Dhaka ১২:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ত্রাণসামগ্রীর সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার আবেদন নিয়ে শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১
  • ৭৭ Time View

তপনকান্তি মণ্ডল, বিশেষ প্রতিনিধি :

সুন্দরবনের ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকায় দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে পৌঁছে গেছে শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র। সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার আবেদন।

রায়দীঘি থানার দক্ষিণ কঙ্কণদীঘি ঘেরী এবং শীতল মাইতির মোল্লার মুখে ৪০০ পরিবারকে এক সপ্তাহের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী, শাড়ী, লুঙ্গি, খাতা কলম, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ও আর এস প্রভৃতি দেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির আয়োজন করে ওষুধপত্রেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকার মানুষ ঝড়,বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের কাছে দাবি করেন। শাসক দলের নেতা ও কন্ট্রাক্টরদের আঁতাতে এলাকায় কোন উন্নয়ন হয়নি বলে তাদের অভিযোগ।
এছাড়া পাথর প্রতিমা থানার বনশ্যাম নগর গ্ৰামের ডুবো জাহাজ ঘাটে ৫৮ টি পরিবারের ২৫০ জন মানুষকে উদ্ধার করে ১৫ দিনের প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। দক্ষিণের বাঁধ ভাঙার ফলে সমগ্ৰ এলাকা জলমগ্ন হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কবলে পড়ে। লোনা জল ঢুকে পুকুরের জল, মাছ, চাষের জমি যেমন সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে তেমনি এখানকার মাটির বাড়ীগুলো ধ্বসে গেছে। পানীয় জলের সব নলকূপ অকেজো। কয়েক কিলোমিটার দূরে অন্য গ্ৰাম থেকে পানীয় জল সংগ্ৰহ করতে হচ্ছে। গবাদিপশু প্রাণ বাঁচাতে যত্রতত্র ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাব তাদেরও। মানুষগুলো কোনভাবে নদী বাঁধে ঠাঁই পেয়েছে।

এখানে পানীয় জল, চিড়ে,মুড়ি, চিনি,বিস্কুট,সুজি, গুঁড়ো দুধ প্রভৃতি শুকনো খাবারের পাশাপাশি মোমবাতি, দেশলাই, সাবান,ফিনাইল প্রভৃতি দেওয়া হয়। জলে মাছ ও অন্যান্য আবর্জনা পচে সারা এলাকা দুর্গন্ধে ভরে গেছে। তা থেকে বাঁচার জন্য গ্ৰামবাসীদের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে কয়েক বস্তা চুন প্রয়োগ করা হয়।

উভয় ক্ষেত্রে গ্ৰামবাসীদের নিয়ে শপথ করানো হয় যে,জলে ভেসে আসা বা অন্য কোনভাবে পাওয়া ম্যানগ্ৰোভ বীজ পোড়ানো যাবেনা।

গ্ৰামবাসীরাই ওই বীজ উপকূলবর্তী এলাকায় বপন করবে। পরিবেশ রক্ষার কাজে সহযোগিতার জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে এক টিন বীজ পিছু ১০০ টাকা এবং ছেলেমেয়েদের সারা বছরের বই খাতা কলম ইত্যাদি শিক্ষা সরঞ্জাম প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাশীনগরের এই গ্ৰামীণ সংস্থার কর্ণধার বীজেন্দ্র বৈদ্য জানিয়েছেন যে,শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র মূলত সুন্দরবন এলাকায় পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রথম থেকেই সচেষ্ট। মাঝে মাঝে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতাও এসেছে। তবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা সংস্কৃতি পরিষদ ও অন্যান্য সংগঠনের স্বীকৃতি সংস্থাকে অনুপ্রাণিত করেছে। সুন্দরবনের উন্নয়নে যেকোন সংস্থার উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

ত্রাণসামগ্রীর সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার আবেদন নিয়ে শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র

Update Time : ০৪:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১

তপনকান্তি মণ্ডল, বিশেষ প্রতিনিধি :

সুন্দরবনের ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকায় দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে পৌঁছে গেছে শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র। সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার আবেদন।

রায়দীঘি থানার দক্ষিণ কঙ্কণদীঘি ঘেরী এবং শীতল মাইতির মোল্লার মুখে ৪০০ পরিবারকে এক সপ্তাহের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী, শাড়ী, লুঙ্গি, খাতা কলম, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ও আর এস প্রভৃতি দেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির আয়োজন করে ওষুধপত্রেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকার মানুষ ঝড়,বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের কাছে দাবি করেন। শাসক দলের নেতা ও কন্ট্রাক্টরদের আঁতাতে এলাকায় কোন উন্নয়ন হয়নি বলে তাদের অভিযোগ।
এছাড়া পাথর প্রতিমা থানার বনশ্যাম নগর গ্ৰামের ডুবো জাহাজ ঘাটে ৫৮ টি পরিবারের ২৫০ জন মানুষকে উদ্ধার করে ১৫ দিনের প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। দক্ষিণের বাঁধ ভাঙার ফলে সমগ্ৰ এলাকা জলমগ্ন হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কবলে পড়ে। লোনা জল ঢুকে পুকুরের জল, মাছ, চাষের জমি যেমন সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে তেমনি এখানকার মাটির বাড়ীগুলো ধ্বসে গেছে। পানীয় জলের সব নলকূপ অকেজো। কয়েক কিলোমিটার দূরে অন্য গ্ৰাম থেকে পানীয় জল সংগ্ৰহ করতে হচ্ছে। গবাদিপশু প্রাণ বাঁচাতে যত্রতত্র ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাব তাদেরও। মানুষগুলো কোনভাবে নদী বাঁধে ঠাঁই পেয়েছে।

এখানে পানীয় জল, চিড়ে,মুড়ি, চিনি,বিস্কুট,সুজি, গুঁড়ো দুধ প্রভৃতি শুকনো খাবারের পাশাপাশি মোমবাতি, দেশলাই, সাবান,ফিনাইল প্রভৃতি দেওয়া হয়। জলে মাছ ও অন্যান্য আবর্জনা পচে সারা এলাকা দুর্গন্ধে ভরে গেছে। তা থেকে বাঁচার জন্য গ্ৰামবাসীদের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে কয়েক বস্তা চুন প্রয়োগ করা হয়।

উভয় ক্ষেত্রে গ্ৰামবাসীদের নিয়ে শপথ করানো হয় যে,জলে ভেসে আসা বা অন্য কোনভাবে পাওয়া ম্যানগ্ৰোভ বীজ পোড়ানো যাবেনা।

গ্ৰামবাসীরাই ওই বীজ উপকূলবর্তী এলাকায় বপন করবে। পরিবেশ রক্ষার কাজে সহযোগিতার জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে এক টিন বীজ পিছু ১০০ টাকা এবং ছেলেমেয়েদের সারা বছরের বই খাতা কলম ইত্যাদি শিক্ষা সরঞ্জাম প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাশীনগরের এই গ্ৰামীণ সংস্থার কর্ণধার বীজেন্দ্র বৈদ্য জানিয়েছেন যে,শতমুখী পরিবেশ কল্যাণ কেন্দ্র মূলত সুন্দরবন এলাকায় পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রথম থেকেই সচেষ্ট। মাঝে মাঝে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতাও এসেছে। তবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা সংস্কৃতি পরিষদ ও অন্যান্য সংগঠনের স্বীকৃতি সংস্থাকে অনুপ্রাণিত করেছে। সুন্দরবনের উন্নয়নে যেকোন সংস্থার উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান।