নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা ও ৫১ মুসল্লিকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্রেটন ট্যারেন্টকে প্যারোলবিহীন যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে আদালত। দেশটির ইতিহাসে এ ধরনের সাজা এটাই প্রথম। রায় শেষে বিচারক ট্যারেন্টের অপরাধকে অমানবিক উল্লেখ করেন। তবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি ট্যারেন্ট।
টানা চারদিন শুনানি শেষে বিশ্বব্যাপী আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়। যেখানে বিচারক ক্যামেরন ম্যান্ডার সন্ত্রাসী ট্যারেন্টের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনি নিজেকে মানসিকভাবে চরম অসুস্থ ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণ করেছেন। যে কিনা নিজের মতের বাহিরের মানুষদের ঘৃণা করে।’
বিচারক বলেন, ‘আপনি একটি গণহত্যা চালিয়েছেন। নিরস্ত্র ও প্রতিরোধবিহীন মানুষদের হত্যা করেছেন। অথচ জনসম্মুখে ক্ষমা চাননি। আপনাকে মোটেও অনুতপ্ত বা লজ্জিত দেখাচ্ছে না।’
রায় ঘোষণার আগে উচ্চস্বরে দীর্ঘসময় ধরে টারান্টের হামলার শিকার ব্যক্তিদের বর্ণনা এবং তাদের স্বজনদের মন্তব্য পড়ে শোনান বিচারক ম্যান্ডার। এ সময় আবেগ্লাপ্লুত হয়ে পড়ায় দু’বার থেমে যেতে হয় তাকে। এমন জঘন্য অপরাধের নির্দিষ্ট মেয়াদের সাজা যথেষ্ট নয় বলেও উল্লেখ করেন বিচারক।
এ সময় হামলায় স্বজন হারাদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তারা রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন। ভুক্তভোগীরা বলেন, ‘ঘৃণা, সাম্প্রদায়িকতা আর বর্ণবিদ্বেষের কোন স্থান নেই নিউজিল্যান্ডে।’
আর প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা অরডার্ন উগ্রবাদের বিরুদ্ধে মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্যের প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরে ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চে প্রথম নূর মসজিদ ও পরে লিনউড মসজিদে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায় ২৮ বছর বয়সী ট্যারেন্ট। পুরো ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারও করে সে। পরে স্বীকার করে, দুটি নয়, তিনটি মসজিদে হামলার ইচ্ছে ছিল তার। শুধু তাই নয়, প্রতিটি মসজিদ পুড়িয়ে দেয়ারও পরিকল্পনা ছিল তার।