Dhaka ১২:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অতিবৃষ্টির জেরে দক্ষিণ বাঁকুড়ায় সবজির বাজারে আগুন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১
  • ৮৩ Time View

সুবীর মণ্ডল, বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি:

খাতড়া মহকুমা তথা দক্ষিণ বাঁকুড়ায় অতিবৃষ্টির জেরে  সব ধরনের সবজির দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায়  সাধারণ-মধ্যবিত্তের হেঁসেলে ভীষণ টান পড়েছে। একদিকে করোনার আবহ ও লকডাউনে সাধারণ গরিব মানুষের রোজগার একেবারেই  তলানিতে গিয়ে  ঠেকেছে। তার ওপর অনেক আগেই  তেল–মশলার দাম আকাশছোঁয়া।  দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অতিবৃষ্টির কারণে মাঠের পর মাঠ জলের তলায়। সমস্ত  সবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। সবজি  উৎপাদন একদম কমে গেছে। খাতড়া শহরের বিভিন্ন সবজি বাজারে, সবজি বিক্রেতার কাছে সবজি বাইরে থেকে আসছে না। যে টুকু   সবজি  পাওয়া যাচ্ছে, দাম আকাশছোঁয়া। নিত্য প্রয়োজনীয়  কুমড়ো, বরবটি,লাউ,পেঁপে,ঢেঁড়শ,ঝিঙে,পটলের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ-মধ্যবিত্তের হেঁসেলে ভীষণ  সমস্যা  হচ্ছে, অনেকেই আলু আর ডাল, ডিমের  উপর নির্ভর করছে।  বাজারের থলি ভরছে না, শাকসবজি দাম কবে কমবে? কেউ  জানে না।   কিছু দিন আগে আলু ও পেঁয়াজের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ-মধ্যবিত্তের  সমস্যা ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দক্ষিণ বাঁকুড়ার সবজি  উৎপাদন এলাকা হলো, খাতড়া, সাবড়াকোন, সিমলাপাল, লক্ষীসাগর, রাইপুর, সারেঙ্গার ,ইন্দপুর, হীড়বাধের রাঙামাটি, মলিয়ান,হাতিরামপুর।এই সব এলাকায়  সমস্ত সবজি ক্ষেত জলের তলায় ছিল  বেশ কিছু দিন।

দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার বাজার ও হাটে    বাইরে থেকে আসা সবজির পরিমাণ দিন দিন কমছে। বিশেষ করে  ব্লক শহরের  সবজির দাম খুব বেশি। খাতড়া মহকুমার  শহরের  বিভিন্ন সবজির দাম সম্বন্ধে  শহরে বসবাস করেন  শিক্ষক অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন  — কেজি প্রতি দর  শশা ৭০ টাকা , পটল ৪০,করলা -১০০, বেগুন -৬০,বরবটি -৪০, লাউ-৪০, কুমড়ো,- ২৫,  ঢেড়শ-৪০ টাকা।   খাতড়া  শহরের  প্রধান বাজার চকবাজার ও পাপড়ার ব্রিজ বাজার।এখানকার সবজি  চাষিদের  ক্ষোভ  দাম কমবে কি করে?  ,আমদানি নেই। পরিবহন খরচ বাড়ায় মাছের বাজারে আগুন ধরে গেছে। দেশি মাছ,মুরগির  দাম আকাশছোঁয়া। পোলট্রি  ডিমের দাম বেড়েছে ভালোই । খাতড়া শহরের  মানুষের অভিযোগ, সুযোগ বুঝে ফড়েরা ইচ্ছে মতো  দাম বাড়াচ্ছে। বাজার  দেখভাল করার জন্য  সরকারি উদ্যোগ নেই।  খাতড়া শহরের সবজি ব্যবসায়ীরা বলেন, উৎপাদন কম ও বাইরে থেকে  সবজি  না আসায় ,সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। রাইপুরের সবুজ বাজারের ব্যবসায়ী সনাতন  দুলে বললেন, ” ক্রেতাদের কাছে কম দামে টাটকা সবজি  পৌঁছে দেওয়াই   আমাদের কাজ,কিন্তু  অতিবৃষ্টির জন্য  সমস্ত সবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে  আমরাও  ক্ষতিগ্রস্ত  হচ্ছি।” সিমলাপালের  বেশ কয়েক জন  চাষীর বক্তব্য  হলো, কবে আমরা আবার  সবজি উৎপাদন করতে পারবো  জানি না, আমাদের পরিবারের সবাই কি ভাবে  বাঁচবে , জানিনা। কেউ কেউ বলেন,সরকার যদি এই সময়ে  আমাদের  পাশে দাঁড়াতো তাহলে  ঘুরে  দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতাম। ” ।খাতড়া  পঞ্চায়েত সমিতির কৃষিকর্মাধ্যক্ষ মাননীয় সুব্রত মহাপাত্র মহাশয় জানালেন, আমরা সবজি  চাষীদের মধ্যে বীজ ও সার বিতরণ করার  উদ্যোগ নিয়েছি।চাষীদের পাশে আছি সবসময়। সবাই মিলে  সমস্যার সমাধান করতে হবে।” পঞ্চায়েত সদস্য  ও সমাজসেবী   স্বপন মুর্দ্দানা বললেন, “খাতড়া  পঞ্চায়েতের”  পক্ষ থেকে  আমরা  নজর রেখেছি,ফড়েরা- অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে ইচ্ছা মতো  দাম বাড়াতে না  পারে, ” খাতড়া মহকুমা শহরের বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বক্তব্য  কালোবাজারি  ঠেকাতে  নজরদারি বাড়ানো দরকার। প্রশাসন সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই নজর রাখতে শুরু করেছে। সবজি  বাজারের আগুন কবে নিভবে,কেউ জানি না  ।দুশ্চিন্তায় মধ্যবিত্ত ও সাধারণ প্রান্তভূমির মানুষ।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

অতিবৃষ্টির জেরে দক্ষিণ বাঁকুড়ায় সবজির বাজারে আগুন

Update Time : ০৪:৫৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১

সুবীর মণ্ডল, বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি:

খাতড়া মহকুমা তথা দক্ষিণ বাঁকুড়ায় অতিবৃষ্টির জেরে  সব ধরনের সবজির দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায়  সাধারণ-মধ্যবিত্তের হেঁসেলে ভীষণ টান পড়েছে। একদিকে করোনার আবহ ও লকডাউনে সাধারণ গরিব মানুষের রোজগার একেবারেই  তলানিতে গিয়ে  ঠেকেছে। তার ওপর অনেক আগেই  তেল–মশলার দাম আকাশছোঁয়া।  দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অতিবৃষ্টির কারণে মাঠের পর মাঠ জলের তলায়। সমস্ত  সবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। সবজি  উৎপাদন একদম কমে গেছে। খাতড়া শহরের বিভিন্ন সবজি বাজারে, সবজি বিক্রেতার কাছে সবজি বাইরে থেকে আসছে না। যে টুকু   সবজি  পাওয়া যাচ্ছে, দাম আকাশছোঁয়া। নিত্য প্রয়োজনীয়  কুমড়ো, বরবটি,লাউ,পেঁপে,ঢেঁড়শ,ঝিঙে,পটলের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ-মধ্যবিত্তের হেঁসেলে ভীষণ  সমস্যা  হচ্ছে, অনেকেই আলু আর ডাল, ডিমের  উপর নির্ভর করছে।  বাজারের থলি ভরছে না, শাকসবজি দাম কবে কমবে? কেউ  জানে না।   কিছু দিন আগে আলু ও পেঁয়াজের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ-মধ্যবিত্তের  সমস্যা ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দক্ষিণ বাঁকুড়ার সবজি  উৎপাদন এলাকা হলো, খাতড়া, সাবড়াকোন, সিমলাপাল, লক্ষীসাগর, রাইপুর, সারেঙ্গার ,ইন্দপুর, হীড়বাধের রাঙামাটি, মলিয়ান,হাতিরামপুর।এই সব এলাকায়  সমস্ত সবজি ক্ষেত জলের তলায় ছিল  বেশ কিছু দিন।

দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার বাজার ও হাটে    বাইরে থেকে আসা সবজির পরিমাণ দিন দিন কমছে। বিশেষ করে  ব্লক শহরের  সবজির দাম খুব বেশি। খাতড়া মহকুমার  শহরের  বিভিন্ন সবজির দাম সম্বন্ধে  শহরে বসবাস করেন  শিক্ষক অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন  — কেজি প্রতি দর  শশা ৭০ টাকা , পটল ৪০,করলা -১০০, বেগুন -৬০,বরবটি -৪০, লাউ-৪০, কুমড়ো,- ২৫,  ঢেড়শ-৪০ টাকা।   খাতড়া  শহরের  প্রধান বাজার চকবাজার ও পাপড়ার ব্রিজ বাজার।এখানকার সবজি  চাষিদের  ক্ষোভ  দাম কমবে কি করে?  ,আমদানি নেই। পরিবহন খরচ বাড়ায় মাছের বাজারে আগুন ধরে গেছে। দেশি মাছ,মুরগির  দাম আকাশছোঁয়া। পোলট্রি  ডিমের দাম বেড়েছে ভালোই । খাতড়া শহরের  মানুষের অভিযোগ, সুযোগ বুঝে ফড়েরা ইচ্ছে মতো  দাম বাড়াচ্ছে। বাজার  দেখভাল করার জন্য  সরকারি উদ্যোগ নেই।  খাতড়া শহরের সবজি ব্যবসায়ীরা বলেন, উৎপাদন কম ও বাইরে থেকে  সবজি  না আসায় ,সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। রাইপুরের সবুজ বাজারের ব্যবসায়ী সনাতন  দুলে বললেন, ” ক্রেতাদের কাছে কম দামে টাটকা সবজি  পৌঁছে দেওয়াই   আমাদের কাজ,কিন্তু  অতিবৃষ্টির জন্য  সমস্ত সবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে  আমরাও  ক্ষতিগ্রস্ত  হচ্ছি।” সিমলাপালের  বেশ কয়েক জন  চাষীর বক্তব্য  হলো, কবে আমরা আবার  সবজি উৎপাদন করতে পারবো  জানি না, আমাদের পরিবারের সবাই কি ভাবে  বাঁচবে , জানিনা। কেউ কেউ বলেন,সরকার যদি এই সময়ে  আমাদের  পাশে দাঁড়াতো তাহলে  ঘুরে  দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতাম। ” ।খাতড়া  পঞ্চায়েত সমিতির কৃষিকর্মাধ্যক্ষ মাননীয় সুব্রত মহাপাত্র মহাশয় জানালেন, আমরা সবজি  চাষীদের মধ্যে বীজ ও সার বিতরণ করার  উদ্যোগ নিয়েছি।চাষীদের পাশে আছি সবসময়। সবাই মিলে  সমস্যার সমাধান করতে হবে।” পঞ্চায়েত সদস্য  ও সমাজসেবী   স্বপন মুর্দ্দানা বললেন, “খাতড়া  পঞ্চায়েতের”  পক্ষ থেকে  আমরা  নজর রেখেছি,ফড়েরা- অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে ইচ্ছা মতো  দাম বাড়াতে না  পারে, ” খাতড়া মহকুমা শহরের বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বক্তব্য  কালোবাজারি  ঠেকাতে  নজরদারি বাড়ানো দরকার। প্রশাসন সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই নজর রাখতে শুরু করেছে। সবজি  বাজারের আগুন কবে নিভবে,কেউ জানি না  ।দুশ্চিন্তায় মধ্যবিত্ত ও সাধারণ প্রান্তভূমির মানুষ।