Dhaka ০৬:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:

চরম রক্ত সংকটে , বাঁকুুুড়া জেলা জুড়ে রক্তদানের এক মানবিক কর্মসূচি

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৪৯:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ মে ২০২১
  • ২২১ Time View

সুবীর মণ্ডল, বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি:

করোনা পরিস্থিতিতে সারা জেলায় ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলিতে রক্তের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, রক্তের অভাবে মুমূর্ষু রোগীরা ছটফট করছে।

করোনার আবহে  সমগ্র  জেলার  তরুণ- তরুণীরা এগিয়ে এসেছে রক্তের সংকট দূর করতে। দুর্যোগের কালোমেঘ সরিয়ে জনজীবনকে তার চেনা ছন্দে ফেরাতে তৎপর বাঁকুড়া পুলিশ ও প্রশাসনের অন্যান্য দপ্তর।

ত্রাণ শিবিরসহ অসহায় মানুষের নিরন্তর সেবায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশকর্মীরা। আবার এই  মুহূর্তে সামাজিক দা়য়বদ্ধতার এক অঙ্গ হিসাবে উৎসারিত রক্তদান প্রকল্প ‘উৎসর্গ’- র আয়োজনে ইন্দাস  থানার সহকর্মীরা। শুধু তাই নয় বাঁকুড়া  পুলিশ প্রশাসনও রক্তদান কর্মসূচিতে এগিয়ে এসেছে।

 এ–এক অসাধারণ মানবিক প্রয়াস, এই মানবিক প্রচেষ্টা প্রমাণ করে ‘মানুষ  মানুষের জন্য,’ যে কোন  ভালো কাজে মানুষ এগিয়ে আসেই। চাই শুধু  গঠনমূলক উদ্যোগ। সারা মে মাস জুড়ে বাঁকুুুড়া জেলার তিন মহকুমার ২২টি ব্লকের নানান  গণসংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান  রক্তদান  কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
ধারাবাহিকভাবে এই  কর্মসূচি চলছে। এ- এক মহতী  উদ্যোগ।
  রক্তের  সংকট মেটাতে  কোতুলপুর ব্লকের DYFI লেগো ইউনিট এর  উদ্যোগে রক্তদান  শিবিরে ৩ জন  যুবতী সহ মোট ৩১ জন রক্তদান করেছেন। সিমলাপাল ব্লকের  ৪০ ,জন রক্তদান করলেন। রানিবাঁধের স্বেচ্ছাসেবী  প্রতিষ্ঠান  নিঃস্বার্থ– এর  উদ্যোগে ৫০জন  রক্তদান করলেন। উদ্যোক্তা শিক্ষকদ্বয় বাপীখান ও লক্ষণ কিস্কু  মহাশয় বললেন–” জঙ্গলমহলে  রক্তের সংকট,তাই আমরা অনেকেই এগিয়ে এসেছি, ” খাতড়া শহরের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান লাইফ লাইনের সদস্যরা একটি রক্তদান  শিবিরের  আয়োজন করে।    শিবিরটিতে খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংক ৫ জন মহিলা সহ ৩৫ জনের রক্ত  সংগ্রহ  করে। মোট ৪০ জন।
বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের ‘ওন্দা যুব সমাজ’ ও সদর মহকুমার ‘ধুলোমাটি’ নামে একটি  সংস্থা বড় ধরনের রক্তদান শিবিরের আয়োজনে সামিল হয়।  যথাক্রমে  ৫০ ও ৪৫ জন রক্তদান করেন।
বিভিন্ন  সংস্থার উদ্যোগকারীদের মূল বক্তব্য  হলো   সাধারণ মানুষের কাছে– “একদিনের  জন্য ভগবান হয়ে উঠুন।
একটা দুঃসময়ের ভিতর দিয়ে  চলছে গোটা মানব সভ্যতা।প্রত্যেকে  নিজেকে, নিজের পরিবারকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখা  যায়  সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।এই  লড়াইটা তাঁদের  জন্য  আরো অনেক, অনেক বেশি কঠিন যাঁরা থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত” আজ রানিবাঁধের ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে রক্তদান শিবিরে ৪০ জন রক্তদান করেন।   সহযোগিতায় জেলা পরিষদের সদস্য শ্রী চিত্তরঞ্জন মাহাত  ও শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শিক্ষক স্বপনমল্লিক  এবং বিশিষ্ট  কবি ও শিক্ষক লক্ষণ কিস্কু  মহাশয়। উনারা  বললেন ” সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই জঙ্গলমহলের মানুষের জন্য   এই শিবিরের আয়োজন “।
সমাজের  বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ ও  সাধারণ মানুষ   সহযোগিতা  হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন , সেই সঙ্গে  স্থানীয় প্রশাসনও  সাহায্যের  হাত বাড়িয়ে  দিয়েছে। একটা সামাজিক  দায়বদ্ধতা অনন্য নজির রেখে চলেছে গোটা  বাঁকুড়া জেলার  সবুজ-সতেজ  নতুন প্রজন্ম। বিশেষ করে যুব সমাজ।  সমাজের কাছে এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।  এ ব্যাপারে  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা  পালন করে আসছে  খাতড়া মহকুমা  হসপিটাল ব্লাড ব্যাংক, বিষ্ণুপুর মহকুমা হসপিটাল ব্লাড  ব্যাংক এবং বাঁকুুুড়া  মেডিকেল  কলেজ  হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকগণ।
এই মানব হিতৈষী কাজকে জেলাবাসী অকুণ্ঠ সমর্থন করেছে।  সাধারণ মানুষ আশা করছে   এইভাবেই ছড়িয়ে পড়ুক রক্তদান কর্মসূচি এই মোহময় দুঃসময়ে।  লাইফ লাইনের জনৈক কর্মকর্তা  দিলীপ গড়াই ও স্বরূপ মণ্ডল এবং  সুপ্রভাত বাবু  বললেন ”  আমাদের  রক্ত  দানে একটা  মানুষ জীবন  ফিরে  পেতে পারে। বিশেষ করে  থ্যালাসেমিয়া শিশুদের ঐ মুহুর্তের  মুখগুলো দেখলে আমাদের  বিবেক, হৃদয় ও কেঁদে উঠছে। তখন মনে হয় শরীরের  যত  রক্ত  আছে নিয়ে নাও, তবুও ঐ ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের বাঁচিয়ে দাও।” এছাড়াও এই কঠিন সময়ে রক্তদান করলে,মুর্মূষ রোগীদের জন্য পরিবারকে  রক্তের  জন্য  ব্যাকুল হতে হবে না। তাই প্রতিটি মানুষের  উচিত এই  তীব্র রক্ত সংকটে রক্তদান করা। আপনি দান করতে  চাইলে আপনার নিকটবর্তী  শিবির হলে সেখান   আসুন। এছাড়াও  যে কোনো সময় রক্তদান করতে হলে আপনার নিকটবর্তী ব্লাড ব্যাঙ্কে আসুন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

চরম রক্ত সংকটে , বাঁকুুুড়া জেলা জুড়ে রক্তদানের এক মানবিক কর্মসূচি

Update Time : ১২:৪৯:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ মে ২০২১

সুবীর মণ্ডল, বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি:

করোনা পরিস্থিতিতে সারা জেলায় ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলিতে রক্তের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, রক্তের অভাবে মুমূর্ষু রোগীরা ছটফট করছে।

করোনার আবহে  সমগ্র  জেলার  তরুণ- তরুণীরা এগিয়ে এসেছে রক্তের সংকট দূর করতে। দুর্যোগের কালোমেঘ সরিয়ে জনজীবনকে তার চেনা ছন্দে ফেরাতে তৎপর বাঁকুড়া পুলিশ ও প্রশাসনের অন্যান্য দপ্তর।

ত্রাণ শিবিরসহ অসহায় মানুষের নিরন্তর সেবায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশকর্মীরা। আবার এই  মুহূর্তে সামাজিক দা়য়বদ্ধতার এক অঙ্গ হিসাবে উৎসারিত রক্তদান প্রকল্প ‘উৎসর্গ’- র আয়োজনে ইন্দাস  থানার সহকর্মীরা। শুধু তাই নয় বাঁকুড়া  পুলিশ প্রশাসনও রক্তদান কর্মসূচিতে এগিয়ে এসেছে।

 এ–এক অসাধারণ মানবিক প্রয়াস, এই মানবিক প্রচেষ্টা প্রমাণ করে ‘মানুষ  মানুষের জন্য,’ যে কোন  ভালো কাজে মানুষ এগিয়ে আসেই। চাই শুধু  গঠনমূলক উদ্যোগ। সারা মে মাস জুড়ে বাঁকুুুড়া জেলার তিন মহকুমার ২২টি ব্লকের নানান  গণসংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান  রক্তদান  কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
ধারাবাহিকভাবে এই  কর্মসূচি চলছে। এ- এক মহতী  উদ্যোগ।
  রক্তের  সংকট মেটাতে  কোতুলপুর ব্লকের DYFI লেগো ইউনিট এর  উদ্যোগে রক্তদান  শিবিরে ৩ জন  যুবতী সহ মোট ৩১ জন রক্তদান করেছেন। সিমলাপাল ব্লকের  ৪০ ,জন রক্তদান করলেন। রানিবাঁধের স্বেচ্ছাসেবী  প্রতিষ্ঠান  নিঃস্বার্থ– এর  উদ্যোগে ৫০জন  রক্তদান করলেন। উদ্যোক্তা শিক্ষকদ্বয় বাপীখান ও লক্ষণ কিস্কু  মহাশয় বললেন–” জঙ্গলমহলে  রক্তের সংকট,তাই আমরা অনেকেই এগিয়ে এসেছি, ” খাতড়া শহরের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান লাইফ লাইনের সদস্যরা একটি রক্তদান  শিবিরের  আয়োজন করে।    শিবিরটিতে খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংক ৫ জন মহিলা সহ ৩৫ জনের রক্ত  সংগ্রহ  করে। মোট ৪০ জন।
বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের ‘ওন্দা যুব সমাজ’ ও সদর মহকুমার ‘ধুলোমাটি’ নামে একটি  সংস্থা বড় ধরনের রক্তদান শিবিরের আয়োজনে সামিল হয়।  যথাক্রমে  ৫০ ও ৪৫ জন রক্তদান করেন।
বিভিন্ন  সংস্থার উদ্যোগকারীদের মূল বক্তব্য  হলো   সাধারণ মানুষের কাছে– “একদিনের  জন্য ভগবান হয়ে উঠুন।
একটা দুঃসময়ের ভিতর দিয়ে  চলছে গোটা মানব সভ্যতা।প্রত্যেকে  নিজেকে, নিজের পরিবারকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখা  যায়  সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।এই  লড়াইটা তাঁদের  জন্য  আরো অনেক, অনেক বেশি কঠিন যাঁরা থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত” আজ রানিবাঁধের ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে রক্তদান শিবিরে ৪০ জন রক্তদান করেন।   সহযোগিতায় জেলা পরিষদের সদস্য শ্রী চিত্তরঞ্জন মাহাত  ও শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শিক্ষক স্বপনমল্লিক  এবং বিশিষ্ট  কবি ও শিক্ষক লক্ষণ কিস্কু  মহাশয়। উনারা  বললেন ” সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই জঙ্গলমহলের মানুষের জন্য   এই শিবিরের আয়োজন “।
সমাজের  বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ ও  সাধারণ মানুষ   সহযোগিতা  হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন , সেই সঙ্গে  স্থানীয় প্রশাসনও  সাহায্যের  হাত বাড়িয়ে  দিয়েছে। একটা সামাজিক  দায়বদ্ধতা অনন্য নজির রেখে চলেছে গোটা  বাঁকুড়া জেলার  সবুজ-সতেজ  নতুন প্রজন্ম। বিশেষ করে যুব সমাজ।  সমাজের কাছে এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।  এ ব্যাপারে  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা  পালন করে আসছে  খাতড়া মহকুমা  হসপিটাল ব্লাড ব্যাংক, বিষ্ণুপুর মহকুমা হসপিটাল ব্লাড  ব্যাংক এবং বাঁকুুুড়া  মেডিকেল  কলেজ  হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকগণ।
এই মানব হিতৈষী কাজকে জেলাবাসী অকুণ্ঠ সমর্থন করেছে।  সাধারণ মানুষ আশা করছে   এইভাবেই ছড়িয়ে পড়ুক রক্তদান কর্মসূচি এই মোহময় দুঃসময়ে।  লাইফ লাইনের জনৈক কর্মকর্তা  দিলীপ গড়াই ও স্বরূপ মণ্ডল এবং  সুপ্রভাত বাবু  বললেন ”  আমাদের  রক্ত  দানে একটা  মানুষ জীবন  ফিরে  পেতে পারে। বিশেষ করে  থ্যালাসেমিয়া শিশুদের ঐ মুহুর্তের  মুখগুলো দেখলে আমাদের  বিবেক, হৃদয় ও কেঁদে উঠছে। তখন মনে হয় শরীরের  যত  রক্ত  আছে নিয়ে নাও, তবুও ঐ ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের বাঁচিয়ে দাও।” এছাড়াও এই কঠিন সময়ে রক্তদান করলে,মুর্মূষ রোগীদের জন্য পরিবারকে  রক্তের  জন্য  ব্যাকুল হতে হবে না। তাই প্রতিটি মানুষের  উচিত এই  তীব্র রক্ত সংকটে রক্তদান করা। আপনি দান করতে  চাইলে আপনার নিকটবর্তী  শিবির হলে সেখান   আসুন। এছাড়াও  যে কোনো সময় রক্তদান করতে হলে আপনার নিকটবর্তী ব্লাড ব্যাঙ্কে আসুন।