Dhaka ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি গ্রেফতার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৫৫:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ১৩৪ Time View

মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি সহ শাসক দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে তার বাসায় রেইড দিয়ে দেশটির সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে দেশটিতে আবারও অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। খবর বিবিসি, ব্রিসবেন টাইমস ও স্কাই নিউজের।

ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়ো নিউন্ট সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে।

মিয়ো নিউন্ট এই ঘটনার পর দেশের জনগণকে মাথা গরম করে কোনো কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি আইন অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে সেনা সদস্যরা বেশ কয়েকটি অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে বলে জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী নেপিটো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সৈন্যরা নেমে পড়েছে। টেলিফোন ও ইন্টারনেট লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

মূলত গেল বছরের নভেম্বরের ৮ তারিখ অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সু চি’র দলের আজ সোমবার সংসদ আহ্বান করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সু চিকে গ্রেপ্তার করা হলো। কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যম বলছে যে তাকে আটক করা হয়েছে।

এই নির্বাচন নিয়ে বেসরকারি সরকার এনএলডি ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। নির্বাচনে সু চি’র দল ৩৬৪টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) প্রতারণা ও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে আসছে শুরু থেকেই।

গত সপ্তাহে সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইয়াং যৌক্তিকভাবে নির্বাচনের জালিয়াতিকে চিহ্নিত করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনী ও সুচির দল এনএলডি’র মধ্যে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেটার জের ধরেই সোমবার ভোর রাতে সু চি ও উইন মিন্টকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

১৯৬২ সালের এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে। এরপর গত ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক এক নির্বাচনে সু চি’র দল ৭৭ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে প্রায় পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের অবসান ঘটায়। এরপর ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি।

বিশ্লেষকদের মতে, গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে শুরু করা মিয়ানমারের ওপর আবারও সামরিক শাসনের খড়গ নেমে আসতে যাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি গ্রেফতার

Update Time : ০২:৫৫:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি সহ শাসক দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে তার বাসায় রেইড দিয়ে দেশটির সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে দেশটিতে আবারও অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। খবর বিবিসি, ব্রিসবেন টাইমস ও স্কাই নিউজের।

ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়ো নিউন্ট সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে।

মিয়ো নিউন্ট এই ঘটনার পর দেশের জনগণকে মাথা গরম করে কোনো কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি আইন অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে সেনা সদস্যরা বেশ কয়েকটি অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে বলে জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী নেপিটো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সৈন্যরা নেমে পড়েছে। টেলিফোন ও ইন্টারনেট লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

মূলত গেল বছরের নভেম্বরের ৮ তারিখ অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সু চি’র দলের আজ সোমবার সংসদ আহ্বান করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সু চিকে গ্রেপ্তার করা হলো। কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যম বলছে যে তাকে আটক করা হয়েছে।

এই নির্বাচন নিয়ে বেসরকারি সরকার এনএলডি ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। নির্বাচনে সু চি’র দল ৩৬৪টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) প্রতারণা ও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে আসছে শুরু থেকেই।

গত সপ্তাহে সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইয়াং যৌক্তিকভাবে নির্বাচনের জালিয়াতিকে চিহ্নিত করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনী ও সুচির দল এনএলডি’র মধ্যে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেটার জের ধরেই সোমবার ভোর রাতে সু চি ও উইন মিন্টকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

১৯৬২ সালের এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে। এরপর গত ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক এক নির্বাচনে সু চি’র দল ৭৭ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে প্রায় পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের অবসান ঘটায়। এরপর ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি।

বিশ্লেষকদের মতে, গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে শুরু করা মিয়ানমারের ওপর আবারও সামরিক শাসনের খড়গ নেমে আসতে যাচ্ছে।