর রহমান সাহেব, বিষ্ণুপুর ব্লক সভাপতি শুশান্ত মুখার্জী ,মহাদেব দে, অভিজিত সিং ও অন্যান্যরা।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য এইভাবে লাগামছাড়া মূল্য বৃদ্ধি  মানুষের বেঁচে থাকা কষ্ট হয়ে উঠেছে  ।বিভিন্ন  প্রেট্রল পাম্পের মালিক ও ম্যানেজারদের  সঙ্গে কথা কথা বলে  জানা গেছে, দিন  দিন বিক্রি  কমছে । খুব  প্রয়োজন  না হলে  পেট্রোল– ডিজেল মানুষ কিনতে না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বৃদ্ধি পেয়েছে  লাগামছাড়া। ভুক্তভোগীরা নিজেদের  কষ্টের কথা  বলেছেন। ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে  সাধারণ-মধ্যবিত্ত সমাজের মানুষ। তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রতিবাদ আন্দোলন সাধারণ মানুষের  সমর্থন   পাচ্ছে  বলে মনে হচ্ছে।    এছাড়া  ইন্দপুর, তালডাংরা,  সারেঙ্গা, ,বিষ্ণুপুর, বড়জোড়া, সোনামুখী,  রানিবাঁধ, বেলিয়াতোড়, কোতুলপুর, রাইপুরসহ সর্বত্রই আন্দোলন ও  সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ।
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কবে কমবে ?কেউ  জানে না।  চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে  মধ্যবিত্ত ও সাধারণ প্রান্তভূমির মানুষ দিন কাটাচ্ছে।  দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।সেই সঙ্গে  করোনার আবহে  মূল্যবৃদ্ধি একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে  সাধারণ মানুষের মধ্যে। তীব্র  অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন  বিভিন্ন ধরণের পেশার মানুষ। জনমত গড়ে উঠেছে সাধারণ-মধ্যবিত্তের মধ্যে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত সাধারণ মানুষের জন্য  ইতিবাচক  পদক্ষেপ গ্রহণ  না করলে এক সময়ে  তীব্র আন্দোলনের  পথে সাধারণ মানুষও   নামতে বাধ্য হতে পারে বলে মনে  হচ্ছে।একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, করোনার  দুঃসময়ে   পরিবার- পরিজনদের  নিয়ে সংসার চালাতে পারবে কি  সাধারণ মানুষ? এটাই  লাখ টাকার প্রশ্ন!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে