স্পোর্টস ডেস্ক :
১৪৪ রানের একটা জুটি। ২০১৪ সালের পর এই প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় উইকেটে শত রানের জুটি দেখলো বাংলাদেশ।
অর্থাৎ গত ৭ বছরে দ্বিতীয় উইকেটে কোনো শত রানের জুটি হয়নি। প্রথম উইকেট জুটিতেও ২০১৭ সালের পর নেই কোনো শত রানের জুটি। আর ২০১৮ সালের পর তৃতীয় উইকেটেও শত রানের কোনো জুটি নেই। হলো এখানেও।
এর অর্থ হলো- গত তিন বছরে আমরা প্রথম তিনটি উইকেট জুটি থেকে টেস্টে কোনো শত রানের জুটি পাইনি। টেস্টে আমাদের প্রথম তিন-চার ব্যাটসম্যানের উইকেট কত সস্তা হয়ে গেছে- এ থকেই সেটা বুঝতে পারার কথা। অবশেষে পর পর দুটি শত রানের জুটি আসাটা নিশ্চয়ই স্বস্তির ব্যাপার। বিশেষ করে নাজমুল হোসাইন শান্তর জন্য এটা বিরাট একটা হাফ ছেড়ে বাঁচার মত কাণ্ড!
তামিম ইকবাল খুব একটা রান থেকে দূরে ছিলেন না। যদিও ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সেঞ্চুরিটা করেছিলেন। ফলে আরেকটা সেঞ্চুরি তার এই সময় খুব দরকার ছিলো। কিন্তু অল্পের জন্য সেটা মিস করলেন।
দারুন ছন্দে খেলছিলেন তামিম। বিশেষ করে প্রথম পঞ্চাশ রান করা পর্যন্ত তো টি-টোয়েন্টি মেজাজেই ছিলেন। উইকেটের একটু ঘাস, শ্রীলঙ্কান পেসারদের একটু মুভমেন্টকে একেবারে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন তামিম। স্ট্রাইক রেট ছিলো একশ পার করা।
কিন্তু নব্বই রানে এসেই একেবারে বিসদৃশ্য একটা শট খেলে ফিরে গেলেন। যাতে থেমে যায় ১০১ বলের মোকাবেলায় ১৫টি চারে সাজানো তার ৯০ রানের ইনিংস। সে জন্য তামিমই নিশ্চয় সবচেয়ে বেশি আক্ষেপে পুড়ছেন। এমন সুন্দর উইকেটে লম্বা একটা ইনিংস খেলতে না পারার আফসোসটা তার সহজে যাওয়ার নয়।
বিপরীতে শান্তর জন্য এটা ছিলো নিজেকে রক্ষা করার শেষ সুযোগগুলোর একটা। জাতীয় দলের হয়ে এর আগে ১৪টি ম্যাচে ২৩টি ইনিংস খেলেছেন শান্ত। এর মধ্যে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটা মাত্র ফিফটি (৭১) ছিলো তার নীলমণি ধন। এছাড়া পঞ্চাশ পার করতে পারেননি একবারও। অথচ শান্তকে টানা সুযোগ দেওয়ার কোনো কমতি ছিলো না ম্যানেজমেন্টের।
নানাভাবে শান্তর পেছনে বিনিয়োগ চলছিলো। তাকে ভবিষ্যত অধিনায়ক বলেও নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিলো। কিন্তু শান্তর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলার যথেষ্ট কারণও তৈরী হয়েছে এর মধ্যে। অবশেষে আর কিছু না হোক, পরীক্ষা দেওয়ার আরেকটু সময় পেলেন শান্ত। সময় নিজেকে প্রমাণ দেয়ারও।
অবশ্য আজ প্রথম সুযোগেই উৎরে গেলেন সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী এই ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার মাটিতে তাদের বিপক্ষেই হাঁকিয়ে ফেললেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটি। তার ২৩০ বলের ম্যারাথন ইনিংসে ছিল ১১টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কার মার। সৌরভ ছড়াচ্ছেন সঙ্গী মোমিনুল হকও। অপরাজিত আছেন ফিফটি হাঁকিয়েই। যাতে ২ উইকেট হারিয়েই আড়াইশ ছুঁয়েছে বাংলাদেশ।