মোঃ পাভেল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি:

রাজশাহীতে ছুরিকাঘাতে আনসার বাহিনীর সদস্য মিজানুর রহমান মিজানকে (৩০) হত্যার ঘটনায় তাঁর বন্ধু মাধব কুমারকে (৩৬) আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পালানোর সময় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস। তিনি জানান, ছুরিকাঘাতে মিজানুরের মৃত্যুর পর পালিয়ে যাচ্ছিলেন মাধব। তখন পুঠিয়া থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এই হত্যাকান্ডে ঘটনায় মাধবের বিরুদ্ধেই ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও আছেন।

গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে মহানগরীর হেতেমখাঁ এলাকায় ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লন্টের ভেতর আনসারদের একটি কোয়ার্টারের সামনে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত মিজানুর রহমান আনসার বাহিনীর হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড় ছিলেন। বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসেও তিনি আনসার বাহিনীর দলে ছিলেন। খেলা শেষে ছুটিতে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। এসেই হত্যাকান্ডের শিকার হলেন।

তাঁর বাড়ি নগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম মো. মন্টু মিয়া। আটক মাধব কুমার একই এলাকার মদনের ছেলে তিনি মিজানুরের বন্ধু ছিলেন। এলাকায় সুদ আর মাদকের ব্যবসা করতেন মাধব।

এলাকাবাসী জানান, হেতেমখাঁ এলাকায় ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের পাশে রেজা নামের এক ব্যক্তির একটা দোকান আছে। লকডাউন চলার কারণে মিজানুর ওই দোকানীকে লাইট বন্ধ করে ব্যবসা করতে বলেন। কিন্তু কেন লাইট বন্ধ করতে হবে এই প্রশ্ন তুলে মিজানুরের সঙ্গে তর্কে জড়ান মাধব। এ সময় তাঁদের দুজনের হাতাহাতিও হয়। তখন অন্য বন্ধুরা তাঁদের থামান। এরপর মিজানুর প্লান্টের ভেতরের এলাকায় ঢুকে আনসারদের কোয়ার্টারের সামনে সেখানকার সদস্যদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন।

কিছুক্ষণ পর মাধব গিয়ে মিজানকে আচমকা ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক মিজানুরকে মৃত ঘোষণা করেন। মিজানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়।

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাধবের বাড়িতে হামলার প্রস্তুতি নেন। কেউ কেউ গিয়ে বাড়ির গেট ধাক্কাধাক্কি করেন। খবর পেয়ে বোয়ালিয়া থানার ওসির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

রোববার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে নিহত মিজানুরের তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যপারে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই মূখপাত্র।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে