রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বুধবার থেকে রাজশাহীসহ সারাদেশে ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হয়েছে। এটি কার্যকরে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে কঠোর লকডাউনেও ঘরের বাইরে মানুষকে বের হতে দেখা গেছে।
নগরীর সাহেববাজার, লক্ষীপুর, কাশিয়াডাঙ্গা, রেলগেট, বাস টার্মিনাল, তালাইমারী, কাজলা, বিনোদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা রয়েছে। রাস্তায় দু’একটি রিকশা, মোটরসাইকেল এবং জরুরি সেবার গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। বন্ধ রয়েছে নগরীর সব মার্কেট। জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও একই চিত্র দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর, শিরোইল বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, নিউমার্কেট, সাহেববাজার জিরোপয়েন্টসহ কয়েকটি এলাকায় গিযে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা। ঔষুধ এবং মুদি দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকানপাটও বন্ধ দেখা গেছে। নগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দেখা গেছে পুলিশের কড়া অবস্থান। রাস্তায় বের হলেই পড়তে হচ্ছে পুলিশের জেরায়। জরুরি কাজে বের হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে থাকছে দ্রুত কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার নির্দেশনা। সঠিক কারণ না বলতে পারলে নেয়া হচ্ছে ব্যবস্থা। এছাড়া নগরীর তিন প্রবেশমুখ আমচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গা ও কাটাখালী এলাকায় পুলিশ কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নগরীর লক্ষীপুরে রিকশাচালকদের কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, রোগী নিয়ে এসেছিলাম লক্ষীপুরে অবস্থিত রামেক হাসপাতালে। কিন্তু ফেরার পথে ট্রাফিক পুলিশ রিকশার চাকার হাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তারা বলেন, আমরা গরীর মানুষ রিকশা চালাতে না পারলে কী করে চলবো।
ছেলেমেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের খরচ জোগাবো কী করে। অফিস বন্ধ থাকলেও সরকারি চাকরিজীবীরা বেতন পাবেন। কিন্তু গরীর অসহায় মানুষ বসে থাকলে কী করে সংসার চলবে।
এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্বক কভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রথম দফায় মানুষের চলাচল ও কার্যক্রমে বিধি-নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বুধবার থেকে আটদিনের জন্য ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এই লকডাউনে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস এবং গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম সাংবাদিকদের জানান, সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ অবস্থায় কেউ বাইরে ঘোরাঘুরি করলে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে। তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তিনি সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান।